অনলাইন ব্যাংকিংব্যাংকিং

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ও সুবিধাসমূহ ২০২৩

নিরাপত্তার সাথে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ডাচ বাংলা ব্যাংক অন্যতম। দেশের ব্যাংকিং সেবার বড় একটি অংশ ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (Dutch Bangla Bank Limited)। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সারাদেশে এর শাখার সংখ্যা ২১০ টি। প্রায় ৪৭৭৪ টি এটিএম বুথ (দেশের সর্ব বৃহৎ এটিএম নেটওর্য়াক) রয়েছে এই ব্যাংকের। এছাড়াও ৪৫০০ টি এজেন্ট ব্যাংকিং অফিস, ১১০০ টি ফাস্ট ট্র্যাক সব সময় ব্যাংকিং সেবা দিয়ে থাকে। 

ব্যাংকিং কর্মকান্ডে বাড়তি সুবিধা পেতে ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ও সুবিধাসমূহ, একাউন্টের প্রকারভেদ, একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে, আবেদন ফরম, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ব্যাংক চার্জ, ব্যালেন্স চেক করার নিয়ম ইত্যাদি সকল তথ্য থাকছে সম্পূর্ণ আলোচনায়।

সূচিপত্রঃ

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট এর প্রকারভেদ

ডাচ বাংলা ব্যাংকের অধীনে সাধারণত দুই প্রকার একাউন্ট খোলা যায়। যথা-

  1. ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট (DBBL Savings Account)
  2. ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট (DBBL Student Account)

তবে এগুলোর আওতায় আরো বেশ কয়েক ধরনের একাউন্ট রয়েছে। বিভিন্ন একাউন্ট বিভিন্ন প্রয়োজনে খোলা হয়। প্রতিটি একাউন্টের প্রাথমিক জমার পরিমাণও বিভিন্ন। এ সকল ব্যাংক একাউন্ট গুলো হলো:-

একাউন্টের নামএকাউন্টের ধরনপ্রাথমিক জমার পরিমাণ
সেভিংস ডিপোজিট একাউন্ট (Savings Deposit Account)সেভিংস একাউন্ট৫০০ টাকা
সেভিংস ডিপোজিট একাউন্ট প্লাস (Savings Deposit Account Plus)সেভিংস একাউন্ট৫০০০ টাকা।
এক্সেল সেভিংস একাউন্ট (Excel Savings Account)সেভিংস একাউন্ট৫০০ টাকা
ডিবিবিএল স্কুল সেভার্স একাউন্ট (DBBL School Savers Account)স্টুডেন্ট একাউন্ট৫০০ টাকা 
ইন্টারেস্ট ফ্রি সেভিংস ডিপোজিট একাউন্ট (Interest Free Savings Deposit Account)সেভিংস একাউন্ট৫০০০ টাকা
কারেন্ট ডিপোজিট একাউন্ট (Current Deposit Account)চলতি হিসাব/কারেন্ট একাউন্ট ১০০০ টাকা
স্পেশাল নোটিস ডিপোজিট একাউন্ট (Special Notice Deposit Account) ফিক্সড ডিপোজিট২০০০ টাকা 

উপরোক্ত প্রতিটি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রায় একই। তবে স্টুডেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য স্থানীয় শাখা অফিসে যান। একাউন্টের ধরন নির্বাচন করে, ব্যাংক কর্তৃক প্রদানকৃত আবেদন ফরম পূরণ করুন। আবেদন পত্রের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রাথমিক ব্যাংক ডিপোজিট জমা দিন। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা আপনার তথ্যগুলো যাচাই করে একাউন্ট খুলে দিবেন।

ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আবেদনকারীর ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, নমিনির ছবি ও আইডি কার্ডের কপি সহ অন্যান্য কিছু ডকুমেন্টস জমা দিতে হয়। একইসাথে, ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে একজন সুপারিশকারী প্রয়োজন হয়। পূর্বেই ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাউন্ট খোলআ আছে এমন কারো রেফারেন্সে একাউন্ট খুলতে পারবেন। পাশাপাশি ব্যাংক কর্মকর্তাও সহযোগিতা করতে পারে।

বর্তমানে অনলাইনে এ বি এন অ্যামরো (ABN Amro) মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও ইন্টারনেট ব্যাংকিং (Internet Banking) রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খোলার ফরম

আবেদন করতে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে হয়। ফরমটি সরাসরি ব্যাংক শাখা/ফাস্ট ট্র্যাক অফিস অথবা অনলাইনে সংগ্রহ করতে পারেন। 

অনলাইনে আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে ভিজিট করুন- ডিবিবিএল ফরম ডাউনলোড – এই লিংকে। তারপর, মেন্যু থেকে একাউন্ট ওপেনিং (Account Opening) সিলেক্ট করে প্রথম ফরমটির পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করুন। তারপর তা সঠিকভাবে পূরণ করে প্রিন্ট আউট করে ব্যাংকে আবেদন করুন।

আবেদন ফরমের নমুনা

ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার আবেদন ফরমের নমুনা

ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম

দৈনন্দিন ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সেভিংস একাউন্ট খুলতে হয়। সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য স্থানীয় ব্যাংকিং শাখায় আবেদন করতে হবে। ব্যাংকের শাখা বা ফাস্ট ট্র্যাক অফিস থেকে একাউন্ট খোলার আবেদন ফরম পাবেন। তা সঠিকভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ একাউন্ট্যান্ট এর কাছে জমা দিন।

একাউন্ট খোলা সম্পন্ন হলে ক্যাশ কাউন্টারে (Cash Counter) প্রাথমিক ডিপোজিট করুন। একাউন্ট এক্টিভেট হওয়ার ২ দিনের মধ্যে এটিএম কার্ড (ATM Card)/ নেক্সাস পে কার্ড (Nexus Pay Card) প্রদান করা হয়।

স্টুডেন্ট একাউন্ট এর তুলনায় সেভিংস একাউন্টে সীমাবদ্ধতা কম ও বাড়তি সুযোগ রয়েছে। ডাচ বাংলা ব্যাংকে নিয়মিত অর্থ জমা ও উত্তোলনের জন্য সেভিংস একাউন্ট সুবিধা জনক। 

সেভিংস একাউন্টের কয়েকটি ধরন সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে। একেকটি একাউন্টের কিছু বাড়তি সুবিধা ও লভ্যাংশ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে? 

  • জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্ম নিবন্ধন সনদ/ মেয়াদ সম্পন্ন পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স এক কপি।
  • আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর হতে হবে।
  • সদ্য তোলা ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
  • নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
  • নমিনির ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • একজন সুপারিশকারি একাউন্ট হোল্ডার। (ডাচ বাংলা ব্যাংকে পূর্বে একাউন্ট আছে এমন একজন রেফার করতে হবে)
  • নুন্যতম প্রাথমিক ডিপোজিট ৫০০ টাকা। (সেভিংস একাউন্ট এর ধরন অনুযায়ী ডিপোজিটের পরিমাণ ভিন্ন)
  • ইউটিলিটি বিলের কপি (গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি)।
  • ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স, টিআইএন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়।
  • একটি সচল মোবাইল নাম্বার।

এসকল ডকুমেন্টস থাকলে সহজেই সেভিংস একাউন্ট খুলতে পারবেন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্টের সুবিধা

স্টুডেন্ট একাউন্ট থেকে সেভিংস একাউন্টের সুবিধা বেশি। যেমন-

  • সেভিংস একাউন্টে প্রয়োজন অনুসারে নিয়মিত অর্থ লেনদেন করা যায়।
  • খুব সহজেই চেক ইস্যু করা যায়।
  • ব্যাংকের একটি শাখা থেকে অন্য শাখায় সহজেই অর্থ ট্রান্সফার করা যায়।
  • সেভিংস একাউন্ট হোল্ডার ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ এবং ব্যবহার করতে পারবে।
  • ডাচ বাংলা ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং (i-Banking) ও এসএমএস ব্যাংকিং (SMS Banking) সুবিধা।
  • ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা, ঘরে বসেই ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করা যায়।
  • ব্যাংক ঋণের আবেদন করে ডাচ বাংলা ব্যাংক ঋণ পাওয়া যায়।
  • সেভিংস একাউন্টধারী ব্যবহার করে ডিপিএস খোলতে পারে।
  • লেনদেনের সীমাবদ্ধতা নেই, তবে অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে ব্যাংকের নীতি অনুসরণ করতে হয়।

সেভিংস একাউন্ট এর লিমিটেশন

সেভিংস একাউন্টের তেমন কোন সীমাবদ্ধতা নেই। তবে কিছু বিষয় রয়েছে, যেমন-

  • একাউন্ট মেইন্টেনেন্স চার্জ ও অন্যান্য ফি প্রদান।
  • কারেন্ট একাউন্ট এর মত সর্বক্ষণ লেনদেন করা যায় না। নির্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করে লেনদেন করতে হয়।

ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য শুধুমাত্র শিক্ষার্থীরাই আবেদন করতে পারে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখায় স্টুডেন্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরম পূরণ করুন। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও একাউন্টের প্রাথমিক ডিপোজিট জমা দিন। 

তারপর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা একাউন্ট খুলে দিবে। ডাচ বাংলা ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট ধারীদের তাৎক্ষণিক এটিএম কার্ড (ATM Card) প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে একাউন্ট হোল্ডার ব্যাংক থেকে চেক বই সংগ্রহ করতে পারে। 

ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে 

স্টুডেন্ট একাউন্টে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সেভিংস একাউন্ট থেকে ভিন্ন। স্টুডেন্ট একাউন্টে যেসকল কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা হলো:-

  • আবেদনকারীর এনআইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধনের কপি।
  • শিক্ষার্থীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্টুডেন্ট আইডি কার্ড (Student ID Card)
  • সদর তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
  • নমিনির ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 
  • একজন সুপারিশকারি একাউন্ট হোল্ডার। (ডাচ বাংলা ব্যাংকে পূর্বে একাউন্ট আছে এমন একজন রেফার করতে হবে)
  • একটি সচল মোবাইল নাম্বার।
  • ব্যবসায়ী স্টুডেন্টদের জন্য অধিক লেনদেন করতে ট্রেড লাইসেন্স
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।

এ সকল ডকুমেন্টস সহ আবেদন করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলে দিবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্টের সুবিধা

ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সুবিধাজনক। এর সুবিধাগুলো হলো:-

  • একাউন্ট খোলার সাথে সাথে ইনস্ট্যান্ট এটিএম কার্ড।
  • ডাচ বাংলা ব্যাংকের যেকোনো শাখা এবং এটিএম বুথ থেকে অর্থ লেনদেন।
  • একাউন্ট সিকিউরিটির জন্য টু ফেক্টর অথেনটিকেশন (Two Factor Authentication – 2FA) ব্যবহার করা যায়।
  • শিক্ষার্থী অবস্থায় স্টুডেন্ট একাউন্ট খুললেও সবসময় ব্যবহার করা যায়।
  • ইন্টারনেট ব্যাংকিং (i-Banking) সুবিধা ও এসএমএস ব্যাংকিং সুবিধা রয়েছে।
  • পূর্বে চেক বই প্রদান না করলেও বর্তমানে স্টুডেন্ট একাউন্টে ধারীদেরও চেক প্রদান করা হয়।
  • ঘরে বসেই ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করতে পারবে।
  • রকেট (Rocket) একাউন্টের সাথে ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট সংযুক্ত করা যায়।
  • স্টুডেন্ট একাউন্টধারী শিক্ষার্থীরা এডুকেশন লোন (Education Loan) এর জন্য আবেদন করতে পারে।

এছাড়াও একাউন্ট খুললে অন্যান্য সুবিধা সমূহ সম্পর্কে জানতে ব্যাংকের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

স্টুডেন্ট একাউন্ট এর সীমাবদ্ধতা

ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্টে সুবিধার পাশাপাশি কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এগুলো হলো:-

  • প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা স্টুডেন্ট একাউন্টে জমা ও উত্তোলন করা যায়।
  • একাউন্ট থেকে ১ দিনে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করা যায়।
  • একাউন্ট ব্যালেন্স ৫০০০ টাকার বেশি হলে ছয় মাস পর পর মেইন্টেনেন্স চার্জ দিতে হয় ( চার্জ ১০০ টাকা + ভ্যাট ১৫ টাকা। 
  • একটি অর্থ বছরে একাউন্ট ব্যালেন্স এক লক্ষ টাকার বেশি হলে ১৫০ টাকা ফি দিতে হয়।
  • ১ দিনে সর্বোচ্চ ৫ বার এটিএম কার্ড ব্যবহার করে অর্থ উত্তোলন করা যায়।

তবে সীমাবদ্ধতা থাকলেও স্টুডেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করা সুবিধাজনক।

ডাচ বাংলা ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং 

বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ বেশিরভাগ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোই ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করেছে। এদের মধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং (Dutch Bangla Bank i-Banking) অনেক বেশি ফিচারযুক্ত।

ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা পেতে প্রাথমিকভাবে একটি একাউন্ট খুলতে হয়। তারপর অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করে, ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে ডাচ বাংলা ব্যাংকের আই ব্যাংকিং (i-Banking) সেবা পেতে পারেন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক অনলাইন রেজিস্ট্রেশন

ডিবিবিএল একাউন্টের জন্য সরাসরি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা যায়না। সেজন্য যে শাখায় ব্যাংক একাউন্ট খুলেছিলেন সেখানে আবেদন করতে হবে। ইন্টারনেট ব্যাংকিং আবেদন করতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একটি ফরম দিবে। সে ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করে তার সাথে-

  1. ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 
  2. আবেদনপত্রে একাউন্ট হোল্ডারের সিগনেচার দিয়ে আবেদন করুন।

আবেদন করার পর ৫ কার্যদিবস পর একটি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। 

সেই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ডাচ বাংলা ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের ইন্টারনেট ব্যাংকিং (i-Banking) অপশনে লগইন করতে হবে। 

লগইন করার জন্য ভিজিট করুন, ডাচ বাংলা ব্যাংক আই ব্যাংকিং– এই লিংকে। তারপর ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে টার্মস এন্ড কন্ডিশনস (Terms and Conditions) অপশনে টিক মার্ক দিয়ে সাইন ইন (Sign in) ক্লিক করুন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক অনলাইন রেজিস্ট্রেশন

পরবর্তী ধাপে, নিজের মতো একটি পাসওয়ার্ড দিয়ে চেঞ্জ (Change) ক্লিক করে নতুন পাসওয়ার্ড সেট করুন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর সুবিধা

ডাচ বাংলা ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবস্থা গ্রাহকের ব্যাংক সেবাকে দ্বিগুণ সুবিধাজনক করেছে। এক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের বাড়তি সুবিধাগুলো হলো:-

  • ব্যাংক একাউন্টের ব্যালেন্স, স্টেটমেন্ট ও একাউন্টের বিস্তারিত তথ্য ঘরে বসেই জানা যায়।
  • অনলাইনে একাউন্টের অর্থ অন্য একাউন্টে ট্রান্সফার করা।
  • ব্যাংকের একটি শাখা থেকে অন্য শাখায় অর্থ স্থানান্তর।
  • ইউটিলিটি বিল পরিশোধ।
  • সঞ্চয়ী একাউন্ট ব্যবহার করে ডিপোজিট খোলা।
  • ব্যাংক একাউন্টের গৃহীত ঋণ পরিশোধ করে থাকলে তার স্টেটমেন্ট চেক।
  • অনলাইনে চেক বইয়ের আবেদন ও চেক স্ট্যাটাস অনুসন্ধান।
  • প্রয়োজনে চেক পেমেন্ট বন্ধ করা।
  • সুদের হার, ব্যাংক চার্জ ও অন্যান্য ফি সম্পর্কে জানা।
  • বৈদেশিক মুদ্রার রেট অনুসন্ধান।
  • প্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্যাংকিং (i-Banking) এর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন।।

ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাউন্ট খোলার নিয়মে একাউন্ট খুলে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের আবেদন করে খুব সহজেই এসকল সুবিধা ভোগ করতে পারেন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক চার্জ

ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খুললে ব্যাংক কিছু সার্ভিস চার্জ নিয়ে থাকে। স্টুডেন্ট একাউন্টে ৫ হাজার সেভিংস একাউন্টে ১০ হাজার পর্যন্ত ব্যালেন্সের কোন চার্জ নেই। এর উপরে-

  • ব্যালেন্স ১০-২৫ হাজার হলে ১০০ টাকা চার্জ।
  • ব্যালেন্স ২৫ হাজার থেকে ২ লক্ষ হলে ২০০ টাকা চার্জ।
  • ব্যালেন্স ২ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ হলে ২৫০ টাকা চার্জ।

এছাড়াও অন্যান্য মেইনটেনেন্স ফি দিতে হয়।

ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্যালেন্স দেখার নিয়ম

ব্যাংক একাউন্ট খোলার পর বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যালেন্স চেক করতে হয়। ডাচ বাংলা ব্যাংক ব্যালেন্স চেক করার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। এগুলো হলো:-

  • ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
  • নেক্সাস-পে (Nexus Pay) অ্যাপ ব্যবহার করে।
  • এটিএম বুথের মাধ্যমে এটিএম কার্ড ব্যবহার করে।
  • মোবাইলে ডাচ বাংলা ব্যাংক কোড ডায়াল করে।
  • সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে স্টেটমেন্ট চেক।

ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপস

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য ডাচ বাংলা ব্যাংকের নেক্সাস পে ও রকেট অ্যাপ রয়েছে। নেক্সাস পে ব্যবহার করে সরাসরি ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায়।

ডাচ বাংলা ব্যাংকের যোগাযোগ ব্যবস্থা 

যেকোনো তথ্য জানতে যোগাযোগ করুন:-

হেল্পলাইন নাম্বার:- 16216 

ই-মেইল:- ccs.cmc@dutchbanglabank.com 

অভিযোগ করতে যোগাযোগ:- (8802)-9511993

শেষকথা

ডাচ বাংলা ব্যাংক বর্তমানে দেশের বিশ্বস্ত, চাহিদা সম্পন্ন, অধিক সুবিধা প্রদানকারী ব্যাংক এবং একাউন্ট খোলার নিয়মও তুলনামূলক সহজ, পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের বাড়তি সুবিধা তো রয়েছেই।

অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

১। ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাউন্ট চেক করার কোড

মোবাইলে ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট চেক করার কোড *322#। এটি ডায়াল করে ব্যাংকিং তথ্য ও ব্যালেন্স জানা যায়।

২। ডাচ বাংলা ব্যাংক কি সরকারি?

ডাচ বাংলা ব্যাংক বেসরকারি মালিকানাধীন একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক।

৩। ১৮ বছরের কম বয়সীরা কিভাবে ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খুলবে?

ব্যাংক গ্রাহকের বয়স ১৮ বছরের কম হলে অভিভাবকের ডকুমেন্টসহ যৌথ একাউন্ট খুলতে হবে। যৌথ একাউন্টে লেনদেন করার জন্য উভয়ের স্বাক্ষর প্রয়োজন হবে। গ্রাহকের ১৮ বছর পূর্ণ হলে নিজেই একাউন্ট পরিচালনা করতে পারবে।

৪। ডাচ বাংলা ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টে সুদের হার কত?

ডাচ বাংলা ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট এর বিপরীতে সর্বোচ্চ ২% সুদ দিয়ে থাকে।

৫। ডাচ বাংলা ব্যাংকের চেক বুক পেতে কতদিন সময় লাগে?

একাউন্ট খুলার পর চেক বইয়ের জন্য আবেদন করতে হয়। তারপর ৭-১৪ দিনের মধ্যে চেক বই গ্রাহককে বিতরণ করা হয়।

রিলেটেড আর্টিকেল গুলো

Back to top button