অনলাইনে আয়ফ্রিল্যান্সিং

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায়

এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে ছবি তুলতে ভালবাসেন অনেকেই। কেমন হবে যদি আপনার এই ভালোলাগা আপনার উপার্জনের মাধ্যম হয়। হ্যাঁ, অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায় বর্তমানে একটি লাভজনক ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

ফটোগ্রাফির প্রতি আগ্রহ, ফটোগ্রাফি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা, ভালো ক্যামেরা কিংবা মোবাইল ফোন আপনার হাতে থাকলে এখন থেকেই শুরু করতে পারেন স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে (Stock Image Website) অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয়। বর্তমানে অনেকেই উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে ছবি বিক্রিকে বাছাই করে প্রতিমাসে ১-৫ লক্ষ বা তারও বেশি ইনকাম করছে। তাই আপনিও আপনার প্যাশন (Passion) কে পেশা হিসেবে নিতে পারেন। 

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায়, কোথায় বিক্রি করবেন, কারা কিনবে এবং কত টাকা আয় করতে পারবেন সে সম্পর্কিত সকল তথ্য থাকছে সম্পূর্ণ আলোচনায়।

সূচিপত্রঃ

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করবো কিভাবে 

বর্তমানে কোয়ালিটি সম্পন্ন ছবির চাহিদা অনেক বেশি। অনলাইনে ছবি বিক্রি করে টাকা ইনকাম করা বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় একটি ব্যবসা। তবে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায় জানা নেই অনেকেরই।

বিভিন্ন ফটোগ্রাফাররা অনলাইনে তাদের নিজের তোলা ছবি বিভিন্ন স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট (Stock Image Website)- এর পার্টনার হিসেবে আপলোড করে রাখে, এই ছবিগুলোকে স্টক ইমেজ (Stock Image) বলা হয়।

স্টক ইমেজ গুলো অনেকেই তাদের বিভিন্ন প্রজেক্ট এর প্রয়োজনে ছবিগুলো সংগ্রহ করতে চায়। আর কাঙ্খিত ছবিগুলো সংগ্রহ করতে তাদের অর্থ প্রদান করতে হয়। 

যখন ফটোগ্রাফারদের কোন ছবি ওয়েবসাইট থেকে বিক্রি হয় তখন সেই ছবির প্রাপ্ত মূল্য থেকে ফটোগ্রাফার পার্টনারদের নির্ধারিত পরিমাণ কমিশন দেওয়া হয়। এভাবেই একজন ফটোগ্রাফার তার হাতের মোবাইল বা ক্যামেরা ব্যবহার করে ছবি তুলে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করেন।

এছাড়াও আপনি চাইলে নিজের একটি ওয়েবসাইট খুলে, ফেসবুক পেজের মাধ্যমেও ছবি বিক্রি করে আয় করতে পারবেন।

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করতে কি কি লাগে

ছবি বিক্রি করে আয় করার জন্য প্রথমেই ভালো মানের ছবি তোলার দক্ষতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন হতে পারে-

  • একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মোবাইল ক্যামেরা/ ডিজিটাল ক্যামেরা।
  • ফটো এডিটিং অ্যাপ্লিকেশন।
  • নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ছবি তোলায় বিশেষ দক্ষতা।
  • ছবির গঠন, লাইটিং, কালার, রেজুলেশন, সাইজ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা।
  • একটি স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট একাউন্ট, যেখানে আপনার ছবি আপলোড করবেন।

অনলাইন থেকে ছবি কারা ক্রয় করে 

বর্তমান মানুষের জীবনধারা ইন্টারনেট ভিত্তিক হয়ে পড়ছে। লক্ষ-কোটি টাকার প্রজেক্ট এখন অনলাইনকে ঘিরে হয়। অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করতে চাইলে নিম্নোক্ত কাজে ছবি বিক্রি হয়ে থাকে:-

  • বিভিন্ন কোম্পানির মার্কেটিং করতে।
  • ব্লগারদের ব্লগ সাইটে প্রয়োজনীয় ইমেজ। 
  • ফ্রিল্যান্সারদের এবং অনলাইন বিজনেস করতে।
  • প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট।
  • কনটেন্ট ক্রিয়েটিং।
  • কন্টেন্ট প্রমোশন
  • ভিডিও এডিটিং।
  • প্রাতিষ্ঠানিক ম্যাগাজিনে।

ইত্যাদি নানা প্রয়োজনে আমরা নানান ছবি ব্যবহার করে থাকি। তবে চাহিদা সম্পন্ন ও মান সম্পন্ন ছবি পেতে এ ধরনের প্রজেক্ট গুলোতে বিভিন্ন ফটোগ্রাফার (Photographer) ভাড়া করতে হয়, যা অনেকটা ব্যয়বহুল। তখন প্রজেক্ট ম্যানেজাররা (Project Manager) অনলাইন স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট থেকে স্বল্পমূল্যে তাদের কাঙ্ক্ষিত ছবি পেয়ে থাকে।

বিশেষ করে উন্নত রাষ্ট্র, যেমন- আমেরিকা, ইতালি, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, গ্রীনল্যান্ড এ ধরনের দেশগুলো থেকে সবচেয়ে বেশি স্টক ইমেজ ক্রয় করে থাকে।

স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে ছবি কিভাবে বিক্রি করবো 

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার বিভিন্ন স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে প্রথমেই আপনাকে একজন ওয়েবসাইটের কন্ট্রিবিউটর (Contributor) বা পার্টনার (Partner) হতে হবে। বর্তমানে বহু স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট অনলাইনে পাওয়া যায়। সেখান থেকে আপনার পছন্দমত ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে ছবি যেভাবে বিক্রি করবেনঃ ১

ওয়েবসাইটের হোম পেজে বিকাম এ সেলার (Become A Seller), কন্ট্রিবিউটর (Contributor), বিকাম এ পার্টনার (Become A Partner), সেল‌ (Sell) ইত্যাদি অপশন গুলো পাবেন। ওয়েবসাইট ভেদে অপশন ভিন্ন হতে পারে। 

এই ধরনের অপশনগুলো থেকে জয়েন নাও (Join Now) পেজে গিয়ে ইমেইল, পাসওয়ার্ড, নাম, জন্মতারিখ ও দেশ সিলেক্ট করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে নিন। 

স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে ছবি যেভাবে বিক্রি করবেনঃ ২

রেজিস্ট্রেশনের পর লগইন করে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার জন্য আপনার নির্ধারিত কিছু ভালো মানের ছবি ওয়েবসাইটে আপনার প্রোফাইলে আপলোড করুন।

এই সাইটগুলো জনপ্রিয় হয় এবং ডিজিটাল মার্কেটিং, এডভার্টাইজিং করে কাস্টমার নিয়ে আসা সবকিছু ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষ করে থাকে। তাই ভালো ছবি আপলোড করার পর বিক্রি নিয়ে ভাবতে হয়না। ইমেজ আপলোড করার পর যখনই কোন ক্রেতা তার ক্রয় করবে তখনই ওয়েবসাইট গুলো সাধারণত ৭০/৩০ ভাগে মুনাফা বন্টন করে থাকে।

কিভাবে মার্কেটপ্লেসে প্রোফাইল এপ্রুভ হবে

স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট/মার্কেটপ্লেস গুলোতে একাউন্ট রেজিস্টার করার পর প্রোফাইল এপ্রুভ হবেনা।  প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত কিছু ছবি আপলোড করতে হবে। আপনার আপলোড করার সকল ছবি ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষ রিভিউ করে পাবলিশ করবে। প্রোফাইল এপ্রুভ করার জন্য অবশ্যই ছবিগুলো-

  • নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর
  • স্পষ্ট ও ভালো রেজুলেশনের
  • আকর্ষণীয়ভাবে এডিট করা
  • কপিরাইট মুক্ত এবং
  • লাইটিং, কালার, এডজাস্টমেন্ট এর প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।
  • নন-এডাল্ট ও ওয়েবসাইটের নীতিমালা পূরণ করতে হবে।

প্রাথমিকভাবে অল্প কিছু ছবি আপলোড করে প্রোফাইল এপ্রুভ করা হলে আনলিমিটেড ছবি বিক্রি করতে পারবেন। প্রথমবার এপ্রুভ না হলে ছবির কালেকশন মানসম্মত করে কিছুদিন পর আবার এপ্লাই করুন।

অনলাইনে কোন ধরনের ছবির চাহিদা বেশি

সাধারণত যেকোনো বিষয়বস্তুর কোয়ালিটি সম্পন্ন ও ভালোভাবে এডিট করা ছবি আপলোড করে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায় রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কিছু ক্যাটাগরির ছবি অনেক বেশি বিক্রি হয়। সেগুলো হলো-

  • প্রকৃতি (Nature)-  বর্তমানে ইন্টারনেটে সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন ছবি হলো প্রকৃতির ছবি। প্রকৃতির নিবিড়তা মানুষকে মুগ্ধ করে। তাই বিভিন্ন প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টে অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য ও দর্শনীয় স্থানের ছবির চাহিদা বেশি।
  • পশুপাখি (Animals)- আমরা প্রায়ই অনলাইনে বিভিন্ন পাখি, মাছ, সিংহ, বন্যপ্রাণী ও পোষা প্রাণীর মনমুগ্ধকর ছবি দেখতে পাই। কিছু কিছু ছবি খুবই আকস্মিক হয়। এসকল ছবি তুলতে প্রয়োজন হয় উন্নত ক্যামেরা ও অনেক বেশি দক্ষতার। খুব কাছ থেকে তোলা এ ধরনের পশুপাখির স্টক ইমেজের চাহিদা অনেক বেশি।
  • আর্ট (Art)- বিভিন্ন জাদুঘরের আকর্ষণীয় চিত্র বা চারুকলার বিভিন্ন চিত্র খুবই আকর্ষণীয় হয় এবং এর চাহিদা বেশি।
  • ফ্যাশন (Fashion)- ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বেশিরভাগ পণ্যই ফ্যাশন ভিত্তিক হয়। তাই ফ্যাশন রিলেটেড বিভিন্ন স্টক ইমেজের চাহিদাও অনেক বেশি। বড় বড় ফ্যাশন ডিজাইনার ও কোম্পানীগুলো এ ধরনের ছবি চেয়ে থাকে।
  • টেকনোলজি (Technology)- ব্লগিং, কনটেন্ট ক্রিয়েটিং, অ্যাডভার্টাইজিং এর জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তির বা যন্ত্রের কোয়ালিটি সম্পন্ন ছবির চাহিদা অনেক বেশি।
  • ট্রাভেল (Travel)- কোথাও ভ্রমণ করতে গেলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছবি ও দর্শনীয় স্থানগুলোর পাশাপাশি অপূর্ব রাস্তাঘাটের ছবির চাহিদাও অনেক বাড়ছে দিন দিন। বিশেষ করে ট্রাভেল এজেন্সি গুলো এ ধরনের ছবি চেয়ে থাকে।
  • ফুড (Food)- ফুড ব্লগার, রেস্টুরেন্ট ওয়েবসাইট, রেস্টুরেন্টের আইটেম মেন্যুর প্রয়োজনে বিভিন্ন খাবারের আকর্ষণীয় ছবি প্রয়োজন হয়। এছাড়াও প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের কিছু বিশেষ খাদ্য তালিকা থাকে, যা তাদের ঐতিহ্যকে বহন করে। এ ধরনের খাবারের ছবি তুলে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায় রয়েছে।
  • ব্যবসা (Business)- বিভিন্ন বিজনেস ম্যাগাজিনে সাফল্যের ছবি থাকা আবশ্যক। এ ধরনের ফটোগ্রাফিতে পারদর্শী হলে সরাসরি প্রতিষ্ঠানিকভাবে কাজ করে কিংবা ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায় ব্যাপক।
  • লাইফস্টাইল ও ঐতিহ্য (Lifestyle & Culture)- পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষের জীবনযাত্রা ও ঐতিহ্য ভিন্ন। আপনি একজন ভ্রমণপিপাসু মানুষ হলে তাদের সংস্কৃতির বিভিন্ন অনুষ্ঠান-আয়োজন ও জীবন যত ছবি তুলে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন।
  • এবস্ট্রাক্ট (Abstract)- কোন বিষয়কে খুব কাছ থেকে ছবি তুলে তার অভ্যন্তরীণ সূক্ষতার ছবি তোলা হলো এবস্ট্রাক্ট ফটোগ্রাফি। এসকল ছবি তুলতে উন্নত ক্যামেরা এবং দক্ষতা দরকার হয়।

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে কত টাকা আয় করা যায়

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে ছবির কোয়ালিটি, স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে ছবির পরিমাণ, নিয়মিত আপলোড করা হয় কিনা, ওয়েবসাইটে বিক্রি কেমন হয়, ছবি প্রতি কত টাকা দেওয়া হয় এসকল বিষয়ের উপর। 

সাধারণত আপনি যখন কোন সুপরিচিত (Famous) স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে নিয়মিত কোয়ালিটি সম্পন্ন ছবি আপলোড করেন, তখন প্রতিটি ছবির জন্য $০.২৫-$০.৪০ পর্যন্ত দেওয়া হয়। 

এক্ষেত্রে, ওয়েব সাইটে আপনার প্রোফাইলে যদি ১,০০০-২,০০০ টি ছবি থাকে এবং দৈনিক ৫০ টি ছবি বিক্রি হয়, তাহলে আপনার ইনকাম হবে-

$০.২৫×৫০ = $১২.৫, যা বাংলাদেশী টাকায় বর্তমানে প্রায় ১,২০০ টাকা। মাসিক হিসাবে, ১,২০০×৩০ = ৩৬,০০০ টাকা। (এটি একটি আনুমানিক হিসাব, যা অর্জন করতে অনেকটা সময় প্রয়োজন)

এক্ষেত্রে, প্রোফাইলে ছবি যত বাড়বে বিক্রিও তত বাড়বে। এছাড়াও একটি ছবি বার বার বিক্রি করা যায়। তাই দীর্ঘদিন অনলাইনে ছবি বিক্রি করে টাকা আয় করার উপায় অবলম্বন করলে এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসা হবে।

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার ওয়েবসাইট

অনলাইনে স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট রয়েছে অনেক। তন্মধ্যে কিছু জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:-

(১) অ্যালামি.কম (Alamy.com)

অ্যালামি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি ক্রিয়েটিভ ওয়েবসাইট। বর্তমানে এই ওয়েবসাইটে প্রায় ২৩৭ মিলিয়নেরও বেশি ছবি রয়েছে। প্রতিদিন এখানে ৩০০০ এর বেশি ছবি আপলোড ও বিক্রয় হয়। প্রতিটি ছবি বিক্রয়ের জন্য কন্ট্রিবিউটর (Contributor) কে এক্সক্লুসিভ ইমেজ গুলোর জন্য ৫০% পর্যন্ত কমিশন এবং নন এক্সক্লুসিভ ইমেজ গুলোর জন্য ৪০% পর্যন্ত কমিশন দেওয়া হয়।

অ্যালামি.কম (Alamy.com)

মাসিক ইনকাম করা টাকা $৫০ এর বেশি হলে পরবর্তী মাসের প্রথম কার্যদিবসে পেপাল (PayPal) বা ব্যাংক ফান্ড ট্রান্সফারের (Bank Fund Transfer) মাধ্যমে পেমেন্ট দেওয়া হয়।

(২) শাটারস্টক (Shutterstock)

Shutterstock অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার আরেকটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। প্রতিদিন অসংখ্য কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, ডিজিটাল মার্কেটার ও অন্যান্য প্রজেক্ট ম্যানেজার এখান থেকে হাই কোয়ালিটির ছবি নিয়ে থাকে।

শাটারস্টক (Shutterstock)

প্রত্যেক ছবি ডাউনলোডের উপরে সর্বোচ্চ $১২০ পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। এছাড়াও কন্ট্রিবিউটর হিসেবে ২০%-৩০% কমিশন দেওয়া হয়। এছাড়াও ক্লায়েন্ট সাবস্ক্রিপশন (Client Subscription) এর উপর অর্থ প্রদান করা হয়।

(৩) এডোবি‌ স্টক (Adobe stock)

Adobe stock এ হাই কোয়ালিটি প্রিমিয়াম ইমেজ (Premium Image) ক্রয় করতে প্রতিদিন হাজারো ভিজিটর আসে। নিজের মোবাইল বা ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবির পাশাপাশি ভিডিও বিক্রি করা যায় এই সাইটে।

এডোবি‌ স্টক (Adobe stock)

একটি ফ্রি একাউন্ট খুলে নিয়মিত ছবি ও ভিডিও আপলোড করলে প্রতিবার তা বিক্রি হলে কন্ট্রিবিউটর (Contributor) কে ছবির জন্য ৩৩%, ভিডিওর জন্য ৩৫% কমিশন দেওয়া হয়। মাসিকভাবে ২৫ ডলার হলেই পেপাল (PayPal) এর মাধ্যমে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করা অর্থ উত্তোলন করা যায়।

(৪) আইস্টক ফটো (Istock Photo)

Istock Photo একটি বিখ্যাত মাইক্রো স্টক চ্যানেল (Micro Stock Channel), যা ছবি বিক্রির জন্য বিখ্যাত। তবে এখানে কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করতে হলে, প্রথমে আপনার বাছাইকৃত ৩ টি ছবি আপলোড করতে হবে। 

আইস্টক ফটো (Istock Photo)

আইস্টক ফটোর ম্যানেজমেন্ট টিম সেই ছবিগুলোর কোয়ালিটি, রেজুলেশন, কপিরাইট চেক করবে। ছবিগুলো তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হলে আপনাকে কন্ট্রিবিউটর হিসেবে অফুরন্ত ছবি আপলোড করার সুযোগ দেওয়া হবে।

(৫) ফটোলিয়া (Fotolia)

ফটোলিয়া এডোবি স্টকেরই একটি আলাদা সার্ভিস। এখানে, ভালো মানের ছবি বিক্রি করে অধিক কমিশন পাওয়া যায়।

ফটোলিয়া (Fotolia)

সাধারণত ফটোলিয়াতে একটি ছবি বিক্রির বিনিময়ে কন্ট্রিবিউটর কে ২০% থেকে ৬০% পর্যন্ত কমিশন দেওয়া হয়। দক্ষ ফটোগ্রাফারদের জন্য এটি অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয়ের বড় ক্ষেত্র।

(৬) বিগ স্টক (Big stock)

Big stock সাইটে কন্ট্রিবিউটর একাউন্ট খোলা তুলনামূলক সহজ। কন্ট্রিবিউটর একাউন্ট খোলার পর ছবি আপলোড করলে বিগ স্টক ওয়েবসাইট তা রিভিউ করবে।বিগ স্টক (Big stock)

রিভিউ করা ছবি বিগ স্টক ওয়েবসাইটের ইমেজ কালেকশনস (Image Collections) এ যুক্ত হলে ছবিগুলো ক্রয় বিক্রয় করা যাবে। এখানে টাইপ অব পেমেন্ট প্ল্যান (type of payment plan) এবং ইমেজ সাইজ (image size) এর ওপরেও আপনার ইনকাম নির্ভর করবে।

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার এই সাইটে প্রতিটি ছবি বিক্রয় হলে $০.২৫-$৩.০০ পর্যন্ত প্রায় ২৫%- ৪০% হারে কমিশন প্রদান করা হয়।

(৭) গেটি ইমেজেস (Getty images)

Getty images ওয়েবসাইটে প্রাকৃতিক, রোমান্টিক, ইমোশনাল টাইপের ছবির চাহিদা বেশি। ওয়েবসাইটের মাসিক ডিজিটর ৫০ মিলিয়নেরও বেশি। বিপুল পরিমাণ জনরাশির কাছে ওয়েবসাইটটি উচ্চ মূল্যে ছবি বিক্রি করে। কন্ট্রিবিউটর কে বিক্রয় প্রতি ২০% কমিশন দেয়।

গেটি ইমেজেস (Getty images)

(৮) পিক্সেলস (Pexels)

Pexels ফ্রিতে ছবি ও ভিডিও ডাউনলোড করার জন্য বিখ্যাত। তবে এখানে ছবি বিক্রয় করতে না পারলেও সাইটের পক্ষ থেকে থ্যাংকস গিভিং অপশন রয়েছে। আপনার ছবি খুব বেশি ডাউনলোড হলে তার জন্য আর্থিক প্রাইজ দেওয়া হবে।

পিক্সেলস (Pexels)

এছাড়াও ড্রিমসটাইম (Dreams time), পিক্সাবে (Pixabay), ডিপোজিট ফটোস (Depositphotos), স্টকসি.কম (Stocksy.com) ইত্যাদি ওয়েবসাইটে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায় রয়েছে।

মোবাইলে ফটোগ্রাফি করে আয়

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার জন্য শুধু যে ভালো ক্যামেরা প্রয়োজন হয়, তা নয়। আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনের ক্যামেরার সঠিক ব্যবহার করে ছবি তুলেও বিক্রি করতে পারেন। 

এক্ষেত্রে ফটোগ্রাফি সম্পর্কে আপনার আগ্রহ ও দক্ষতাই মুখ্য বিষয়। উপরোক্ত ওয়েবসাইট গুলো ছাড়াও মোবাইল ফটোগ্রাফির জন্য- ফোপ (Foap), আইম (Eyeem), মিপিক (Mipic) সাইটগুলো জনপ্রিয়।

শেষকথা

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় একটি দীর্ঘমেয়াদী আয়ের উৎস হতে পারে। বর্তমানে এই কাজের প্রতি অনেকের আগ্রহ বাড়ছে। স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার জন্য অনেকটা সময় এবং ধৈর্যের প্রয়োজন। পাশাপাশি ফটোগ্রাফি সম্পর্কিত দক্ষতা অপরিহার্য। তবে ধৈর্য ধারণ করলে এখান থেকে লক্ষ টাকা ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে।

অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে কন্ট্রিবিউটর কি?

কন্ট্রিবিউটর (Contributor) শব্দের অর্থ হল অংশদাতা। স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রির একজন পার্টনার বা অংশীদার হয়ে ছবি আপলোড করাই স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে কন্ট্রিবিউটর।

স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট থেকে কোন কোন মাধ্যমে পেমেন্ট নেওয়া যায়?

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার ওয়েবসাইট অনেক। তাদের পেমেন্ট অপশনও ভিন্ন। তবে সাধারণত পেপাল (PayPal), স্ক্রিল (Skrill), পাইওনিয়ার (Payoneer), ব্যাংক একাউন্ট (Bank Account) এর মাধ্যমে মান্থলি পেমেন্ট নিতে পারবেন।

ছবি বিক্রি করে আয় করতে কতদিন সময় লাগবে?

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এ ধরনের কাজে প্রতিযোগিতা বেশি, তাই প্রাথমিক অবস্থায় ছবি বিক্রয় কম হবে। তবে আপনার ছবিগুলো আকর্ষণীয় হলে ৩-৫ মাসের মধ্যেই ভালো ইনকাম শুরু করতে পারবেন।

 

রিলেটেড আর্টিকেল গুলো

Back to top button