অনলাইনে আয়আউটসোর্সিংটেকনোলজিডিজিটাল মার্কেটিংসোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কী? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর আদ্যোপান্ত 

বর্তমানে ইন্টারনেট জগতে অবস্থানরত মানুষের সামাজিকতা এখন বাস্তবতার সীমানা অতিক্রম করে ভার্চুয়াল জগতে গিয়ে পৌঁছেছে। আর সেই ভার্চুয়াল জগতই সারাবিশ্বে সোশ্যাল মিডিয়া নামে সমাদৃত। যুগের পরিক্রমায় সোশ্যাল মিডিয়ায় মানবজাতি অভ্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি ক্রয়-বিক্রয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলীও সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্পন্ন করছে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ক্রয়-বিক্রয় কার্যাবলী থেকে উৎপত্তি হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর। ব্যাবসা বাণিজ্যের ভিন্নতা যেমন সময়ের পরিক্রমায় পরিবর্তিত হয়েছে, তেমনি সেই ব্যাবসা বাণিজ্যের প্রসার ও প্রচারের জন্য মার্কেটিং এর পদ্ধতিরও পরিবর্তন ঘটেছে। মার্কেটিং এর বিবর্তিত এই বিশাল জগতে সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রেখেছে। আর তাই মার্কেটিং দুনিয়ার সেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে আজকের এই লেখাটিতে।

সূচিপত্রঃ

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কী?

ইংরেজিতে “Social Media Marketing” বা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কে বাংলায় “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন” বলা হয়ে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলতে মূলত সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে মার্কেটিংকে বোঝায়। এই প্রক্রিয়ায় কোনো নির্দিষ্ট মাধ্যমের ব্যাবহাকারীদের উদ্দেশ্যে কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান যখন বিজ্ঞাপনের দ্বারা ব্যবহারকারীদের কোনো পণ্য সম্বন্ধে বিস্তারিত ধারনা  দেওয়া হয়ে থাকে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি কে একত্রে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নামে অভিহিত করা হয়। Andreas KaplanMichael Haenlein নামের দুইজন মার্কেটিং এক্সপার্টের মতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হলো, “ দ্বিতীয় প্রজন্মের ওয়েবসাইট প্রযুক্তি দ্বারা তৈরি কিছু ইন্টারনেট ভিত্তিক এপ্লিকেশন যা একই সাথে ব্যবহারকারীদের পণ্য সম্বন্ধে ধারণা ও বিনিময়ে অনুমতি দেয়।”

আলাদা আলাদা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একই পণ্য কে ভিন্ন-ভিন্ন উপায়ে প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারীদের নিকট উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু ভিন্ন-ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে উপস্থাপন করা হলেও প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের উদ্দেশ্যই হচ্ছে প্রচারণা। 

মার্কেটিং এর জগতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর অবস্থান

“প্রচারের মাধ্যমেই প্রসার হয়”,মার্কেটিংয়ের এই অমীয় বাণী’র কারণেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং আজ মার্কেটিং জগতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। সারা পৃথিবীতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ৫ বিলিয়ন মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ সারা পৃথিবীটা যখন সম্পুর্ণ প্রায় সোশ্যাল মিডিয়ার হাতে বন্দী,তখন সোশ্যাল মিডিয়ার চেয়ে ভালো মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মের বিকল্প বর্তমান পৃথিবীতে নেই। ট্রেডিশনাল মার্কেটিংয়ের মতো গতানুগতিক মার্কেটিং থেকে বেরিয়ে উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠান গুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিংয়ে এখন তুলনামূলক বেশি সাড়া পাওয়ায় বেশি আগ্রহী হচ্ছে ; যার ফলে প্রতিষ্ঠানের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব, টুইটার, লিংকডইন, পিন্টারেস্ট ইত্যাদির মতো সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একজন মানুষ গড়ে প্রায় ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট সময় দিচ্ছে বর্তমানে, সেক্ষেত্রে এই ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট সময়ের একটা অংশের মধ্যে কোনো পণ্যের মার্কেটিং করা হলে নিশ্চিতভাবেই তা ব্যবহারকারীর মনোযোগ আকর্ষণ করবে। আর ঠিক এখানেই সোশ্যাল মিডিয়া অন্য যেকোনো মার্কেটিংয়ের চেয়ে আলাদা। কারণ এখানে ব্যবহারকারী নিশ্চিত ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করবে এবং সে মার্কেটিংয়ের শিকার হবেই। 

জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘দ্যা বিজনেস রিসার্চ কোম্পানিএর তথ্যমতে, ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটি এ বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৫৯.৬৮ বিলিয়ন থেকে ২২১.২৯ বিলিয়ন ডলারে এসে পৌছেছে; যা পৃথিবীর যেকোনো মার্কেটিং এর চেয়ে বেশি। অর্থাৎ খুব সহজেই ধারণা পাওয়া যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মার্কেটিংয়ের জগতে কোন পর্যায়ে পৌছে গেছে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা 

পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে প্রতিনিয়ত সম্পৃক্ত হচ্ছে। অর্থাৎ এই বিপুল জনসংখ্যাকে লক্ষ্য করে মার্কেটিং করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ও কার্যকরী মাধ্যম হলো সোশ্যাল মিডিয়া। প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে মানুষ এই সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়েছে। এই নির্ভরশীলতা কে কেন্দ্র করে মার্কেটিং এর ফলে সবচেয়ে বেশি মানুষের সান্নিধ্যে আসা সম্ভব; যা মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ফোর্বসএর তথ্যমতে, সারাবিশ্বে মানুষ তাদের মোট ক্রয়ের ৬৫ থেকে ৮১ শতাংশ জিনিস সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয়ে ক্রয় করছে। অর্থাৎ, মানুষের ক্রয়ের ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং যে কতটা প্রভাব ফেলছে তা একটি মাত্র পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর প্রকারভেদ 

সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমন মার্কেটিং এর বিরাট ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে, তেমন সেই ক্ষেত্রের কিছু নির্দিষ্ট প্রকারভেদও রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং মূলত দুই ভাগে বিভক্ত,

1.ফ্রি বা অর্গানিক সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

2.পেইড সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

ফ্রি বা অর্গানিক সোশ্যাল মার্কেটিং

ফ্রি বা অর্গানিক সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে, বিভিন্ন সোশ্যাল ওয়েবসাইটে বিনামূল্যে পেইজ তৈরি করে সেখানে পণ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে বিনামূল্যে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ক্রেতার সাথে তাতক্ষণিক যোগাযোগ করার সুযোগ থাকে। তাছাড়াও সামাজিক মাধ্যমে গ্রুপ তৈরি করে ক্রেতাদের সুবিধা, অসুবিধা সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।

পেইড সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

যখন অর্থের বিনিময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পণ্যের বিজ্ঞাপন করা হয়, তখন সেই মার্কেটিং কে পেইড সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে। এক্ষেত্রে সাধারণত বিজ্ঞাপনদাতাকে তার পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে হয় এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ বিজ্ঞাপনের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পেইড এবং ফ্রি, উভয় মার্কেটিং-ই সমান জনপ্রিয়।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জন্য কিছু জনপ্রিয় মাধ্যম 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্বন্ধে জানার পর সবচেয়ে জরুরি হলো যেই সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে মার্কেটিং করা হবে সেগুলো সম্বন্ধে ধারণা রাখা। সারা বিশ্বে অনেক সামাজিক মাধ্যম থাকলেও সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ১৪ টি মাধ্যমের মার্কেটিং সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

  • ফেসবুক মার্কেটিং
  • ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং 
  • ইউটিউব মার্কেটিং 
  • টুইটার মার্কেটিং 
  • লিংকডইন মার্কেটিং 
  • হোয়াটসঅ্যাপ মার্কেটিং 
  • টেলিগ্রাম মার্কেটিং 
  • পিন্টারেস্ট মার্কেটিং 
  • টাম্বলার মার্কেটিং 
  • ফ্লিকার মার্কেটিং 
  • রেডিট মার্কেটিং 
  • Quora মার্কেটিং

ফেসবুক মার্কেটিং (Facebook Marketing) 

সারা বিশ্বের সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে ২.২ বিলিয়নের ও বেশি ব্যবহারকারী নিয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ফেসবুক। সেই ফেসবুকে ফ্রি তে মার্কেটিংয়ের জন্য পেজ, গ্রুপ খুলে ২.২ বিলিয়নের ও বেশি মানুষের মধ্যে পণ্যের বিজ্ঞাপন করা যায়। এতে রয়েছে পণ্য সম্বন্ধে অনেক বিস্তারিত উল্লেখ করার সুযোগ। তাছাড়া বিভিন্ন অফার বা ডিসকাউন্টের মাধ্যমে মানুষ কে পণ্য ক্রয়ে অধিক উৎসাহিত করার সুযোগও রেখেছে ফেসবুক। নির্দিষ্ট শ্রেণির গ্রাহক নির্ধারণ করে তাদের উদ্দেশ্য বিভিন্ন ক্যাম্পেইন করে গ্রাহকদের মনোযোগ আকর্ষর্ণের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পণ্যের পেজের রিচ বাড়ানো যায়। বিভিন্ন কন্টেস্ট, নেটওয়ার্কি ইভেন্ট, গিভ্যাওয়ে,রেফারিং এর মাধ্যমে আরও জনপ্রিয় করে তোলা যায় নির্দিষ্ট কোনো ফেসবুক পেইজ কে। তবে গ্রাহকদের মতামত সম্বন্ধে ফেসবুকের সবচেয়ে বড়ো সুবিধা হলো গ্রুপিং। এখানে গ্রাহকদের মতামত, সুবিধা, অসুবিধা ইত্যাদি সম্বন্ধে ধারণা পায় প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনে থাকে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করার সুযোগ। যার ফলে ক্রমেই গ্রাহকদের কাছে প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভিন্ন-ভিন্ন মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজি অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে অনেক সমৃদ্ধ হয়। ফেসবুক মার্কেটিং পেইড, নন-পেইড দুই মাধ্যমেই বিপুল পরিমাণে হয়ে থাকে। 

ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং (Instagram Marketing) 

ফেসবুকের পরেই বিশ্বের আরেকটি জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম হলো ইন্সটাগ্রাম। ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমেও আপনি নির্দিষ্ট পণ্যের মার্কেটিং করা যায়। সারাবিশ্বে প্রায় ২ বিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে ইন্সটাগ্রামে। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে টার্গেট করে মার্কেটিং কতটা জনপ্রিয় হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ইন্সটাগ্রামে পেইড ও ফ্রি উভয় পদ্ধতিতেই মার্কেটিং করা যায়। সেক্ষেত্রে প্রফেশনাল ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট তৈরি করে বিজ্ঞাপন করতে হয়। বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি ফলোয়ার বৃদ্ধির দিকেও নজর রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে ইন্সটাগ্রাম পেজের কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। বিভিন্ন সেলিব্রিটি, স্পোর্টস পার্সন,গণমাধ্যম  থেকে শুরু করে সবজায়গায় ফলো এবং কমেন্টের পাশাপাশি যারা পেজ কে ফলো করে তাদের ও ফলো করতে হবে। যার ফলে একটা কমিউনিটি গড়ে উঠবে। তাছাড়া হ্যাশট্যাগ, মেনশন, ক্যাম্পেইনের মতো বিষয় গুলো প্রতিনিয়ত করে পেজের ফলোয়ার বৃদ্ধি করতে হবে। আবার পেইড মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ইন্সটাগ্রামে অর্থ দিয়ে ফলোয়ার বৃদ্ধি করা যায়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ফলোয়ারদের পণ্যের প্রতি সম্পর্কে মতামত এবং চাহিদার ওপর লক্ষ্য রাখা।

ইউটিউব মার্কেটিং (Youtube Marketing) 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো ইউটিউবে মার্কেটিং। ইউটিউবে মার্কেটিংয়ের প্রথম ধাপ হচ্ছে একটা আকর্ষণীয় নাম দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল করা। অতঃপর চ্যানেল টি কে সেট আপ করা। এক্ষেত্রে চ্যানেলের ধরনের সাথে উপযুক্ত কাভার এবং প্রোফাইল ফটো আপলোড দিতে হবে। চ্যানেল সেট আপের পর পণ্যের ভিডিও করে, সেগুলো এডিট করে চ্যানেলে আপলোড করা ও বিস্তারিত ক্যাপশনে উল্লেখ, এ সকল কাজই করতে হয়। SEO এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট কী ওয়ার্ড ব্যবহার করেও প্রমোশন করা যায়। তাছাড়া ইউটিউব অ্যাডসেন্স অপশন ব্যবহার করে ভিডিওর পূর্বে বিজ্ঞাপন  দিয়ে ও প্রচারণা করা যায়। কমেন্ট সেকশন থাকায় গ্রাহকের মতামত সম্বন্ধে ধারণা পাওয়াটাও সহজ হয় প্রতিষ্ঠানের জন্য।

টুইটার মার্কেটিং (Twitter Marketing)

সারাবিশ্বে ৩২৬ মিলিয়ন টুইটার ব্যবহারকারীদের নিকট মার্কেটিং এর আরেকটা মাধ্যম হিসেবে টুইটার অন্যতম। টুইটারে একটা প্রোফাইল তৈরি করে কাস্টমাইজড করার পর চ্যাট হোস্ট করতে হবে। ওয়েব ট্যাফিকিং এর মাধ্যমে টুইটার একাউন্ট কে প্রমোট করার পাশাপাশি ইউনিক কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে বিজ্ঞাপনের জন্য। টুইটার একাউন্ট ভেরিফাই করার জন্য অবশ্যই আবেদন করতে হবে। একাউন্ট ভেরিফাই হলে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। বিভিন্ন ক্যাম্পেইন, শেয়ার,ফলোয়িং এর মাধ্যমে টুইটারে নির্দিষ্ট কাস্টমার কে টার্গেট করতে হবে। তাছাড়া ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামের মতো পেজ গুলোতে টুইটার একাউন্টের লিংক যুক্ত করে দেওয়ার ফলে টুইটারেরর ফলোয়ার বৃদ্ধির মাধ্যমে মার্কেটিং করা যায়।

লিংকডইন মার্কেটিং (LinkedIn Marketing) 

অন্য যেকোনো মার্কেটিংয়ের তুলনায় লিংকড-ইনে মার্কেটিং তুলনামূলক সংবেদনশীল। কেননা লিংকডইন মার্কেটিং এ গ্রাহকরা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার তুলনায় অনেক বেশি প্রফেশনাল। লিংকডইনে পেজ তৈরি করার পর প্লাগ ইন জেনারেটর অনুসরণ করে অনেকের কাছে ইনভাইটেশন করা যায়। তাছাড়া ইমেইল, নিউজলেটার, ব্লগের মাধ্যমেও লিংকডইন পেজ কে প্রমোট করা যায়। তাছাড়া ক্যাম্পেইন ও মেম্বার শিপ দিয়েও পেজ কে প্রমোট করা যায়।

হোয়াটসঅ্যাপ মার্কেটিং (WhatsApp Marketing)

সারাবিশ্বে হোয়াটসঅ্যাপ যোগাযোগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। যার ফলে হোয়াটসঅ্যাপে ও মার্কেটিং এর ক্ষেত্র গড়ে উঠেছে। বিজনেসের জন্য হোয়াটসঅ্যাপের আলাদা ক্ষেত্র তৈরি করেছে হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস অ্যাপের মাধ্যমে। যার ফলে একদম টার্গেটেড কাস্টমারের কাছে পণ্যের বিজ্ঞাপন করা যায়। প্রফেশনাল নাম্বারের মাধ্যমে একাউন্ট তৈরি করে প্রতিষ্ঠানের ছবি বা লোগো প্রোফাইলে দিয়ে শুরু করা উচিত। প্রথমে আত্মীয় পরিজনের কাজ থেকে শুরু করে হোয়াটসঅ্যাপে তাদের সাথে এঙ্গেজমেন্ট বৃদ্ধি করে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ কে যুক্ত করতে হবে। তাছাড়া ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামের মতো প্রোফাইলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের লিংক দিয়ে রাখা উচিত। হোয়াটসঅ্যাপে মানুষের এঙ্গেজমেন্ট অন্য যেকোনো মাধ্যমের চেয়ে বেশি থাকে কারণ হোয়াটসঅ্যাপে অধিকাংশ টেক্সট দেওয়ার তিন মিনিটের মধ্যেই সিন করা হয়। পরিচিত মানুষ জন, স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত রাখতে হবে এবং প্রতিনিয়ত তাদের আপডেটের মাধ্যমে প্রোডাক্টগুলো সম্বন্ধে ধারণা দিতে হবে। তাছাড়া কুইক রিপ্লাই সিস্টেমের মাধ্যমে কাস্টমারদের রিপ্লাই ও তাদের সাথে কথা বলে ব্যবসায়িক প্রচার ও প্রসার বৃদ্ধি করতে হবে। 

টেলিগ্রাম মার্কেটিং (Telegram Marketing) 

টেলিগ্রাম মার্কেটিং অন্যসব মার্কেটিং এর মতো এতটা জনপ্রিয় না হলেও টেলিগ্রাম মার্কেটিং বেশ ভালোই প্রভাব ফেলে থাকে মার্কেটিংয়ে। টেলিগ্রামে একাউন্ট করে চ্যানেল তৈরি করে পরিচিত মানুষ থেকে শুরু করে অন্যদের সাহায্য নিয়ে সেই চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করিয়ে যেকোনো পণ্যের বিজ্ঞাপন করা যায়। আবার সেই প্রতিষ্ঠানের আলাদা চ্যাটগ্রুপে মানুষের মতামত সম্বন্ধে জেনে নিয়ে মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজিতে পরিবর্তন করে ব্যবসা কে এগিয়ে নেওয়া যায়।

পিন্টেরেস্ট মার্কেটিং (Pinterest Marketing) 

পিন্টারেস্টে মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ব্যবসায়িক পণ্যের ভিজ্যুয়াল চিত্র সবার মাঝে উপস্থাপন করা যায়। পিন্টারেস্টের টেমপ্লেটের মাধ্যমে খুব সহজেই পণ্য কে পিন করে মার্কেটিং করা যায়। ওয়েব ট্রাফিকিং এর মাধ্যমে পণ্য বিক্রির পারসেন্টেজ বৃদ্ধি করা যায়। এইক্ষেত্রে অন্যদের পিনে নিয়মিত লাইক, কমেন্টের মাধ্যমে অন্যদের সাথে পিন্টারেস্ট প্রোফাইল কে যুক্ত করতে হবে। আকর্ষণীয় ছবি,বর্ণনামূলক কন্টেন্ট, আকর্ষণীয় হেডলাইন, গুরুত্বপূর্ণ ব্র‍্যান্ডিং ও ভালো গল্প বলা পিন্টারেস্ট মার্কেটিংয়ে ভালো করার প্রধান সূত্র। যুক্তরাষ্ট্রের ৮৩% মানুষের কাছে হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রামের চেয়ে পিন্টারেস্ট মার্কেটিং অনেক বেশি জনপ্রিয় এবং মানুষ অন্যান্য সাইটের তুলনায় পিন্টারেস্টে বেশি আগ্রহী। 

টাম্বলার মার্কেটিং (Tumblr Marketing) 

টাম্বলার অন্যান্য সাইটের তুলনায় কম জনপ্রিয় হলেও টাম্বলারেও মার্কেটিং করা যায়। মাইক্রো-ব্লগিং প্ল্যাটফর্মের সাইটে একাউন্ট করে পণ্যের ছবি, পণ্য সম্বন্ধে লিখে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মার্কেটিং করা যায়। টাম্বলারের ব্লগে নিবন্ধনের পর tumblr.com সাবডোমেনের মাধ্যমে আরেকটি ডোমেইন নাম দিয়ে একাউন্ট পরিচালনা করতে হয়। ২০১৭ সালে টাম্বলারে ৩৮১ মিলিয়ন ব্লগের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ফ্লিকার মার্কেটিং (Flicker Marketing)

২০০৫ সালে ইয়াহু কতৃক ক্রয়কৃত একটি সামাজিক মাধ্যম যেখানে যেখানে ব্লগ ও ফটোগ্রাফি প্রকাশ করা হয়। এখানে একাউন্ট করে পণ্যের ছবি ও বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে মার্কেটিং করা যায়। গবেষক ও ব্লগারদের একাউন্ট ফলো করে, কমেন্ট করে, ওয়েব ট্র‍্যাফিকিং এর মাধ্যমে ফ্লিকারে ফলোয়ার বৃদ্ধি করা যায়।

রেডিট মার্কেটিং (Reddit Marketing) 

৩০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর রেডিটে মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রেডিটে মার্কেটিং করতে প্রথমেই একাউন্ট করে টার্গেটেড কাস্টমারের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাছাড়া ট্রেন্ডিং টপিক ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ রেডিটে। বিজনেস ডেভেলপমেন্টে সাব রেডিট খুঁজে সাব রেডিট সম্বন্ধে গ্রাহকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, সুবিধা অসুবিধা সহ সকল মতামত গ্রহণ করতে হবে। সেই অনুযায়ী ছবি, অফার দিয়ে বিজ্ঞাপন করতে হয়। বেশি বেশি প্রমোটিংয়ের জন্য কারমা, ক্রস পোস্ট ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে হবে।

কোরা মার্কেটিং (Quora Marketing)

Quora বা কোরা মার্কেটিং বর্তমানে জনপ্রিয় মার্কেটিং গুলোর অন্যতম। পণ্যের সহজ প্রচারণা, প্রোডাক্ট লিংক শেয়ারিং, প্রোডাক্ট কন্টেন্ট পাবলিশের মাধ্যমে মার্কেটিং করা যায়। বিজনেসের এক্টিভিটি, গ্রাহক রিচ বৃদ্ধি তে কোরা মার্কেটিং অন্যতম সেরা মাধ্যম। পণ্যের ধরণ অনুযায়ী বিশ্লেষণ, অন্যের মতামত গুলো কে গ্রহণ, অন্যদের সাথে সংযুক্তি, কার্যক্রম বৃদ্ধি ও বেশি বেশি উত্তর দিয়ে একাউন্ট রিচের মাধ্যমে মার্কেটিং করা যায়।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ সফলতার কিছু নিয়মকানুন 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ সফল হতে গেলে সাধারণত চারটি সূত্র অনুসরণ করতে হয়। এই চারটি সূত্র অনুসরণ করলে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ সফল হওয়া বাধ্যতামূলক প্রায়।

  • লক্ষ্য ঠিক রাখা। 
  • গ্রাহকের মতামত কে গুরুত্ব দেওয়া।
  • পণ্যের কোয়ালিটি ঠিক রাখা।
  • ধৈর্য ধারণ করা।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং-এর সুবিধাসমুহ 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর জগতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং যে বিপ্লব সৃষ্টি করেছে, তার সুবিধা সমূহ ভোগ করছে গোটা পৃথিবী। নিম্নে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সুবিধা সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

কম খরচেই বিজ্ঞাপন

সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রিতেও বিজ্ঞাপন করাও যায়। যদি ফ্রিতে সম্ভব নাও হয়,তবুও খুবই সামান্য অর্থের বিনিময়ে বিজ্ঞাপন করা যায়। যা গতানুগতিক মাধ্যমে করতে গেলে সমান সংখ্য মানুষের পৌছাতে সোশ্যাল মিডিয়ার তুলনায় অন্তত দশ গুণ বেশি অর্থ খরচ হবে।

নির্দিষ্ট শ্রেণির গ্রাহক নির্ধারণ

একটি পণ্যের মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি হলো যে ধরণের গ্রাহকদের জন্য পণ্যটি তৈরি হয়েছে, তাদের কাছে পণ্যের বার্তা যাচ্ছে কি-না। অর্থাৎ যখন একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির গ্রাহকের কাছে পণ্যের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বার্তা যাবে, তখন পণ্যের বিক্রয় অন্তত ৩০% বৃদ্ধি পাবে। যেটা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুবই সহজ এবং কার্যকরী উপায়ে টার্গেট করা যায়।

গ্রাহকের সহজলভ্যতা

নির্দিষ্ট শ্রেণির গ্রাহক নির্ধারণ করার পর গ্রাহকদের নিকট পণ্যকে আরও আকর্ষণীয় উপায়ে তুলে ধরে গ্রাহকের মন জয় করার মাধ্যমে যেমন গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে তেমনি গ্রাহকের নিকট পণ্য সহজলভ্য হবে। পণ্য যত সহজলভ্য হবে গ্রাহকের সংখ্যাও ততো বেশি পাওয়া যাবে।

ঘরে বসেই মার্কেটিং

ট্র‍্যাডিশনাল মার্কেটিং প্রচারণা ও বিজ্ঞাপনের জন্য যেই পরিমাণ অর্থ এবং পরিশ্রমের প্রয়োজন হতো, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই তুলনায় প্রায় খুবই কম হয়। যেকোনো প্রোডাক্ট ঘরে বসে বিস্তারিত লিখে,ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিনামূল্যে বা খুবই স্বল্পমূল্য দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভবপর হয়েছে।

ব্যবসায়িক যোগাযোগ ও পরিচিতির প্রসার

যেকোনো নতুন কোম্পানি বা উদ্যোক্তার ব্যাবসায়িক যোগাযোগ ও পরিচিতির প্রসার ঘটানো ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পণ্য সরবরাহ এর ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার চেয়ে ভালো উপায় আর নেই। অন্যান্য উদ্যোক্তাদের নিকট পণ্য কে পরিচিত ও পণ্যের প্রমোশনের ক্ষেত্রেও এটি কাজে লাগে। কেননা এটি একমাত্র মাধ্যম যার কোনো বর্ডার নেই। এতে সারা পৃথিবীতে ব্যাবসায়িক পরিচিতি ও অন্যান্য উদ্যোক্তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের অবস্থা সম্বন্ধে খবর রাখা যায় প্রতিনিয়ত।

কর্মসংস্থান সৃষ্টি

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘরে বসে সবকিছু সম্পাদনা করা সম্ভব হলেও গ্রাহকের হাতে পণ্য পৌঁছে দিতে লোকবলের বিকল্প নেই। শুধু এই ক্ষেত্রেই নয়, বিভিন্ন ব্যাবসায়িক পেজ, ওয়েবসাইট গুলো কে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারে অসংখ্য দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের কর্মসংস্থান হয়েছে দেশি-বিদেশি কোম্পানি ও ব্যাক্তিগত পেজ বা ওয়েবসাইট গুলো চালনার ক্ষেত্রে। ফলে,আমাদের দেশের বেকারত্ব হ্রাস করে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং-এর অসুবিধা সমূহ

সব ভালো দিকের মতোই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কিছু খারাপ দিক ও বিদ্যমান। 

স্ক্যাম (Scam) ও দূর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা

সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিংয়ের এই রমরমা জগতে কিছু আসাধু মাধ্যম Scam বা ভূয়া App মার্কেটিং জগতে অনুপ্রবেশ করে মানুষের ব্যাক্তিগত তথ্য নিয়ে হ্যাকিং করে। যার ফলে সাইবার ক্রাইমের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর মানুষের সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে।

ভূয়া খবরের সম্ভাবনা

কিছু অনলাইন পেজ আছে যেগুলো নিজেদের রিচ বাড়াতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে পোস্ট দিয়ে থাকে। কিন্তু অনেক সময় সেগুলো ভূয়া হয়, যার ফলে মানুষের মাঝে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে পরে।

সামাজিক বৈষম্য

বর্তমান প্রজন্মের আগের প্রজন্ম কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত ছিল না। যার ফলে তারা সোশ্যাল মিডিয়ার সমস্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে; যা একটা সামাজিক বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে। 

অসাধু বিক্রেতাদের চক্র

সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্তমানে অসাধু বিক্রেতা আছে, যারা পণ্যের ছবি দিয়ে মার্কেটিং করে নিম্নমানের পণ্য গ্রাহকদের কাছে ডেলিভারি দেওয়ায়। এতে করে গ্রাহকদের অন্যান্য নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধেও নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে বাধ্য হয়। যা উদ্যোক্তা এবং কোম্পানিগুলোর জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।

কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখবো? 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শেখার মূলত দুইটি প্রধান উপায় রয়েছে। প্রথমত, নিজে চেষ্টা করে শেখা। অর্থাৎ ইউটিউব সহ বিভিন্ন সাইটে ভিডিও দেখে, আর্টিকেল পড়ে নিজে চেষ্টা করে শেখা যায়। দ্বিতীয়ত, কোনো আইটি প্রতিষ্ঠানে ফি দিয়ে কোর্সের মাধ্যমে শেখা যায়। এক্ষেত্রে সুবিধা হচ্ছে, কোনো ধরনের সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক সাহায্য পাওয়া যায় কতৃপক্ষের নিকট থেকে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা 

বর্তমানে সারা বিশ্বে ৭ মিলিয়নের ও বেশি ছোট বড়ো কোম্পানি রয়েছে। তাদের অধিকাংশই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়। ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে, সাথে সাথে বৃদ্ধি পাবে দক্ষ কর্মীর চাহিদা। অর্থাৎ, ই-কমার্সে ক্রমেই দিন দিন মার্কেট প্রসারিত হচ্ছে। সেই বিবেচনায় আগামীতে বাংলাদেশ সহ এত বিরাট জনসংখ্যার দেশ গুলোর জন্য বেকারত্ব হ্রাসের এক অপার সম্ভাবনা রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ; যা ভূমিকা রাখবে বৈশ্বিক অর্থনীতির ক্ষেত্রেও। 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং থেকে আয়

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কত আয় করতে পারবে, তা নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং এর ওপর। মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজি ভালো হলে বিপুল পরিমাণে লাভ হতে পারে।

আর একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্পেশালিস্টের আয় নির্ভর করবে তার দক্ষতার ওপর। দক্ষ হলে বেশ ভালো পরিমানে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। অন্যথায়, বেশিদিন টিকতে পারবে না মার্কেটে।

শেষকথা

পরিশেষে এটাই বলা যায় যে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে, একইভাবে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তিগত উদ্যোক্তাদের মার্কেটিং এর ক্ষেত্র, প্রয়োজনীয়তা এবং প্রতিযোগিতা। ইন্টারনেটের এই পৃথিবীতে সবকিছু মানুষের মুঠোর মধ্যে আনতে যাওয়ার ক্রমবর্ধমান প্রয়াস সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর গতি কে আরও তরান্বিত করছে এবং ভবিষ্যতে এই গতি আরও বেগবান হবে।

অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

১। ক্যারিয়ার হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং পেশা কতটা সম্ভাবনাময়? 

উত্তরঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়ে আমাদের দেশে কোনো আলাদাভাবে ডিগ্রি না দেওয়া হলেও বিশ্বের কিছু দেশ তা চালু করেছে। বাংলাদেশে মার্কেটিং ডিগ্রির সাথে কিছু ক্ষেত্রে এই কোর্স করানো হয়। কিন্তু মার্কেটিং এ ডিগ্রি না থেকেও পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে হলে এই ক্ষেত্রে নিজের পরিশ্রম ও দক্ষতার বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে। তবেই এই পেশায় টিকে থাকা যাবে।

২। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ কিভাবে উন্নতি করা যায়?

উত্তরঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ উন্নতি করতে হলে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন দক্ষতা অর্জনে অগ্রসর হতে হবে। তবেই ব্যাক্তিগত পর্যায়ে উন্নতির পাশাপাশি আর্থিক উন্নতি ও ঘটবে।

রিলেটেড আর্টিকেল গুলো

Back to top button