
ঈদ, পূজা কিংবা স্বাভাবিক সময়; এদেশের জনগণ বছরের ১২ মাসই ভ্রমণ করে ট্রেনে। সেটি হওয়ার কারণও আছে। প্রায় বিনা ঝাঁকুনি, প্রশস্ত যায়গা এবং কম খরচের জন্য এ দেশের জনগণেরই একটি বৃহৎ অংশ ট্রেনে ভ্রমণ করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কিন্তু এই আরামদায়ক যাত্রাই বদলে যেতে পারে যদি ট্রেনটি আসতে দেরি হয়। বর্তমানে আন্তঃনগর ট্রেন গুলো যথেষ্টই শিডিউল মেনে চলে। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের গল্পও এখন অতীত। কিন্তু কখনোই যে ট্রেন লেট করবে না এমনটি কিন্তু বলার সুযোগ নেই। আর ট্রেনে যেহেতু বেশিরভাগ দূর পাল্লার যাত্রীরাই ভ্রমণ করে, তাই সকলেরই উচিত স্টেশনের উদ্দ্যেশে রওনা দেওয়ার আগে ট্রেনের অবস্থানটি একটু জেনে নেওয়া। এছাড়া ট্রেনের প্ল্যাটফর্মে বসেও ট্রেনের অবস্থান জানতে পারলে অহেতুক অপেক্ষা থেকে অনেক ক্ষেত্রেই পাওয়া যায় নিস্তার। তাই এই লেখাতে আলোচনা করা হলো ট্রেনের অবস্থান বের করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।
সূচিপত্রঃ
বাংলাদেশে ট্রেনের অবস্থান জানার ইতিকথা
রেলের অফিসিয়াল সাইটের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে রেল লাইনের সর্বোমোট দৈর্ঘ্য হলো ২৯৫৫.৫৩ কিলোমিটার। প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার সুদীর্ঘ পথের এই রেলওয়েকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন হয় ২৫,০০০ এরও বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী। বাংলাদেশের রেলপথ মূলত দুইটি জোনে বিভক্ত। সেগুলো হলো পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল। এই দুইটি জোনের ট্রেনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রয়েছে বিভাগীয়, আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় ট্রেন কন্ট্রোল অফিস। পূর্বে ট্রেন কন্ট্রোল ফোনের মাধ্যমে স্টেশন মাস্টারদের সাথে যোগাযোগ করে ট্রেনের অবস্থান নির্ধারণ করা হতো। কিন্তু এই ব্যবস্থায় ব্লক সেকশনের ট্রেনগুলোর অবস্থান এবং যেকোনো সময়ে এর গতিবেগ জানা সম্ভব ছিল না। এই সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশ রেলওয়ে চালু করে নতুন সিস্টেম। গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস (Global Positioning System – GPS) এবং জেনারেল প্যাকেট রেডিও সার্ভিস তথা জিপিআরএস (General Packet Radio Service – GPRS) এর সাহায্যে প্রবর্তিত হয়েছে ট্রেইন ট্র্যাকিং অ্যান্ড মনিটরিং সিস্টেম – টিটিএমএস (Train Tracking & Monitoring System – TTMS)। এই TTMS উদ্বোধিত হয় ২০১৪ সালের ১৬ই জানুয়ারি।
এসএমএস বা মেসেজ এর মাধ্যমে ট্রেনের অবস্থান জানার উপায়
মূলত টিটিএমএস (TTMS) এর সাহায্যেই বাংলাদেশের ট্রেনের অবস্থান জানার সার্বিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। সম্মানিত সাধারণ যাত্রীদের জন্যও এই পদ্ধতিতে ট্রেনের অবস্থান বের করা খুবই সহজ। যেকোনো মোবাইল থেকে একটি এসএমএস প্রেরণের মাধ্যমেই আপনি জানতে পারবেন আপনার কাঙ্খিত ট্রেনের অবস্থান। আর এই পুরো প্রক্রিয়াটিকেই বর্ণনা করা হলো ধাপে ধাপেঃ
ধাপ ১ঃ মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে যান
আপনার মোবাইল ফোনটির ম্যাসেজিং অ্যাপ অথবা ম্যাসেজ অপশন চালু করুন। উল্লেখ্য যে, এটির জন্য স্মার্টফোনের কোনো প্রয়োজন নেই। সাধারণ বাটন ফোনের ম্যাসেজিং অপশন থেকেও এটি করতে পারবেন সহজেই।
ধাপ ২ঃ নম্বর প্রদান করুন
ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে একটি নির্দিষ্ট নম্বর টাইপ করুন। নম্বরটি হলো 16318। নম্বরটি সিলেক্ট করে এবার ম্যাসেজ পাঠানোর পালা।
ধাপ ৩ঃ সঠিক উপায়ে ম্যাসেজ লিখুন
এসএমএস এর সাহায্যে ট্রেনের অবস্থান জানতে চাইলে আপনাকে এসএমএস তথা ম্যাসেজটি সঠিক ভাবেই লিখতে হবে। ম্যাসেজটি লেখার নির্দিষ্ট ধরন রয়েছে। সেটি হলো প্রথমে লিখতে হবে TR এরপরে লিখতে হবে ট্রেনটির নম্বর অথবা ট্রেনটির কোড। এখানে ট্রেনের কোড বলতে তার নামই বোঝায়। অর্থাৎ ম্যাসেজটি হতে পারে দুই রকমের।
TR<space>705
TR<space>Ekota
এখানে ম্যাসেজের একতা নামক ট্রেন এবং ৭০৫ নং ট্রেন একই।
ধাপ ৪ঃ ট্রেনের অবস্থান জানুন
১৬৩১৮ নম্বরে ম্যাসেজটি পাঠানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার কাছে ফিরতি ম্যাসেজে নিম্নের চিত্রের ন্যায় ট্রেনটির অবস্থান সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য চলে আসবে। এভাবেই আপনি এসএমএস এর সাহায্যে সাধারণ বাটন ফোন থেকেই ট্রেনের অবস্থান নির্ণয় করতে পারবেন।
অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে ট্রেনের অবস্থান জানার উপায়
এসএমএস এর পাশাপাশি ‘BR Explorer’ নামক একটি অ্যাপের সাহায্যেও ট্রেনের অবস্থান জানার উপায়। এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হলো সানক্রপস লিমিটেড (Suncrops Ltd)। এক্ষেত্রে এই পুরো পদ্ধতির প্রথমে থাকছে অ্যাপটি ইন্সটল করে তাতে অ্যাকাউন্ট খোলার উপায়। পরবর্তী অংশে থাকছে বিআর এক্সপ্লোরার (BR Explorer) অ্যাপটির সাহায্যে ট্রেনের অবস্থান জানার উপায়।
ধাপ ১ঃ বিআর এক্সপ্লোরার (BR Explorer) অ্যাপটি ইন্সটল করুন
অ্যাপটি ইন্সটল করতে প্রথমেই চলে যান গুগল প্লে স্টোরে। সেখানে ‘BR Explorer’ লিখে সার্চ করুন। তাহলেই নিচের চিত্রের ন্যায় অ্যাপটি ভেসে উঠবে। এবার ইন্সটল বাটনে ক্লিক করে অ্যাপটি ইন্সটল করুন।
ধাপ ২ঃ অ্যাপে প্রবেশ করুন।
অ্যাপটি ইন্সটল করে তাতে প্রবেশ করার পরই আপনি নিচের চিত্রের ন্যায় একটি পেজ দেখতে পাবেন। এখানে লগইন ও সাইনআপ দুটি করা জন্যই ইন্টারফেস রয়েছে। আপনার আগে থেকে একাউন্ট থাকলে লগইন করুন। নাহলে ‘নিউজ ইউজার?সাইন আপ নেও’ (New User? Sign Up Now) বাটনে ক্লিক করে সাইন আপ করুন।
ধাপ ৩ঃ অ্যাকাউন্ট খুলুন
সাইন-আপ পেজে গিয়ে প্রথমেই আপনার ফোন নাম্বার, ইমেইল, পাসওয়ার্ড এবং রেফারেল কোড প্রবেশ করান। নম্বর, ইমেইল ও পাসওয়ার্ড নিজের মতো করে সেট করুন। রেফারেল কোডের ক্ষেত্রে প্রবেশ করান ZSYQQ212709 এই কোডটি। সর্বশেষে নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র অ্যাপের সাহায্যে স্ক্যান করুন। তবে জাতীয় পরিচয় পত্র স্ক্যান না করলেও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
রেজিস্ট্রেশন (REGISTRATION) বাটনে চাপ দেওয়ার পরে কিছু সময়ের মধ্যেই রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাবে। অতঃপর মোবাইল নম্বর ভেরিফাই করার পালা।
ধাপ ৪ঃ মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশন
আপনি যেই মোবাইল নম্বরটি প্রবেশ করাবেন সেখানে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। সেই কোডটিকে অ্যাপে প্রবেশ করিয়ে নম্বরটি যে আপনার কাছেই রয়েছে তা নিশ্চিত করুন।
ধাপ ৫ঃ ট্রেন সেকশনে প্রবেশ
মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশনের পরেই আপনি অ্যাপটির অভ্যন্তরের সকল সেবা নিতে পারবেন। ট্রেনের অবস্থান জানতে নিচের চিত্রের ন্যায় হোমপেজ থেকে ট্রেন (Train) নামক প্রথম অপশনটি নির্ধারণ করুন।
ধাপ ৬ঃ ট্রেন নির্ধারণ
ট্রেন সেকশনে ট্যাপ করলেই প্রায় সকল ট্রেনের নাম দেখাবে। এই তালিকা থেকে আপনার যে ট্রেনের টিকেট কেটেছেন তা নির্ধারণ করুন। খুঁজে না পেলে নিচের সার্চ ট্রেন (Search Train) অপশনটিতে ক্লিক করুন। সেখান ট্রেনের নাম লিখলেই ট্রেন নির্ধারণের অপশন পাওয়া যাবে।
ধাপ ৭ঃ ট্রেনের অবস্থা নির্ণয়
ট্রেন নির্ধারণে পরে এবার অবস্থান নির্ণয়ের পালা। আপনার কাঙ্খিত ট্রেনের নামের উপর ট্যাপ করুন।
ধাপ ৮ঃ নিশ্চায়ন
ট্রেনের অবস্থা নির্ণয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট চার্জ আছে। সেই চার্জ দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হলে ‘Yes’ চাপুন। তাহলেই কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার কাঙ্খিত ট্রেনের অবস্থান জানতে পারবেন।
আর এভাবেই আপনি BR Explorer অ্যাপের সাহায্যে ট্রেনের অবস্থান নির্ণয় করতে পারবেন। আর যদি দেখেন ট্রেন অনেক বেশি বিলম্ব করছে, সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে আপনার কাটা টিকেটটি অনলাইনেই ফেরত দিতে পারবেন।
ট্রেনের অবস্থান নির্ণয় করার খরচ
ট্রেনের অবস্থান নির্ণয় করার দুটো প্রক্রিয়াতেই কিছুটা খরচ করতে আছে। এক্ষেত্রে এসএমএস এবং অ্যাপের খরচ বেশ আলাদা।
মাধ্যম | খরচ |
এসএমএস | প্রতি বার ৪.৫ টাকা |
বিআর এক্সপ্লোরার (BR Explorer) অ্যাপ | প্রথম ২০ বার ফ্রি। |
পরবর্তীতে প্রতিবার ২ টাকা। |
ট্রেনের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য ট্রেন নং ও ট্রেন কোড
সকলের কাছে স্মার্ট ফোন নাই থাকতে পারে। আবার স্মার্ট ফোন থাকলেও অনেক সময়ই অনেকের ইন্টারনেট সংযোগ থাকে না। এক্ষেত্রে ট্রেনের অবস্থান জানার জন্য এসএমএসই ভরসা। আর এসএমএস এর সাহায্যে ট্রেনের অবস্থান জানার জন্য প্রয়োজন ট্রেন নং অথবা ট্রেন কোডের। নিচে থাকছে সকল আন্তঃনগর ট্রেনের রুট, ট্রেন নং, ট্রেন কোড এবং নামসমূহ।
ঢাকা – চট্টগ্রাম ট্রেন রুট
ট্রেন নং | ট্রেন কোড | ট্রেনের নাম |
701 | Subarna | সুবর্ণ এক্সপ্রেস |
702 | Subarna | সুবর্ণ এক্সপ্রেস |
703 | GodhuliU | মহানগর গোধুলী |
704 | ProvatiD | মহানগর প্রভাতী |
721 | ProvatiU | মহানগর প্রভাতী |
722 | GodhuliD | মহানগর গোধুলী |
741 | TurnaU | তূর্ণা |
742 | TurnaD | তূর্ণা |
ঢাকা – সিলেট ট্রেন রুট
ট্রেন নং | ট্রেন কোড | ট্রেনের নাম |
709 | Para | পারাবত এক্সপ্রেস |
710 | Para | পারাবত এক্সপ্রেস |
717 | JoyantU | জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস |
718 | JoyantD | জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস |
739 | UpabanU | ঊপবন এক্সপ্রেস |
740 | UpabanD | ঊপবন এক্সপ্রেস |
773 | Kalani | কালনী এক্সপ্রেস |
774 | Kalani | কালনী এক্সপ্রেস |
ঢাকা – দিনাজপুর ট্রেন রুট
ট্রেন নং | ট্রেন কোড | ট্রেনের নাম |
705 | Ekota | একতা এক্সপ্রেস |
706 | Ekota | একতা এক্সপ্রেস |
757 | Druta | দ্রুতযান এক্সপ্রেস |
758 | Druta | দ্রুতযান এক্সপ্রেস |
ঢাকা – রাজশাহী ট্রেন রুট
ট্রেন নং | ট্রেন কোড | ট্রেনের নাম |
753 | Silk | সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস |
754 | Silk | সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস |
759 | Padma | পদ্মা এক্সপ্রেস |
760 | Padma | পদ্মা এক্সপ্রেস |
769 | Dhum | ধুমকেতু এক্সপ্রেস |
770 | Dhum | ধুমকেতু এক্সপ্রেস |
ঢাকা – খুলনা ট্রেন রুট
ট্রেন নং | ট্রেন কোড | ট্রেনের নাম |
725 | Sundar | সুন্দরবন এক্সপ্রেস |
726 | Sundar | সুন্দরবন এক্সপ্রেস |
763 | Chitra | চিত্রা এক্সপ্রেস |
764 | Chitra | চিত্রা এক্সপ্রেস |
চট্টগ্রাম – সিলেট ট্রেন রুট
ট্রেন নং | ট্রেন কোড | ট্রেনের নাম |
719 | PaharU | পাহাড়িকা এক্সপ্রেস |
720 | PaharD | পাহাড়িকা এক্সপ্রেস |
723 | UdayU | উদয়ন এক্সপ্রেস |
724 | UdayD | উদয়ন এক্সপ্রেস |
ঢাকা ক্যান্ট. – কোলকাতা ট্রেন রুট
ট্রেন নং | ট্রেন কোড | ট্রেনের নাম |
3107 | Moitree | মৈত্রী এক্সপ্রেস |
3108 | Moitree | মৈত্রী এক্সপ্রেস |
3109 | Moitree | মৈত্রী এক্সপ্রেস |
3110 | Moitree | মৈত্রী এক্সপ্রেস |
শেষকথা
বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ে ভ্রমণের জন্য অন্যতম সুবিধাজনক একটি মাধ্যম। আরামদায়ক ও নিরাপদ এই ভ্রমণ মাধ্যমের আন্তঃনগর রুট গুলোতে সাধারণত ট্রেন দেরি করে না। কিন্তু ঈদের সময় প্রায়ই এর ব্যাত্যয় দেখা যায়। এছাড়াও কোনো ট্রেন লাইন বিচ্যুত হলেও দেখা দেয় সমগ্র রুটের শিডিউল বিপর্যয়। এ সকল সমস্যার কথা মাথাই রেখেই ট্রেনের অবস্থান বের করার নিয়ম সম্পর্কে আজ আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি জরুরী মূহুর্তে এই পদ্ধতি আপনাদের উপকারে আসবে।
অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
১। অ্যাপের মাধ্যমে অবস্থান নির্ণয় করতে চাইলে কিভাবে টাকা কাটবে?
উত্তরঃ প্রথম ২০ বারের পর আপনার প্রতি ১০ বারের জন্য ২০ টাকা আগেই রিচার্জ করে নিতে হবে।
২। নিয়ম মেনে চেষ্টা করার পরেও ট্রেনের অবস্থান না দেখালে কি করণীয়?
উত্তরঃ এসএমএস এর সাহায্যে ট্রেনের অবস্থান নির্ণয়ের সময় কখনো কখনো এমন সমস্যার উদ্ভব হয়। সেক্ষেত্রে বার বার চেষ্টা না করে একবার ম্যাসেজ দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করাটাই শ্রেয়। কারণ প্রতি ম্যাসেজেই ৪.৫ টাকা হারে চার্জ কাটবে।