কম্পিউটিংটেকনোলজি

ক্লাউড কম্পিউটিং কী? ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে বিস্তারিত

বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে একটি বহুল ব্যবহৃত অনলাইন প্রযুক্তি হল ক্লাউড কম্পিউটিং। আমরা অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে একে অপরের সাথে মেসেজ, ছবি, ভিডিও আদান প্রদান করি। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মনোভাব, তথ্য শেয়ার করি। অসংখ্য ডেটা, ফাইল অথবা অ্যাপ্লিকেশন ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্ভারে স্টোর করে রাখতে পারি। আবার, চাইলেই যেকোনো সময় যেকোনো ডিভাইসের সাহায্যে সকল স্থান থেকে এসব ডেটা দেখতেও পারি। এসবই সম্ভব হচ্ছে ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তির কল্যাণে। ক্লাউড কম্পিউটিং এসব ডেটা এবং ফাইল সংরক্ষণ করে রাখে, আবার ইন্টারনেটের মাধ্যমে এগুলো অ্যাক্সেস করার ক্ষমতাও দেয়। 

ক্লাউড কম্পিউটিং কম্পিউটার জগতে এক নতুন অধ্যায়ের সুচনা করেছে। এর সাহায্যে বিশ্বের আইটি সেক্টরগুলো আরো উন্নত প্রযুক্তির দিকে এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে। আমরা হয়ত না জেনেই প্রতিনিয়ত ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবস্থার বিভিন্ন সেবা নিচ্ছি। তাই আজকে এটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবো। 

সূচিপত্রঃ

ক্লাউড কম্পিউটিং কী? 

ক্লাউড কম্পিউটিং হলো ইন্টারনেট ভিত্তিক একটি কম্পিউটিং ব্যবস্থা যেখানে কম্পিউটারের সমস্ত ডেটা এবং সফটওয়্যার নিজের কম্পিউটারে না রেখে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপ অথবা নেটওয়ার্কে জমা করে রাখা হয়। ক্লাউড কম্পিউটিং সিস্টেম শুধু ডেটা জমা করে রাখার সুবিধা দেয় না, বরং ইন্টারনেটের সাহায্যে এসব ডেটা ম্যানেজ, প্রসেস এবং অ্যাক্সেস করার সুবিধাও দিয়ে থাকে। ডেটা স্টোরেজ, সার্ভার, ডেটাবেস, নেটওয়ার্কিং এবং সফটওয়্যার এর মত টুলস ও অ্যাপ্লিকেশন ক্লাউড কম্পিউটিং এর পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত। এই ক্ষেত্রে, ক্লাউড ভিত্তিক স্টোরেজ ব্যবহারকারীদের ডেটা এবং ফাইল সমূহ রিমোট সার্ভারে সংরক্ষণ করে রাখে। ফলে, ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দূরবর্তী যেকোনো স্থানে বসে যেকোনো ডিভাইসের সাহায্যে সার্ভারে সঞ্চিত ফাইল অথবা অ্যাপ্লিকেশন অ্যাক্সেস করতে পারেন। 

উদাহরণস্বরূপ, আমরা প্রাই সবাই Google drive এর নাম শুনেছি। এটি Google এর একটি জনপ্রিয় ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস। এখানে আমরা বিভিন্ন ডেটা যেমন, ফাইল, ছবি, ভিডিও, সফটওয়্যার ইত্যাদি আপলোড করে সংরক্ষণ করতে পারি। এজন্য প্রয়োজন পড়বে যেকোনো একটি ডিভাইস এবং ইন্টারনেট কানেকশন। Drive এ জমা করে রাখা ডেটা Google এর রিমোট সার্ভারে জমা হয়ে থাকবে। এই ডেটা গুলো আবার ইন্টারনেটের সাহায্যে যেকোনো সময় ম্যানেজ এবং অ্যাক্সেসও করা যাবে। এতে করে ফাইলগুলো কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক থেকে ডিলিট করে দিলেও Google এর রিমোট সার্ভার থেকে ডাউনলোড করে আবার ব্যবহার করা যায়। 

ক্লাউড কম্পিউটিং পরিষেবাগুলো পাবলিক এবং প্রাইভেট উভয় ধরনের হতে পারে। পাবলিক ক্লাউড ইন্টারনেটে একটি নির্দিষ্ট ফি এর বিপরীতে যেকোনো ব্যক্তির কাছে সেবা বিক্রয় করতে পারে। অপরদিকে, প্রাইভেট ক্লাউড হল একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন নেটওয়ার্ক বা ডেটা সেন্টার যা একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্লায়েন্টকে ক্লাউড অ্যাক্সেস করার সুবিধা দিয়ে থাকে। বর্তমানে ব্যবসা অথবা কাজের ধরনভেদে নানা প্রকারের ক্লাউডের ব্যবহার দেখা যায়। 

ক্লাউড কম্পিউটিং কিভাবে কাজ করে?

ক্লাউড কম্পিউটিং কিভাবে কাজ করে?

ক্লাউড কম্পিউটিং নামটি বিভিন্ন ফ্লোচার্ট এবং ডায়াগ্রামে ইন্টারনেটকে উপস্থাপন করার জন্য ব্যবহৃত ক্লাউড চিহ্ন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এসেছে। ব্যবহারকারীদের ডিভাইসগুলিকে ইন্টারনেট এর সাহায্যে রিমোট সার্ভার, ডেটাবেস এবং কম্পিউটার থেকে ডেটা এবং ক্লাউড অ্যাপ্লিকেশনগুলো অ্যাক্সেস করার সক্ষমতা প্রদান করার মাধ্যমে ক্লাউড কম্পিউটিং কাজ করে। এক্ষেত্রে ক্লাউড কম্পিউটিং দুইটি সিস্টেমের মাধ্যমে পরিচালিত হয়- ফ্রন্ট এন্ড এবং ব্যাক এন্ড ফাংশন। একটি ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক এই দুটি ফাংশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। ফ্রন্ট এন্ড ফাংশনের মধ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীর ডিভাইস আক্সেসিং, ব্রাউজার, নেটওয়ার্ক এবং ক্লাউড সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন, এবং ব্যাক এন্ড ডেটাবেস, সার্ভার ও কম্পিউটার নিয়ে গঠিত। এই ব্যাক এন্ড এর কাজ হল ফ্রন্ট এন্ড দ্বারা সংগ্রহীত সমস্ত ডেটা সংরক্ষণ করা। 

একটি কেন্দ্রীয় সার্ভার দ্বারা ফ্রন্ট এন্ড এবং ব্যাক এন্ড এর মধ্যে যোগাযোগ পরিচালিত হয়। কেন্দ্রীয় সার্ভার ডেটা আদান-প্রদানের সুবিধার্থে ইন্টারনেট প্রোটোকলের উপর নির্ভর করে। এটি ব্যবহারকারীর বিভিন্ন ডিভাইস এবং ক্লাউড সার্ভারের মধ্যে সংযোগ পরিচালনা করতে সফটওয়্যার ও মিডলওয়্যার উভয়ই ব্যবহার করে।  

ক্লাউড কম্পিউটিং এর ইতিহাস

ক্লাউড কম্পিউটিং এর ইতিহাস ও বিবর্তন শুরু হয় ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে। ১৯৫০ এর দশকে বিভিন্ন কোম্পানি বড় বড় মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করা শুরু করে। কিন্তু, প্রত্যেক ব্যবহারকারীর জন্য একটি করে কম্পিউটার কেনা খুব ব্যয়বহুল ছিল। ফলে, ১৯৫০ এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৬০ এর দশকের শুরুর দিকে সেন্ট্রাল মেইনফ্রেমে ব্যবহৃত ব্যয়বহুল প্রসেসরের আরও দক্ষ ব্যবহারের জন্য টাইম শেয়ারিং নামক একটি প্রক্রিয়া চালু করা হয়। এই প্রক্রিয়ার সাহায্যে ব্যবহারকারীরা একই সাথে মেইনফ্রেম কম্পিউটারের অসংখ্য কাজ অ্যাক্সেস করতে সক্ষম হয়। এটি প্রসেসিং এর ক্ষমতা সর্বাধিক করে তোলে এবং ডাউনটাইম কমিয়ে দেয়। এই ধারনাটিই আধুনিক ক্লাউড কম্পিউটিং এর ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। 

১৯৬৯ সালে আমেরিকান বিজ্ঞানী J.C.R. Licklider ARPANET (Advanced Research Projects Agency Network) তৈরিতে সাহায্য করে, যেটি তথাকথিত ইন্টারনেটের অগ্রদূত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ধারণাটি থেকেই গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কম্পিউটিং রিসোর্সের শেয়ার করার ভাবনা চলে এসেছিল। ১৯৭০ এর দশকে উদ্ভাবিত প্রথম ভার্চুয়াল মেশিন ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যবহারকে আরও উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। এর ফলে একটি কম্পিউটারে বসেই ব্যবহারকারীরা একাধিক কম্পিউটিং সিস্টেম চালাতে সক্ষম হয়। এই ভার্চুয়াল মেশিন এর কার্যকারিতা ভার্চুয়ালাইজেশনের ধারণাকে আরও স্পষ্ট করে তোলে। ভার্চুয়াল কম্পিউটারের ব্যবহার ১৯৯০ এর দশকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, যার ফলে আধুনিক ক্লাউড কম্পিউটিং এর অবকাঠামোগত বিকাশ ঘটতে শুরু করে।

১৯৭০ এবং ১৯৮০ এর দশকে, মাইক্রোসফট, অ্যাপল এবং আইবিএম এর মত কোম্পানিগুলো ক্লাউড সার্ভারের ব্যবহার উন্নত করার লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রযুক্তির উদ্ভাবন করে। সেলসফোর্স প্রথম কোম্পানি হিসেবে ১৯৯৯ সালে ইন্টারনেটে ক্লাউড কম্পিউটিং এর সেবা প্রদান করে। ২০০৬ সাল থেকে আমাজনের ওয়েব সার্ভিস চালু হয়, যার মাধ্যমে তারা স্টোরেজ এবং ক্লাউড কম্পিউটিং এর মত সেবা প্রদান করা শুরু করে। এরপরে মাইক্রোসফট, গুগল সহ অন্যান্য আরও কোম্পানি পরবর্তীতে এই ব্যবসার সাথে জড়িত হয়ে পড়ে।   

ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রধান বৈশিষ্ট্য

ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রধান বৈশিষ্ট্য

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজি ক্লাউড কম্পিউটিংকে নিন্মলিখিত পাঁচটি প্রধান বৈশিষ্ট্য দ্বারা সংজ্ঞায়িত করেছে।

১) On-demand self-service: ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের চাহিবা মাত্রই অন্য কোনো মানুষের প্রয়োজন ছাড়াই সেবা দিতে পারবে। এখানে গ্রাহকরা তাদের চাহিদামত সেবার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে অথবা কমিয়ে নিতে পারবে। নেটওয়ার্ক স্টোরেজ, সার্ভার ব্যবহারের সময়, ডেটাবেজ ইত্যাদি সেবা গ্রাহক তাদের প্রয়োজনমত গ্রহণ করতে পারবে। যেমন, একজন ব্যক্তি ঘরে বসে অন্য কোনো ব্যক্তির সাহায্য ছাড়াই যেকোনো ট্রাভেল পোর্টাল থেকে বাস বা ট্রেনের টিকিট বুক করতে পারেন। এক্ষেত্রে যাত্রী কতগুলো টিকিট নিবেন, যাত্রার সময়, অথবা কোন গাড়িতে যেতে ইচ্ছুক তা সবটাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাছাই করার সুযোগ থাকে।   

২) Broad network access: ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় ব্যবহারকারী তার যেকোনো ডিভাইসের সাহায্যে যেকোনো জায়গা থেকে ক্লাউড প্লাটফর্মে বিদ্যমান ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারে অথবা ক্লাউডে প্রয়োজনমত ডেটা আপলোড করতে পারে। মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, অফিস কম্পিউটার ইত্যাদির মত ভিন্ন ভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করেও ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তির সেবা গ্রহণ করা সম্ভব। উপরের উদাহরণে, যাত্রী ইন্টারনেট সুবিধা আছে এমন যেকোনো ডিভাইস যেমন স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ ইত্যাদি থেকে তার টিকিট বুক করতে পারেন।  

৩) Multi-tenancy and resource pooling: কম্পিউটিং রিসোর্স যেমন, নেটওয়ার্ক, সার্ভার, স্টোরেজ, সফটওয়্যার প্রভৃতি সেবা ব্যবহারকারী তাদের প্রয়োজনমত পরিবর্তন বা সংস্থাপন করে নিতে পারবেন। এছাড়া, ডেটা সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা বজায় রেখে একই ক্লাউড অ্যাপ্লিকেশন বা ইনফ্রাস্ট্রাকচার একাধিক গ্রাহকের মধ্যে শেয়ার করে ব্যবহার করার সুবিধা দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে, ক্লাউড কম্পিউটিং একটি মাল্টি-টেন্যান্ট মডেল ব্যবহার করে, যা একাধিক গ্রাহকের মধ্যে নিরাপদে একই ক্লাউড প্লাটফর্মের ব্যবহার নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। 

৪) Rapid elasticity and scalability: ব্যবহারকারী যেকোনো সময় তার চাহিদা অনুযায়ী ক্লাউড রিসোর্সের পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে পারেন, অথবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত থাকলে তা পরিবর্তন করে নিতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে এটি চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তন করার ব্যবস্থা করে রাখা যায়। চাহিদা বা কাজের চাপ বেশি হলে সেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আরও সার্ভার যোগ করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ক্রমবর্ধমান যাত্রী সংখ্যার চাহিদা মেটাতে, একটি এয়ারলাইন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়াতে পারে এবং চাহিদা কমে গেলে ফ্লাইট বন্ধ করতে পারে। 

৫) Measured service: ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ক্লাউডের বিভিন্ন রিসোর্সের কাজ, ব্যবহারের মাত্রা পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। এই পর্যবেক্ষণের সুবিধা ক্লাউড প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং গ্রাহক উভয়কেই দেয়া হয় যাতে এর মধ্যে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রকারভেদ

সার্ভিস মডেল অনুযায়ী

সার্ভিস মডেল অনুযায়ী ক্লাউড কম্পিউটিং ৩ প্রকার হয়ে থাকেঃ

১) অবকাঠামোগত সেবা- Infrastructure as a Service (IaaS): এখানে ক্লাউড সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের বিভিন্ন অবকাঠামো বা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ভাড়া দিয়ে থাকে। নেটওয়ার্ক, সার্ভার, স্টোরেজসহ অন্যান্য কম্পিউটিং রিসোর্স ভাড়া নিয়ে ব্যবহারকারীরা তাদের প্রয়োজনীয় অপারেটিং সিস্টেম এবং সফটওয়্যার সেখানে বসাতে পারে। কিভাবে সার্ভার ব্যবহার করা হবে, কোন ধরনের সফটওয়্যার বসানো হবে, কিভাবে স্টোরেজ সাজানো হবে তা ব্যবহারকারীরা নিজেদের ইচ্ছামত নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। উদাহরণঃ IBM Cloud, Microsoft Azure.

২) সফটওয়্যার সেবা- Software as a Service (SaaS): ক্লাউড সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্রাহককে সফটওয়্যার সার্ভিস প্রদান করে। SaaS সার্ভিস ব্যবহারের ফলে গ্রাহককে কম্পিউটারে আলাদা করে সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করার প্রয়োজন পড়ে না। ক্লাউডে সংরক্ষিত সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়। ব্যবহারকারী যেকোনো ডিভাইসের সাহায্যে ব্রাউজার ব্যবহার করে SaaS অ্যাপ্লিকেশনে লগইন করে সফটওয়্যার সেবা নিতে পারেন। উদাহরণঃ Microsoft office 365, Gmail, Yahoo.

৩) প্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক সেবা- Platform as a Service (PaaS): এই ক্লাউড সার্ভিস মডেল ব্যবহার করে গ্রাহকরা ক্লাউডের মধ্যেই বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ, পরিচালনা ও ম্যানেজ করার সুযোগ পায়। এখানে সাধারণত ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম ভাড়া দেওয়া হয়, যেখানে গ্রাহকরা অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে পারে। ইনফ্রাস্ট্রাকচার, হার্ডওয়্যার, বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট টুলস এর মত উপাদানগুলো কোনো তৃতীয় পক্ষ অথবা ক্লাউড প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। কোডিং এর জন্য অনেকেই PaaS ক্লাউড ব্যবহার করে যাতে এখানে নতুন কম্পিউটিং প্রোগ্রামগুলি সহজেই তৈরি, পরিবর্তন এবং পরীক্ষা করা যায়। উদাহরণঃ Google app engine.

ব্যাবহারকারির ধরন অনুযায়ী

ব্যাবহারকারির ধরন অনুযায়ী ক্লাউড কম্পিউটিং ৪ প্রকার হয়ে থাকে।

১) পাবলিক ক্লাউড (Public cloud): এই ধরনের ক্লাউড সাধারণত সকলের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত থাকে। এই ক্লাউড পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহকদের একটি পাবলিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্লাউড সার্ভিস সরবরাহ করে। ক্লাউড রিসোর্স যেমন স্টোরেজ, নেটওয়ার্ক, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ইত্যাদি এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন থাকে। কিছু পাবলিক ক্লাউড সিস্টেম তাদের গ্রাহকদের বিনামূল্যে ক্লাউড পরিষেবা গ্রহণ করার অনুমতি দেয়। আবার, কিছু পাবলিক ক্লাউড সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম ব্যবহার করে যেখানে গ্রাহকরা তাদের যতটা ক্লাউড সার্ভিস প্রয়োজন সে অনুযায়ী অর্থ প্রদান করতে পারে। পাবলিক ক্লাউডগুলি একাধিক গ্রাহককে শেয়ার্ড রিসোর্স অফার করে, তাই এটি সাধারণত সবচেয়ে সাশ্রয়ী ধরনের ক্লাউড সিস্টেম। তবে এখানে একই জায়গায় একাধিক গ্রাহক ব্যবহার করার ফলে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।

২) প্রাইভেট ক্লাউড (Private cloud): এটি একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন ক্লাউড, যেখানে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি বা কোম্পানি তাদের নিজেদের ডেটা সংরক্ষনের জন্য ক্লাউড মডেল নিয়ন্ত্রন করে। ব্যবহারকারীরা একটি ব্যক্তিগত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রাইভেট ক্লাউড পরিষেবাগুলো অ্যাক্সেস করে যা অন্যরা পাবলিক নেটওয়ার্ক থেকে অ্যাক্সেস করতে পারে না। এটি ব্যবহারের জন্য নিজস্ব ডেটা সেন্টার স্থাপন করতে হয়, ফলে এতে খরচের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে। যেহেতু প্রাইভেট ক্লাউড ইন্টারনেটে একাধিক গ্রাহকের সাথে শেয়ার করতে হয় না, তাই এখানে পাবলিক ক্লাউডের চেয়ে নিরাপদে ডেটা সংরক্ষণ করা যায়।

৩) হাইব্রিড ক্লাউড (Hybrid cloud): হাইব্রিড ক্লাউড হল পাবলিক এবং প্রাইভেট উভয় ধরনের ক্লাউড ব্যবস্থার সংমিশ্রণ। বিভিন্ন ব্যবসায়িক কাজে কোম্পানিগুলো এই ধরনের ক্লাউড সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে। কেননা এখানে প্রাইভেট ক্লাউডের মত নিরাপত্তার সাথে ডেটা সংরক্ষণ করা যায়, আবার পাবলিক ক্লাউডের কিছু সুবিধা যেমন ফাইল শেয়ারিং, ডেটা আদান-প্রদান ইত্যাদিও গ্রহণ করা সম্ভব। এছাড়া, প্রাইভেট ক্লাউডে ডেটা ধারণক্ষমতা অতিক্রান্ত হয়ে গেলে পাবলিক ক্লাউডের সাহায্যে স্টোরেজ বাড়িয়ে নেওয়া হয়।

৪) কমিউনিটি ক্লাউড (Community cloud): কমিউনিটি ক্লাউড একটি সংস্থার একাধিক মানুষের মাঝে শেয়ার করা হয়। এই সংস্থা বা কমিউনিটির লোকজনই শুধুমাত্র এখানে সংরক্ষিত ডেটা অ্যাক্সেস করার সুবিধা পেয়ে থাকে। সাধারণত কমিউনিটির এক বা একাধিক ব্যক্তি অথবা তৃতীয় কোনো পক্ষ এই ক্লাউড সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন, একটি স্কুলের জন্য ব্যবহৃত কমিউনিটি ক্লাউড শুধুমাত্র ঐ স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরাই ব্যবহার করতে পারবে। এই ক্লাউডের ব্যবহার একটি কমিউনিটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে বলে এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি কম থাকে। তবে পাবলিক ক্লাউডের তুলনায় এতে খরচের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর উদাহরণ

ক্লাউড কম্পিউটিং এর উদাহরণ

ইন্টারনেট এর এই যুগে ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা তাদের নিত্যদিনের বিভিন্ন কাজে ক্লাউডের সুবিধা নিয়ে থাকে। ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তির কিছু উল্লেখ্যযোগ্য উদাহরণ হল-

  • Google Docs, Google Drive, Microsoft 365: ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে Google Docs, Google Drive, Microsoft 365 ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। যেকোনো অবস্থান থেকে যেকোনো সময় সকল প্রকার ডিভাইস থেকে তারা ক্লাউডে সংরক্ষিত প্রেজেন্টেশান অথবা ফাইল অ্যাক্সেস করতে পারেন।
  • YouTube: ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউব এখন জনপ্রিয় ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তি। এখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ভিডিও আপলোড করা হয় যেগুলো এই প্লাটফর্মে সংরক্ষিত থাকে।
  • Facebook: ফেসবুক একটি বিখ্যাত সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম যেখানে কোটি কোটি মানুষের তথ্য পাওয়া যায়। এখানে ব্যবহারকারীরা তাদের নিজেদের মনোভাব, তথ্য, ছবি, ভিডিও অন্যের সাথে শেয়ার করার সুযোগ পায়।
  • Email, Skype, WhatsApp: ইমেইল, স্কাইপ, হোয়াটসঅ্যাপ ক্লাউডের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের যেকোনো ডিভাইস থেকে যেকোনো সময় চাহিদামত তাদের ব্যক্তিগত তথ্য অ্যাক্সেস করার সুবিধা দিয়ে থাকে।
  • Zoom: জুম অডিও এবং ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের জন্য একটি ক্লাউড ভিত্তিক সফটওয়্যার প্লাটফর্ম যা এখানকার অনলাইন মিটিংগুলো রেকর্ড করে এবং সেগুলো ক্লাউডে সংরক্ষণ করে রাখে। ব্যবহারকারীরা যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময় সেগুলো অ্যাক্সেস করতে সক্ষম হয়।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যবহার

ফাইল স্টোরেজঃ

যেকোনো ফাইল বা ডেটা সংরক্ষণ করে রাখার অন্যতম মাধ্যম হল এই ক্লাউড কম্পিউটিং। যেমন গুগল ড্রাইভে ডেটা আপলোড করে রাখা, গুগল ফটোস এ ছবি আপলোড করে রাখা যায়। আবার, ফেসবুক, ইউটিউব এ বিভিন্ন ছবি, ভিডিও আপলোড করে রাখা যায় এবং সহজেই এসব ডেটা অ্যাক্সেস করা সম্ভব।

সফটওয়্যার সার্ভিসঃ

অনেক সময় ক্লাউড কম্পিউটিং এর মধ্যে থাকা সফটওয়্যার আপনার কম্পিউটারে না থাকলেও এটি ব্যবহার করা যায়। এজন্য আপনার কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে সফটওয়্যারটি ইন্সটল করার প্রয়োজন পড়ে না। বরং ক্লাউডের মধ্যে থেকেই তা ব্যবহার করা সম্ভব।

ডেটা অ্যানালাইসিসঃ

বর্তমানে কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক কাজে বড় বড় ডেটা সংগ্রহের প্রয়োজন পড়ে। এসব ডেটা সাধারণত বেশ জটিল এবং আকারে বড় হয়ে থাকে। সাধারণ কোনো ডেটা ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস সহজে এসব বড় ডেটা সংগ্রহ অথবা সংরক্ষণ করতে পারে না। ক্লাউড কম্পিউটিং এই ধরনের ডেটা কম খরচে দক্ষতার সাথে খুব সহজেই সংরক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।

ডেটা ব্যাকআপঃ

ডেটা ব্যাকআপের পুরানো অনেক প্রক্রিয়া আজও ডেটা পুনরুদ্ধারের কাজ করে আসছে। কিন্তু এসব পদ্ধতি সাধারণত ভাইরাস প্রবণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এবং এভাবে ডেটা ব্যাকআপের কারণে অনেক ডেটা হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এই ধরনের সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি দিতে পারে ক্লাউড ভিত্তিক ডেটা ব্যাকআপ সিস্টেম। এখানে আপনি নিশ্চিন্তে আপনার যেকোনো ধরনের ফাইল বা তথ্য ব্যাকআপ করতে পারেন। এটি ব্যবহার করা সহজ এবং সর্বোচ্চ ডেটা নিরাপত্তা প্রদান করে।

সফটওয়্যার টেস্টিং এবং ডেভেলপমেন্টঃ

কোনো সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজে ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন টুল অফার করে যা ডেভেলপমেন্ট এবং নেটওয়ার্ক টেস্টিংকে দ্রুত, সহজ এবং সস্তা করে তুলতে সাহায্য করে। এই ক্লাউড ব্যবহার করে কোনো সফটওয়্যার এর ত্রুটি আছে কিনা তা পরীক্ষা করা যায়।

কমিউনিকেশনঃ

একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার বিভিন্ন মাধ্যম যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, স্কাইপ, ইমেইল ইত্যাদি সবই ক্লাউড কম্পিউটিং সিস্টেমের অবদান। এসব অ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো এবং গ্রহণ করা সকল মেসেজ, ছবি এবং ফাইল আপনার ডিভাইসের সাথে সাথে ক্লাউড সিস্টেমেও সংরক্ষিত হয়ে থাকে। আবার, যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময় এসব ফাইল দেখাও যায়।

সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংঃ

ক্লাউড স্টোরেজের পাশাপাশি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং হলো একটি বহুল ব্যবহৃত ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনি আপনার পরিচিত- অপরিচিত সকলের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবেন। এর মাধ্যমে আপনার নিজেদের বার্তা, মনোভাব এবং তথ্য অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

বিশ্বের শীর্ষ ১০টি ক্লাউড সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান 

১) Amazon Web Services (AWS)

২) Microsoft Azure

৩) Google Cloud

৪) Alibaba Cloud

৫) IBM Cloud

৬) Oracle Cloud

৭) Salesforce

৮) VMWare

৯) Rackspace Cloud

১০) SAP

ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা

  • ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবহার করার ফলে সমস্ত ডেটা স্টোর করার জন্য বড় হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার অথবা বড় কোনো ডেটা সেন্টার এর প্রয়োজন পড়ে না। এতে করে বাড়তি কোনো খরচের সুযোগ থাকে না। ডেটা রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও বিশেষ কোনো খরচের প্রয়োজন নেই, ফলে অপারেটিং খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
  • ক্লাউড স্টোরেজের সাহায্যে যতটা প্রয়োজন ততটা জায়গা ব্যবহার করা যায়, যতটা প্রয়োজন ততটা ডেটা সঞ্চয় করা সম্ভব। এবং আপনি যতটুকু স্টোরেজ ব্যবহার করবেন ঠিক ততটুকুর জন্যই অর্থ প্রদান করতে পারবেন।
  • নিজের চাহিদামত ক্লাউড স্টোরেজের পরিমাণ অথবা আন্যান্য সুযোগ সুবিধা সহজেই বাড়ানো বা কমানো যায়। অর্থাৎ, যদি বেশি স্টোরেজের প্রয়োজন হয় তবে চাইলেই বাড়িয়ে নিতে পারবেন, আবার যদি স্টোরেজ কম লাগলে তাহলে কমিয়ে নিতে পারবেন।
  • শুধুমাত্র ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে গ্রাহকরা বিশ্বের যেকোনো স্থানে বসে যেকোনো ডিভাইসের সাহায্যে ক্লাউড কম্পিউটিং সিস্টেমে সংরক্ষিত ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারেন।
  • ডেটা নিরাপদে সংরক্ষনের জন্য ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। ডেটা ব্যাকআপের সুবিধা থাকায় জমা করে রাখা ডেটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
  • একটি ক্লাউড প্লাটফর্ম থেকে সহজেই অন্য ক্লাউড প্লাটফর্মে পরিবর্তন করা যায়।
  • এছাড়াও, ক্লাউডে সংরক্ষিত ডেটা চাইলে খুব সহজেই একে অপরের সাথে শেয়ার করার সুবিধা থাকে।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর অসুবিধা

  • নিরাপত্তা জনিত ঝুঁকি ক্লাউড কম্পিউটিং সেবায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। ক্লাউড সার্ভার হ্যাকিং করে ব্যবহারকারীদের ডেটা হ্যাকাররা এক্সেস করতে পারে। তবে বড় বড় ক্লাউড কোম্পানিগুলো হ্যাকিং রোধে সর্বদা কাজ করার জন্য দক্ষ জনবল নিয়োগ দিয়ে থাকে।
  • ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা ইন্টারনেটের উপর সর্বদা নির্ভরশীল। অর্থাৎ, ক্লাউড সেবা ব্যবহার করার জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্যই ইন্টারনেট মাধ্যমে সংযুক্ত থাকতে হবে।
  • ডেটা সংরক্ষণ করার জন্য ক্লাউডে পাঠিয়ে দেওয়ার পর তা কোথায় জমা বা প্রসেসিং হচ্ছে এসব জানার কোনো উপায় থাকে না।

শেষকথা 

ক্লাউড কম্পিউটিং সিস্টেমের কল্যাণে যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেটের সাহায্যে যেকোনো ক্লাউড সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের ক্লাউড সেবা গ্রহণ করতে পারেন। ফলে, বিশ্বে দিন দিন ক্লাউডের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। ক্লাউড সিস্টেমের উদ্ভাবন অসংখ্য ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের জটিল কাজের সহজ সমাধান করে দিয়েছে। আজকের তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে তাই ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যবহার আরও বিস্তৃত হয়ে উঠছে। 

সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী 

১) ক্লাউড কম্পিউটিং কি নিরাপদ?

ক্লাউডে সংরক্ষিত ডেটা সাধারণত অন্যান্য ডেটা সেন্টারের তুলনায় বেশি সুরক্ষিত থাকে। ক্লাউড সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠাগুলো সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে বিভিন্ন টুলস এবং অ্যাপ্লিকেশন করে। ফলে, ক্লাউড সার্ভিস রিসোর্সগুলো ব্যবহার করা বেশ নিরাপদ।

২) ক্লাউড ব্যবহারে খরচ কেমন হয়?

ক্লাউডে সাধারণত ব্যবহারের ভিত্তিতে টাকা প্রদান করতে হয়। সেজন্য ক্লাউডের আকার, ক্লাউড প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং ক্লাউডে ব্যবহৃত রিসোর্সের উপর ভিত্তি করে খরচের পরিমাণ পরিবর্তন হয়ে থাকে।

৩) ক্লাউড স্টোরেজ কিভাবে কাজ করে?

আপানি আপনার ফাইল এবং ডেটা কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে না রেখে ক্লাউড স্টোরেজে অত্যন্ত সুরক্ষার সাথে জমা রাখতে পারেন। এজন্য আপনাকে ক্লাউড সার্ভার থেকে ফ্রিতে অথবা টাকার বিনিময়ে স্টোরেজ ভাড়া নিতে হবে। এরপর ইন্টারনেটের সাহায্যে বিভিন্ন ফাইল এবং ডেটা স্টোরেজে আপলোড করে রাখা যাবে। এছাড়া এসব ডেটা অ্যাক্সেস করার সুবিধাও দেয়া হয়।  

৪) আমি কিভাবে একটি ক্লাউড স্ট্রাটেজি গঠন বা ক্লাউড মডেল বাছাই করতে পারি?

ক্লাউড স্ট্রাটেজি ডেভেলপের জন্য শুরুতেই আপনাকে আপনার প্রযুক্তিগত এবং ব্যবসায়িক বা ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যগুলোর রূপরেখা তৈরি করে নিতে হবে। প্রয়োজনগুলি শনাক্ত করার পর আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার ক্লাউড স্ট্রাটেজিতে পাবলিক, প্রাইভেট বা হাইব্রিড কোন ধরনের ক্লাউড মডেল অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজন হতে পারে।

 

রিলেটেড আর্টিকেল গুলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button