ইংরেজি ভাষার সাথে পরিচিত নয় এমন মানুষ সারা পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে কি না তা বলা মুশকিল। সকলে ভাষাটি না পারলেও এই ভাষাটির নাম পৃথিবীর প্রায় সকল মানুষই একবার হলেও শুনেছে। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, কেউ যদি এই ভাষাটি না জানে তার যেন সমস্যার শেষ নেই। আর সেজন্যই এই লেখাটিতে বর্ণনা করা হয়েছে কিভাবে তুলনামূলক সহজে শিখতে পারবেন ইংরেজি। ইংরেজি শেখার উপায় জানতে এসে ইংরেজি ভাষার ইতিহাস পড়তে হলে আপনাদের ধৈর্য হারিয়ে যেতে পারে। তাই অল্প কথায় বলে রাখি, ইংরেজি ভাষাটির মূলত পূর্ব জার্মানিতে জন্ম হয়ে তা বিস্তার লাভ করে গ্রেট ব্রিটেন অর্থাৎ যুক্তরাজ্যে। তবে তখনকার পুরোনো সেই ইংরেজির সাথে বর্তমান ইংরেজির আকাশ পাতাল তফাৎ রয়েছে। ভাইকিংদের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে কালের প্রবাহে ইংরেজি ভাষা তার নানা যুগ পেরিয়ে বর্তমান ইংরেজির রূপ নিয়েছে। ইংরেজদের হাত ধরে তা ছড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা মহাদেশ, ভারতীয় উপমহাদেশসহ সারাবিশ্বে।
যাই হোক আর কথা না বাড়িয়ে চলুন তবে আজকে জেনে নেয়া যাক ইংরেজি শেখার সহজ উপায় সম্পর্কে।
সূচিপত্রঃ
ইংরেজি শেখার গুরুত্ব
ইংরেজি শেখার গুরুত্ব ঠিক লিখে শেষ করা যাবে না। আগেই বলেছি, বর্তমান পৃথিবীতে যে ইংরেজি ভাষা প্রচলিত তা এসেছে মূলত ব্রিটিশ বা ইংরেজদের হাত ধরে। একসময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্য সারাবিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে ছিলো। যার ফলে সারা বিশ্বেই ইংরেজি ছড়িয়ে পড়েছে। আর ইংরেজি ভাষায় দাপ্তরিক কাজ করা সহজ হওয়ার কারণে অনেক দেশেই অনেক স্থানীয় ভাষা থাকা সত্ত্বেও দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ইংরেজি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। এমনকি বাংলাদেশেও বাংলার পাশাপাশি অফিস-আদালতে সমান তালেই ইংরেজি ব্যবহৃত হয়। তাই যেকোনো চাকরি করতে গেলে ইংরেজি না জানা থাকে অনেক পিছিয়ে যাবেন।
এতো গেল শুধু দেশের কথা। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীর অপর নাম হলো ‘বিশ্বগ্রাম’। তাই আর্ন্তজাতিক অঙ্গন নিয়েও সমান গুরুত্বের সাথে ভাবতে হবে। ইংরেজি হলো আন্তর্জাতিক ভাষা, আন্তর্জাতিক প্রায় সকল যোগাযোগ এই ভাষাতেই হয়ে থাকে। তাই দেশে যদি আপনি চাকরি পেয়েও যান অনেক ক্ষেত্রেই আপনাকে বিদেশী গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করার প্রয়োজন পরতে পারে। তখন নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। চাকরী ছাড়াও অর্থ উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) তো ইংরেজি জ্ঞান ব্যতীত পুরোপুরি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এছাড়াও নতুন নতুন জিনিস শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে অথবা নতুন দেশ ঘুরতে চাইলে ইংরেজি ভাষার কোনো বিকল্পই নেই। তাই বর্তমান পৃথিবীতে সকল মানুষকেই ইংরেজি ভাষা শিখতে হবে। এই ভাষাতে যত পারদর্শী হবেন সাফল্যের পথ ততটাই সহজ হবে।
নিজেকে ইংরেজিতে পারদর্শী করে তোলার কার্যকরী উপায়সমূহ
প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইংরেজি শেখা
সত্যি বলতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইংরেজি শেখার তাৎপর্য সম্পূর্ণ আলাদা। প্রাতিষ্ঠানিক ইংরেজি বলতে আমরা সাধারণত স্কুল-কলেজে যেই ইংরেজি শিখি তা বোঝানো হয়েছে। কারণ ইংরেজি ভাষা শুধু শিখলেই চলবে না, তা প্রমাণ করতে একটি ডিগ্রির প্রয়োজন। এছাড়াও ভাষা শেখার প্রতি নিয়মিত লেগে থাকতে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মকানুন অপরিহার্য। তাই ইংরেজি ভাষার ভিত্তিটুকুর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ওপরেই নির্ভর করতে হবে। গ্রামার (Grammar) অর্থাৎ ইংরেজি ভাষার নিয়ম-কানুনগুলো শিখতে হবে। তার মাঝে প্রথমেই রয়েছে Noun, Pronoun, Verb, Adjective, Adverb সহ মোট ৮ টি Parts Of speech এর একদম খুঁটিনাটি। এছাড়াও বাক্য গঠন, ক্রিয়ার কাল, যতিচিহ্নের ব্যবহার সম্পর্কিত নিয়মগুলোও আয়ত্বে থাকা আবশ্যক। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইংরেজির এ ভিত্তিটুকু শক্তিশালী হলে পরবর্তীতে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশের বিশাল সংখ্যক নারী-পুরুষ শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার উপর ভর করে নিজের ইংরেজির ভিত্তি গড়ে নিতে পারে না। এটি অস্বাভাবিক কিছু নয় বরং খুবই স্বাভাবিক। গ্রামে-গঞ্জে এমনকি শহরেও এখনো ইংরেজি বিষয়টিকে অনেকেই ভয়ের চোখে দেখে। আর ঠিক সে ভয় দূর করার জন্যই এই লেখাটি। যাতে কোনো ভয় থাকলে তা কাটিয়ে আপনারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরেও নিজের চেষ্টাতে ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী হয়ে উঠতে পারেন।
ইংরেজির ভয় দূর করা
ইংরেজি ভয় যেন বাংলাদেশী মানুষের অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য। যদিও এজন্য তাদের খুব দোষ দেওয়াও যায় না। কিন্তু ইংরেজি শিখতে হলে অবশ্যই এবং অবশ্যই এই ভয়টুকু দূর করতে হবে। এর কোনো বিকল্পই নেই। ইংরেজিকে একটি ভীষণ কঠিন বিষয় হিসেবে না নিয়ে একটি ভাষা হিসেবে নিতে হবে। বাংলা যেমন একটি ভাষা; ইংরেজি ও তেমনই একটি ভাষা। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, বাংলা ভাষা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি কঠিন। যেমন, ইংরেজির একটিমাত্র অক্ষর S এর বিপরীতে বাংলাতে রয়েছে তিনটি অক্ষর। স, শ ও ষ। এছাড়াও বাংলা ভাষার গঠন, নিয়ম কানুন, ভাব প্রকাশের জটিলতা তুলনাহীন। আমরা বাঙালী বলে হয়তো আমাদের কাছে এমনটি লাগে না, কিন্তু ভিন্নভাষী যে কারো কাছে ইংরেজী ভাষার চেয়ে বাংলা অনেক অনেক বেশি কঠিন এবং শিখতে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়।
তাহলে আমরা বাঙালীরা যারা শৈশবকাল থেকেই এত কঠিন একটি ভাষায় কথা বলে আসছি, তাদের আসলে ইংরেজি ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। প্রয়োজন শুধু সঠিক দিকনির্দেশনা ও পরিশ্রমের। এছাড়াও বাংলাদেশী অনেকেই হয়তো হীনমন্যতায় ভোগে যে হয়তো আমরাই ইংরেজিতে পিছিয়ে আছি। বাস্তবে কিন্তু তা নয়। নিজের মাতৃভাষার বাইরে আরেকটি ভাষা শেখা শুরু করলে সব মানুষকেই বেশ কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এমনকি শুধু এশিয়ান কিংবা আফ্রিকান নয়, এমনকি ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরাও অনেক সময় ইংরেজি শিখতে হিমশিম খায়। তাই ইংরেজি শেখার প্রথম ধাপ হলো ইংরেজিকে ভয় না পেয়ে সাধারন একটি ভাষা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি এটা জানতে হবে যে যেসব সমস্যার মুখোমুখি আপনি হচ্ছেন ঠিক একই সমস্যা হয়তো কোন না কোন আফ্রিকান বা ইউরোপিয়ানও মোকাবেলা করছে। তাই অবশ্যই মানসিক হীনমন্যতা সরিয়ে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।
প্রচুর ইংরেজি শোনা
ইংরেজি শোনা। সত্যি বলতে এটিই ইংরেজি শেখার সবচেয়ে ভাল মাধ্যম বলা চলে। আপনি যদি বাচ্চাদের কখনো লক্ষ্য করে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই জানবেন যে ছোট বাচ্চারা কিছু পড়তেও পারে না বা লিখতে পারে না, তারা শুধু শোনে প্রচুর শোনে; টানা ৬-৭ মাস কিংবা বছরেরও বেশি সময় ধরে বাচ্চা শুধু শুনেই যায়। এরপর ধীরে ধীরে তাদের দুর্বোধ্য শব্দগুলো বোধগম্য হতে শুরু করে। আর এই পুরো প্রক্রিয়াটাই হয় শোনার মাধ্যমে। সেটা যেই ভাষাই হোক না কেন, যত কঠিন ভাষাই হোক না কেন বাচ্চার মুখে কিন্তু ঠিকই বুলি ফোটে। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে, কোনো কোনো বাচ্চা অনেক আগে কথা বললেও অনেক বাচ্চাই দেরিতে কথা বলে। এটির সবচেয়ে বড় কারণ হলো চারপাশে কথার অভাব। বাচ্চা যতো বেশি কথার মাঝে থাকবে সে ততোই দ্রুত ভাষা শিখতে পারবে।
মানুষের এভাবে কোনো নিয়ম কানুন না পড়ে শুধু শুনে শুনে ভাষা শেখার ক্ষমতাটা বয়সের সাথে সাথে কমে যায়। এটি সবচেয়ে বেশি থাকে ৫ বছরের আগ অবধি। মানব মস্তিষ্ক তখনো পরিপক্ক হতে থাকে আর তাই ওই বয়সে বাচ্চারা এত দ্রুত কথা শেখে। কিন্তু প্রাপ্ত বয়ষ্ক মানুষের জন্য শুধু শোনার মাধ্যমে ভাষা শেখাটা বেশ কঠিন ও সময় সাপেক্ষ। এজন্যই আমরা নানাভাবে প্রক্রিয়াটি দ্রুত করার চেষ্টা করি, নিয়ম কানুন শিখি, যে ভাষা শিখতে চাই সে ভাষার লেখা পড়ি ও সেই ভাষাতে কথা বলার চেষ্টা করি। কিন্তু শুধু শুনে ভাষা শেখার ক্ষমতাটা বয়স হলেও পুরোপুরি হারিয়ে যায় না। ধীরে হলেও শুধু শোনার মাধ্যমে প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষের ভাষা শিখে ফেলার অনেক উদাহরণ আছে। এমন অনেকে আছেন যারা নিয়ম জানেন না কিন্তু ভাষাটা ঠিকই বলতে পারেন। আর তাই ইংরেজি দ্রুতগতিতে শিখতে চাইলে ইংরেজি শোনার কোন বিকল্প নেই। তাই দিনের মধ্যে যতোটুকু সময় পাবেন চেষ্টা করবেন ইংরেজি শুনতে। সেজন্য যা যা করতে পারেনঃ
১) ইংরেজি গান শোনাঃ
ইংরেজি গান আপনার ইংরেজি দ্রুত শুনে বুঝতে পারার ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে তুলবে। কারণ ইংরেজি গান গুলোতে অনেকসময় অনেক দ্রুত কথা বলা হয়ে থাকে। প্রথম প্রথম শুনে কিছুই না বুঝতে পারলে লিরিকাল ভিডিও (Lyrical Video) দেখতে পারেন। আশা করি ধীরে ধীরে শুধু শুনেই গানের কথা বুঝতে পারবেন।
২) ইংরেজি সিনেমা দেখাঃ
ইংরেজি সিনেমা দেখাও একটা দারুণ পন্থা। ইংরেজি সিনেমাতে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা পুরোপুরি ইংরেজিতে কথা বলে। নিয়মিত টানা দুই-তিন ঘন্টা ইংরেজি শুনে শুনে বোঝার চেষ্টা করলে অবশ্যই আপনার ইংরেজি দক্ষতা অনেকটাই বাড়বে। সাথে বিনোদনের প্রয়োজনটাও মিটে যাবে অনেকটাই।
৩) ইংরেজি বক্তৃতা শোনাঃ
অনেকেই গান শোনা বা সিনেমা দেখা এসব পছন্দ করেন না বা সময়ের অপচয় মনে করেন। তাদের জন্য আরেকটি উপায় রয়েছে। সেটি হলো ইংরেজি টকশো (Talk Show) শোনা। টকশো বাদেও ইংরেজি বিতর্ক কিংবা বিখ্যাত ভাষণসমূহ শুনলেও ইংরেজি দক্ষতা অনেকটা বেড়ে যায় এবং সাথে জ্ঞানও অর্জন হয়। এছাড়াও এর সাহায্যে আপনি নেটিভ প্রোনানসিয়েশন (Native Pronunciation) অর্থাৎ তাদের উচ্চারণটা রপ্ত করতে পারবেন। যেমনঃ আমেরিকান দুই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প (সাবেক) ও জো বাইডেনের বিতর্ক দেখলে আমেরিকান উচ্চারণ সম্পর্কে ধারণা আসবে। ঠিক তেমনি ব্রিটিশ সংসদের বিতর্ক দেখলে ইংরেজদের উচ্চারণ সম্পর্কে ধারণা আসবে। এই কথাগুলো আমেরিকান ও ব্রিটিশ নাটক-সিনেমার ক্ষেত্রেও প্রায় একই রকম।
ইংরেজি পড়া
শোনার পরে সবচেয়ে ভাল উপায় হলো প্রচুর পরিমাণে ইংরেজি পড়া। সেটা হতে পারে যেকোনো কিছু। বই থেকে শুরু করে হয়তো হালকা ম্যাগাজিন অথবা পত্র-পত্রিকা। যাই মনে হবে পড়ার মতো, পড়ে ফেলবেন। এভাবে যত পড়বেন তত আপনার ইংরেজি বুঝতে সুবিধা হবে। কারণ যত বেশি পড়বেন আপনি তত নতুন শব্দের সাথে পরিচিত হবেন। ফলে ইংরেজি বুঝতেও অনেক সুবিধা হবে। তবে যেটাই পড়বেন মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। ইংরেজি পড়া শুরু করার জন্য কয়েকটি পন্থা অনুসরণ করতে পারেন।
১) পত্র-পত্রিকা দিয়ে পড়া শুরু করাঃ
পত্র-পত্রিকার সাহায্যে ইংরেজি পড়া শুরু করাটা নতুনদের জন্য সবচেয়ে সহজ উপায়। কারণ পত্রিকাতে খুব কঠিন ইংরেজি লেখা হয় না আবার একদম সহজ ইংরেজি ও লেখা হয় না। পত্রিকার ভাষা হলো ইংরেজিতে যাকে বলে স্ট্যান্ডার্ড (Standard)। আর তাই আপনি কঠিন কিছু দিয়ে শুরু না করে পত্রিকা পড়ার মাধ্যমেই নিয়মিত ইংরেজি পড়ার শুরুটা করতে পারেন। সাথে উপরি হিসেবে জানতে পারবেন দেশ-বিদেশের নানা খবর এবং জ্ঞান ভান্ডার সমৃদ্ধ হবে।
২) ইংরেজি বই পড়াঃ
ইংরেজি বই পড়া বাদ দিয়ে ইংরেজি ভাষাটা আয়ত্ব করার কথা চিন্তাও করা যায় না। আপনি প্রথমে পত্রিকা দিয়ে শুরু করতেই পারেন। কিন্তু ইংরেজি ভাষার আরো গভীর স্তরে যেতে হলে ইংরেজি সাহিত্যের কোন বিকল্প নেই। সহজ ভাষায় লেখা ইংরেজি বই আছে সুতরাং সব বই খুব কঠিন ইংরেজিতে লেখা এটা ভেবে ভয় পাওয়ার কোন মানে নেই। যেমনঃ ‘Treasure Islands’, ‘Harry Potter’ সিরিজ। প্রথমে হয়তো মনে হবে একটি বাক্যের অনেক কিছুই বুঝতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে কিছু অজানা শব্দের মানে অভিধান থেকে অথবা ইন্টারনেট ব্রাউজ করে খুঁজে নিতে পারেন। ধীরে ধীরে সহজ বই থেকে নেটিভ (Native) বা স্থানীয় ইংরেজিতে লেখা বই পড়ার অভ্যাসও তৈরি হবে।
৩) শব্দ নয় বাক্যের মানে বোঝাঃ
ইংরেজি পড়ার কৌশলটা হলো টানা পড়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবেঃ
- প্রতিটি শব্দের মানে বের করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে বসলে চলবে না।
- শুধু শব্দ নয় বরং বাক্যের মানে বুঝতে হবে।
প্রথমত, যদি প্রতি শব্দের পর শব্দ অর্থ বের করে পরতে থাকেন তাহলে কিন্তু অল্পতেই হতাশ ও বিরক্ত হয়ে যাবেন। একদম নতুন শব্দগুলোর অর্থ দেখে নিতে পারেন অভিধান থেকে। কিন্তু ক্রমাগত পড়তে থাকার চেষ্টা করতে হবে। একটি বাক্য আলাদা করে না বুঝলেও পুরো প্যারাটা পড়া শেষে বুঝতে পারবেন আপনি মানে ঠিকই ধরতে পেরেছেন। দ্বিতীয়ত, অনেকে একটি শব্দের শুধুমাত্র একটি অর্থ জেনেই সেটিকে এক মাত্র অর্থ মনে করে মাথার মধ্যে গেঁথে ফেলে। এমনটি করা যাবে না। বাক্যভেদে একটি শব্দের অনেক মানে হতে পারে। শব্দের অর্থ অনেকটাই নির্ভর করে বাক্যের বা বাক্যংশের ওপর। যেমন ধরা যাক, ‘We played football yesterday’। এই বাক্যের অর্থ ‘আমরা গতকাল ফুটবল খেলেছিলাম’। অপরদিকে ‘He/she played me’ এর অর্থ ‘সে আমার সাথে প্রতারণা করেছে’। খেয়াল করুন, এখানে একই শব্দ ‘played’ খেলা এবং প্রতারণা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা পুরোপুরি বাক্যের ওপর নির্ভরশীল।
৪) নতুন শব্দ টুকে রাখাঃ
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো নতুন শব্দসমূহ টুকে রাখা। যেহেতু পত্র-পত্রিকা অথবা বই পড়তে গেলে নিত্য-নতুন শব্দাবলী জানতে পারবেন তাই সেগুলো সময় করে টুকে রাখলেই ভালো এবং কিছুদিন পর পর সেই শব্দগুলোর ওপর চোখ বুলিয়ে নেবেন। ফলে শব্দগুলো ধীরে ধীরে আপনার মাথায় পাকাপোক্তভাবে রয়ে যাবে এবং আপনার ভোকাবুলারি (Vocabulary) অর্থাৎ শব্দভান্ডারের অনেক উন্নতি হবে। তবে শব্দ টুকে রাখার সময় তার পাশাপাশি শব্দটি কোন parts of speech এবং শব্দটির আর কী কী সম্ভাব্য মানে হতে পারে তাও লিখে রাখা ভা্লো।
ইংরেজি লেখা
ইংরেজি লেখা হলো ভাষাটিকে আপনি আসলেই শিখতে পারছেন কি না তার অন্যতম প্রমাণ। পূর্বেই বলেছি ইংরেজিকে একটি ভাষা হিসেবে নিতে হবে। অর্থাৎ আপনি যেমন বাংলা মুখস্থ না করেই টানা নিজের মনের মতো লিখে যেতে পারেন, ইংরেজিতেও ঠিক তেমনি হতে হবে। প্রথমে নিজের মন মতো লিখতে পারবেন না, বার বার আটকে যাবেন তা স্বাভাবিক। কিন্তু চেষ্টা করার মাধ্যমেই আপনার লেখার দক্ষতা ও শব্দভান্ডার বৃদ্ধি পাবে। ধীরে ধীরে বাধাহীনভাবে লিখতেও পারবেন। এটিকে বলে ফ্রী হ্যান্ড রাইটিং (Free Hand Writing)। আমাদের দেশের বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক বয়স অবধি প্যারাগ্রাফ (Paragraph), কম্পোজিশন (Composition) মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় উগড়ে দিয়ে আসে। ফলস্বরুপ তারা কিন্তু আসলে কিছু শিখতে পারে না। কারণ একটা ভাষার নিয়ম হয়তো আপনি মুখস্থ করতে পারবেন, কিন্তু ভাষাটাকে মুখস্থ করতে পারবেন না। তাই ইংরেজি জানতে হলে, লিখতে হবে। তাই প্রচুর ইংরেজি লিখুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখুন, নিজের বাসায় খাতাতে লিখুন। ভুল হবেই, কিন্তু তাতে থেমে গেলে চলবে না। নিজের মনের কথা যতো ভালোভাবে ইংরেজিতে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন, বুঝতে পারবেন আপনার ইংরেজি ততোটাই ভাল হচ্ছে।
ইংরেজি বলা
যেকোনো ভাষাকে রপ্ত করার সর্বশেষ ধাপ বলা চলে এটিকে। আপনি যদি একটি ভাষা ভালোভাবে বলতে পারেন তার মানে ইতোমধ্যে আপনি ভাষাটি বুঝতে পারছেন। কিন্তু আজ অবধি ইংরেজিতে মানুষের দুর্বলতা বিষয়ে সবচেয়ে বেশি যা শুনেছেন সেটি সম্ভবত, “আমি বুঝি, কিন্তু বলতে পারি না‘। এই বলতে পারাটাই ভাষা রপ্ত করার সর্বশেষ ধাপ বলা চলে। তাই মানুষ মুখে ইংরেজি বলতে গেলে সাধারণত যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয় সেগুলো এবং তার সমাধানগুলো নিচে আলোচনা করছি।
১) ইংরেজি দ্রুত মাথায় না আসাঃ
যেকোনো কিছু লেখার চেয়ে বলার প্রক্রিয়াটি অনেক দ্রুত। তাই স্বভাবতই ইংরেজি বলতে গেলে আপনাকে ভাবতেও হবে অনেক দ্রুত। অর্থাৎ লেখার সময় আপনি যেমন চাইলেই কিছুটা সময় নিয়ে ভেবে ভেবে লিখতে পারবেন। কিন্তু বলার সময় ব্যাপারটা সেরকম নয়। বলার সময় বারবার থেমে ভেবে ভেবে বললে কথোপকথন তার মর্যাদা হারাবে।
২) উচ্চারণজনিত সমস্যাঃ
ভিন্ন একটি ভাষা বলতে গেলে শুধু ভাষাটি জানলেই চলবে না। এর উচ্চারণও জানতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্বের অনেক অংশের মানুষ ইংরেজি উচ্চারণ নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়ে। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, কোনো ভাষায় কোনো উচ্চারণ বা তার কাছাকাছি কোনো উচ্চারণ না থাকলে সেই ভাষার মানুষ অন্য ভাষার সেই উচ্চারণ বলা তো দূর, অনেক সময় শুনতেও পায় না। যেমন ধরা যাক, একজন জাপানীজ ব্যক্তি বয়স্ক অবস্থায় ইংরেজি শিখতে গেলে সে R বর্ণটি প্রথম দিকে শুনতেই পায় না। তাদের কানে এটি ধরা পরে না। তারা সেটি শোনে L এর মতো। কারণ তারা ছোট বেলা থেকে R উচ্চারণের মতো কোনো উচ্চারণই শোনে নি। ব্যাপারটি অবাক হলেও সত্যি। আবার এমন একজন জাপানীজ যিনি ছোটবেলা থেকে ইংরেজ ভাষাভাষীদের মাঝে বড় হয়েছে সে কিন্তু ঠিকই R শুনতে পায়। অর্থাৎ ব্যাপারটি জাতিগত নয় বরং অভ্যাসগত। এমনকি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, একেকটি শব্দ শুনলে মানব মস্তিষ্কের একেক অংশ উদ্দীপিত হয়। একজন জাপানি মানুষ যখন কথার মাঝে R বর্ণটি শোনে তখন তার মস্তিষ্কে L শুনলে যেই অংশ উদ্দীপিত হতো সেই অংশ উদ্দীপিত হয়। এদিক দিয়ে বাঙালীদের বেশ ভাগ্যবান বলা যায়। কারণ বাংলা ভাষার উচ্চারণ এমনিতেই অনেক জটিল। তাই চেষ্টা করলে আমাদের ইংরেজি ভাষার সকল উচ্চারণ আয়ত্বে আনতে আসলে খুব বেগ পেতে হয় না।
৩) ভীতি ও জড়তাঃ
ইংরেজি বলার সময় অন্যতম সমস্যা হলো ভীতি ও জড়তা। পূর্বেই বলেছি, বাংলাদেশের অনেক মানুষেরই ইংরেজি ভীতি আছে। আর কোনো কিছু বলার সময় ভয় পেলে খুব স্বাভাবিকভাবেই কথা আটকে যায়। এছাড়াও কারো কারো জড়তার সমস্যা রয়েছে, যা ইংরেজি বলতে গেলে আরো বেশি দেখা দেয়। অনেকেই এক শব্দ বলতে গিয়ে আরেক শব্দ বলেন অথবা দুর্বোধ্য শব্দ উচ্চারণ করেন।
সমাধানঃ
ইংরেজি বলতে গেলে প্রধান যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হতে হয় তা তো বিস্তারিত আলোচনা করা হলোই। চলুন জানা যাক এর প্রতিকার। সত্যি বলতে এর একমাত্র প্রতিকার হলো প্রচুর পরিমাণে ইংরেজি বলা। প্রথমত ইংরেজি দ্রুত না বলতে পারার যে সমস্যা সেটি অনভ্যাসের জন্যই হয়ে থাকে। তাই প্রচুর পরিমাণে ইংরেজি বলতে হবে। তাহলে পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে চিন্তা করতে পারবেন আবার সেই চিন্তা অনুযায়ী মুখে বলতেও পারবেন। একইভাবে ইংরেজি ভীতি ও জড়তা কাটানোরও একমাত্র উপায় ইংরেজি নিয়মিত বলা। যদিও এই সমাধানটির নিজেরই একটি সমস্যা আছে। সেটি হলো ইংরেজি চর্চার জন্য সঙ্গীর অভাব। অনেকেই প্রথমে আগ্রহী হলেও দেখা যায় বেশিরভাগ মানুষই অভ্যাসটি ধরে রাখতে পারে না। আর নিয়মিত চর্চা করতে না পারলে আসলে খুব বেশি লাভবান হবেন না এতে। এছাড়াও প্রথমেই আপনার উচ্চারণের দিকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই। মোটামুটি সঠিক উচ্চারণে ইংরেজি বলতে পারলেই হলো। তবে ভাল উচ্চারণের জন্য ইউটিউবে ব্রিটিশ অথবা আমেরিকান উচ্চারণ সার্চ করে শুনতে পারেন। প্রয়োজন বোধে চর্চাও করতে পারেন। এক্ষেত্রে ইউটিউবের ‘Collins A-Z’ নামক চ্যানেলটির সাহায্য নিতে পারেন।
আমেরিকান ইংরেজি নাকি ব্রিটিশ ইংরেজি?
এই বিতর্কের কোন শেষ নেই। প্রথমত ইংরেজি ভাষা ছড়িয়েছেই ইংরেজদের মাধ্যমে। এমনকি আমেরিকাতেও ইংরেজির প্রচলন ইংরেজরাই করেছে। সে যাই হোক, আমেরিকান এবং ইংরেজদের মূল পার্থক্য হলো ইংরেজির প্রয়োগ ও উচ্চারণে। আমেরিকানরা নিয়মকে একটু কম তোয়াক্কা করে, তাদের উচ্চারণটাও ইংরেজদের তুলনায় বেশ অন্যরকম। অন্যদিকে ইংরেজরা সবসময়ই নিয়ম অর্থাৎ গ্রামার মেনে কথা বলে। ইংরেজ উচ্চারণও একটু কঠিন। তবে বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে দুই ধরনের ইংরেজিরই কদর রয়েছে। পূর্বে ব্রিটিশ ইংরেজির প্রভাব একটু বেশি থাকলেও রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে আমেরিকার প্রচন্ড প্রভাবের কারণে আমেরিকান ইংরেজিও এখন সমাদৃত। তাই এটি পুরোপুরি নির্ভর করবে আপনার উপর, যে আপনি কোন ইংরেজি শিখবেন। আপনি যদি বাইরের দেশে যেতে চান তাহলে সেখানে কোন ইংরেজি বেশি চলে তা জানুন, সেই অনুযায়ী ইংরেজি শেখার চেষ্টা করুন।
অনলাইনে ইংরেজি শেখা
ইংরেজি শেখার আরেকটি সহজ মাধ্যম হলো অনলাইনে ইংরেজি শেখা। ইংরেজি শেখার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার গুরুত্ব আগেই উল্লেখ করেছি। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে ইংরেজি সঠিকভাবে শিখতে হলে কেন একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকা উচিত। সেই প্রতিষ্ঠানটি এমনকি হতে পারে একটি অনলাইন প্রতিষ্ঠান। কারণ বর্তমানে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাটাই অনেকটা অনলাইন নির্ভর হয়ে গেছে। তাই অনলাইনে ইংরেজি শিখতেও বাঁধা নেই। এছাড়াও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করার মাধ্যমে অনলাইনে ইংরেজি শিখতে পারবেন।
ইংরেজি শেখার সাইটসমূহ
বর্তমানে ইন্টারনেটে ইংরেজি শেখার জন্য ভালো মানের মোবাইল অ্যাপস এবং ওয়েবসাইট রয়েছে। কোনোটিতে টাকার বিনিময়ে শিখতে হয়, কোনোটিতে বিনামূল্যে শেখা যায়, কিন্তু সার্টিফিকেটের জন্য অর্থ পরিশোধ করতে হয় আবার কোনোটিতে পুরোপুরি বিনামূল্যেও ইংরেজি শেখানো হয়। আপনি যদি প্রথমেই টাকা খরচ করতে না চান তাহলে এমন ফ্রী একটি সাইট থেকে ইংরেজি শেখা শুরু করতে পারেন। কিছু সাইটের নাম দিয়ে দিচ্ছিঃ
১) khanacademy.org (এটি বেসরকারি একটি সংস্থা যা সারা বিশ্বে অনলাইনে শিক্ষা দান করে থাকে)
২) bbc.co.uk/learningenglish (এটি বিশ্ববিখ্যাত সংবাদ প্রতিষ্ঠান BBC এর বিনামূল্যে ইংরেজি শেখানোর ওয়েবসাইট)
৩) learnenglish.britishcouncil.org (এটি যুক্তরাজ্যের বিশ্ব নন্দিত প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ কাউন্সিলের বিনামূল্যে ইংরেজি শেখানোর ওয়েবসাইট)
এছাড়া এগুলো ছাড়াও আরো অসংখ্য ওয়েবসাইট ও অ্যাপ রয়েছে। এবং এই প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটেরও নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ রয়েছে। এগুলো ব্যবহার করে আপনি বেশ উঁচু মানের ইংরেজি শিখতে পারবেন। উপরে বর্ণিত ৪ টি ধাপ অর্থাৎ ইংরেজি শোনা, পড়া, লেখা ও বলা প্রত্যেকটিরই সুযোগ থাকছে এসব সাইটে। এছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন ক্লাস রয়েছে। কোর্স অনুযায়ী ক্লাসগুলো করলে আপনি অনেকটাই প্রাতিষ্ঠানিক ইংরেজি শেখার আমেজ পাবেন। আগে থেকে রেকর্ড করা ভিডিও দেখে শিখতে পারবেন। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান সরাসরি ক্লাস নেওয়ার মাধ্যমেও শিখিয়ে থাকে।
শেষ কথা
বর্তমান এই পৃথিবীতে চলতে হলে আসলেই ইংরেজির কোন বিকল্প নেই। আর অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির এই দুনিয়ায় ইংরেজি শেখাটাও তেমন কঠিন কিছু নয়। অন্তত কাজ চালানোর মতো ইংরেজি জানা না থাকলে পদে পদে যতটুকু নাকাল হতে হবে তার তুলনায় ইংরেজি ভাষাটা শিখে নেওয়ার কষ্ট নেহায়েতই কম। তাই আসুন অবহেলায় সময় নষ্ট না করে আজই ইংরেজি শেখা শুরু করি। এতে সমৃদ্ধ হবে আপনার মস্তিষ্ক আর পাশাপাশি ইংরেজি ভাষা ব্যবহারের সুবিধাগুলো তো থাকছেই।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
১) ইংরেজি শিখতে কতটুকু সময় লাগা উচিত?
উত্তরঃ এটা পুরোপুরি নির্ভর করবে একজন মানুষ দৈনিক কী পরিমাণ সময় ইংরেজি শেখার জন্য ব্যয় করছে তার ওপর। এছাড়াও সে কোন পদ্ধতিতে শিখছে সেটাও অনেক বড় একটি বিষয়। শুধু মুখস্থবিদ্যা প্রয়োগ করলে অনেক বেশি সময় লেগে যাবে। ভাষা শিখতে হলে ভাষাটিকে আত্মস্থ করতে হবে।
২) দ্রত ইংরেজি শেখার জন্য কী করা উচিত?
উত্তরঃ ইংরেজি শেখার জন্য কী করা উচিত তা লেখাটিতেই বিস্তারিত বর্ণনা করা আছে। আর দ্রুত শেখার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রয়োজনে বেশি পরিমাণে ইংরেজি শুনতে, পড়তে, লিখতে ও বলার চর্চার করতে হবে। ইংরেজিকে একটি বিষয় হিসেবে না নিয়ে নিজের দৈনিক জীবনে ব্যবহার করুন। অনেক দ্রুত আয়ত্বে আসবে।
৩) কোনটিতে বেশি জোর দেবো? গ্রামার নাকি ভোকাবুলারি?
উত্তরঃ দুটিতেই জোর দিতে হবে। গ্রামার বা নিয়ম হলো ইংরেজির ভিত্তি। ভোকাবুলারি হলো দালান। ভিত্তি শক্ত না হলে দালান তৈরি করতে পারবেন না। আবার শুধু ভিত্তি বানিয়ে রাখলে তাতে দালানের কাজ হবে না।
৪) কেউ কেউ অন্যদের তুলনায় অনেক দ্রুত ইংরেজি শিখে ফেলে। এর কারণ কী?
উত্তরঃ এর কারণ তারা ছোটবেলা থেকে ইংরেজির সংস্পর্শে ছিল। ভাষা শেখার সাথে ভাষা শোনার কতো গভীর সম্পর্ক আছে তা লেখাতেই উল্লেখ করেছি। যেসব বাচ্চা ছোটবেলা থেকেই ইংরেজি শোনে তারা স্বভাবতই অন্যদের তুলনায় ইংরেজিতে দক্ষ হয়।
৫) আমার ইংরেজি মুখে বলে চর্চা করার মতো সঙ্গী নেই। আমি কী করতে পারি?
উত্তরঃ অধিকাংশ বাঙ্গালি হয়তো এই সমস্যাটির সম্মুখীন হয়। এক্ষেত্রে একজন সঙ্গী খুঁজে নিতে আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। সামনা সামনি না হলেও অনলাইনে। যদি না পারেন সেক্ষেত্রে আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজের সাথেও কথা বলতে পারেন।
৬) আমার কর্মস্থলে সকলে ইংরেজি পারে, আমি পারি না যা আমার কাছে খুব লজ্জাজনক। লজ্জা কাটাতে কী করতে পারি?
উত্তরঃ ইংরেজি নিয়ে ভীতি ও লজ্জা সবচেয়ে সাধারণ সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ইংরেজি দ্রুত শেখার জন্য আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে আপনার সহকর্মীদেরই সাহায্য নিন। হ্যাঁ, এটা হাস্যকর শোনালেও তাদের জানা জরুরী যে আপনি চেষ্টা করছেন। যেকোনো ভালো মানুষ অন্তত চেষ্টা করছে এমন একজন মানুষকে নিয়ে হাসি তামাশা করবে না।
৭) ইংরেজি শেখার কি কোন বয়স আছে?
উত্তরঃ না। কোন বাঁধাধরা বয়স নেই। তবে ভাষা শেখার কাজটি যত কম বয়সে করা যায় ততই ভালো। কারণ কম বয়সে মস্তিষ্ক বেশি সতেজ থাকে, দ্রুত শেখা যায়। তবে তার মানে এই নয় যে বয়স হলে কোনো ভাষা শেখা যাবে না।