নতুন ভোটার তালিকায় নিবন্ধনকারী, কিন্তু আইডি কার্ড পাননি তাদের সুবিধার্থে, গত ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অনুবিভাগ অনলাইনে সেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এনআইডি অনুবিভাগ এর মহাপরিচালক “ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম” জানিয়েছেন এখন অনলাইনেই মিলবে জাতীয় পরিচয় পত্র। এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আরও জানান; নিবন্ধিত ভোটারদের জন্য অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, পরিচয় পত্রের অনলাইন কপি ডাউনলোডসহ সর্বমোট ৬ ধরণের গ্রাহকসেবা গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়াও অনলাইনের পাশাপাশি আপনি মোবাইলে এস.এম.এস এর মাধ্যমেও জানতে পারবেন আপনার ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার।
আজকের এই প্রবন্ধটি থেকে আপনারা ধাপে ধাপে জানতে পারবেন অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র চেক, অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড এবং মোবাইলে এস.এম.এস এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার বের করার পদ্ধতি সম্পর্কে। এছাড়াও বোনাস হিসেবে রয়েছে প্রশ্নোত্তর পর্ব, যার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সকল অজানা প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্র তথ্য জানার ২ টি পদ্ধতিঃ
- অনলাইনে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে চেক ও ডাউনলোড।
- মোবাইলে এস.এম.এস এর মাধ্যমে চেক।
প্রথমে আমরা দেখাবো অনলাইন থেকে আপনার আইডি কার্ড সংগ্রহ করার নিয়মঃ
সূচিপত্রঃ
কিভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার তথ্য চেক/যাচাই করবেন?
অনলাইন থেকে আপনার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে হলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুনঃ
ধাপ ১ঃ
অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করতে হলে প্রথমেই আপনার প্রয়োজন পরবে আপনার ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ করার সময় নিচের কাটা অংশ বা স্লিপ, যেটি আপনাকে প্রদান করা হয়েছিলো। এই অংশটুকু প্রথমে আপনার সামনে নিয়ে রাখুন যেটি পরবর্তী ধাপে আপনার প্রয়োজন পরবে।
ধাপ ২ঃ
এরপরে আপনাকে প্রথমে “বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন” এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এরপরে “আপনার ভোটার নিবন্ধন হয়েছে কিন্তু জাতীয় পরিচয় পত্র পাননি” তে ক্লিক করুন।
ধাপ ৩ঃ
এবার “ভোটার তথ্য” তে ক্লিক করুন এবং লগইন পেজে চলে যান।
ধাপ ৪ঃ
এবার আপনার ভোটার নিবন্ধনের স্লিপ নম্বর, জন্ম তারিখ, এবং ক্যাপচা সঠিক ভাবে পূরণ করে “ভোটার তথ্য দেখুন” এ ক্লিক করুন।
ধাপ ৫ঃ
“ভোটার তথ্য দেখুন” এ ক্লিক করার পর পরবর্তী পেজে আপনি ভোটারের নাম, এন আই ডি নাম্বার, ক্রমিক নাম্বার, ভোটারের এলাকাসহ ভোটারের জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করতে পারবেন।
আর উপরে দেখানো ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই অনলাইন থেকে আপনার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করার পদ্ধতি ধাপে ধাপে দেখানোর পরে এবার আমরা দেখাবো কিভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন অনলাইন থেকেঃ
কিভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করবেন?
ধাপ ১ঃ
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে চাইলে প্রথমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন, এবং “রেজিষ্টার” অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ ২ঃ
এবার ছবিতে দেয়া ধাপগুলো অনুসরণ করে “রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করতে চাই” তে ক্লিক করুন।
ধাপ ৩ঃ
এবার আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার, জন্ম তারিখ এবং ছবিতে প্রদর্শিত কোডগুলো দিয়ে “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ ৪ঃ
এবার পর্যায়ক্রমে স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী আপনার বিভাগ, জেলা, উপজেলা সঠিকভাবে নির্বাচন করুন এবং “পরবর্তী” বাটনটিতে ক্লিক করুন।
ধাপ ৫ঃ
এবার আপনার মোবাইল নাম্বারটি দিন এবং “বার্তা পাঠান” বাটনটিতে ক্লিক করুন। এর মাধ্যমে আপনার মোবাইল ফোনে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে।
ধাপ ৬ঃ
এবার আপনার মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে প্রাপ্ত ভেরিফিকেশন কোডটি এখানে দিন। তারপরে “বহাল” বাটনে ক্লিক করুন এবং পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যান।
ধাপ ৭ঃ
এবার আপনার পছন্দমতো একটি পাসওয়ার্ড সেট করুন এবং পরবর্তী ধাপের জন্য এগিয়ে যান।
ধাপ ৮ঃ
এবারের ধাপে আপনার ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড দিন এবং আপডেটে ক্লিক করুন।
ঠিক তারপরেই আপনার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়ে যাবে। এবং পরবর্তী ধাপে আপনাকে লগইন করতে হবে।
ধাপ ৯ঃ
এবার আপনার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাইলে পুনরায় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের হোমপেজে ফিরে যান এবং “লগইন” এ ক্লিক করুন।
ধাপ ১০ঃ
লগইনে ক্লিক করার পর এই পেজটি ওপেন হবে, এবার “লগইন করুন” বাটনটিতে ক্লিক করুন।
ধাপ ১১ঃ
এবার আপনার ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড এবং ক্যাপচা সঠিকভাবে পূরণ করে লগইন করুন।
ধাপ ১২ঃ
লগইন হয়ে গেলে এবার আপনি এই পেজে পৌঁছে যাবেন, এই পেজে পৌঁছানোর পরে ডাউনলোডে ক্লিক করলেই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এর অনলাইন কপি ডাউনলোড হয়ে যাবে।
উপরিউক্ত পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে অনলাইন থেকে আপনার আইডি কার্ড সংগ্রহ করুন খুব সহজেই। এছাড়াও ইচ্ছা করলে ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। ঠিক একই ভাবেই মোবাইলেও ভোটার আইডি চেক করতে পারবেন মোবাইলের যেকোনো ব্রাউজার মাধ্যমে।
এবার আমরা দেখাবো মোবাইল এস.এম.এস এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার জানার উপায়ঃ
কিভাবে মোবাইলে এস.এম.এস এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার জানতে পারবেন?
নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও মোবাইলে এস.এম.এস এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার জানার সুযোগ করে দিয়েছে।
মেসেজ অপশন এর মাধ্যমে মোবাইলে জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার জানতে হলে প্রথমে আপনার মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে যান এবং টাইপ করুনঃ
NID<FormNo><DD-MM-YYYY> এবং সেন্ড করুন 105 নাম্বারে
এরপর ফিরতি মেসেজে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার পেয়ে যাবেন।
শেষ কথা
উপরিউক্ত ধাপগুলো অবলম্বন করে আপনি খুব সহজেই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড, ভোটার তথ্য চেক এবং অফলাইনে মোবাইলে এস.এম.এস এর মাধ্যমে ভোটার নাম্বার জানতে পারবেন।
গ্রাহকদের সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তর
১) প্রশ্নঃ মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র বের করা যায় কীভাবে?
উত্তরঃ মোবাইল নাম্বার দিয়ে সাধারণত জাতীয় পরিচয় পত্র পাওয়া যায় না। তবে উপরে দেখানো পদ্ধতি অবলম্বন করে মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই করতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর
১) প্রশ্নঃ সময় মতো ভোটার হিসেবে নিবন্ধন না করতে পারলে পরে কি নিবন্ধন করা যাবে?
উত্তরঃ নিকটস্থ নির্বাচন অফিসে সঠিক কারন দেখিয়ে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
২) প্রশ্নঃ বিদেশে থাকার কারনে যদি পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করতে না হয়ে থাকে, তাহলে এখন কিভাবে করা যায়?
উত্তরঃ নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে আপনার পাসপোর্ট, এস এস সি সার্টিফিকেট, জন্ম সনদ, বিদ্যুৎ বিল, নাগরিকত্ব সনদ সহ প্রয়োজনীয় ফরম পূরণ করে আবেদন করতে হবে।
৩) প্রশ্নঃ ভোটার তথ্যের সাথে কি কোন ধরণের পদবি বা খেতাব যুক্ত করা যাবে কিনা?
উত্তরঃ না। ভোটার তথ্যতে শুধু মাত্র আসল নাম যুক্ত করা যায়। কোন ধরণের খেতাব, পদবি বা উপাধি যোগ করা গ্রহণযোগ্য নয়।
৪) প্রশ্নঃ এন আই ডি কার্ড (NID Card) কোথায় থেকে পাওয়া যায়?
উত্তরঃ আপনি যে এলাকায় আবেদন করেছেন সেই এলাকার নির্বাচন অফিস থেকে এন আই ডি কার্ড (NID Card) পাবেন। এছাড়াও অনলাইনে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকেও জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।
৫) প্রশ্নঃ বিদেশে চলে গেলে আমার পরিচয় পত্র কি অন্য কেউ তুলতে পারবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ পারবে, তবে আপনার প্রতিনিধির ক্ষমতাপ্রাপ্ত এবং স্বীকার পত্র নিয়ে দিয়ে তা সংগ্রহ করতে হবে।
৬) প্রশ্নঃ ইচ্ছাকৃত ভাবে যদি কেউ ভুল তথ্য দিয়ে থাকে তাহলে কি হবে?
উত্তরঃ জরিমানা বা সাজাপ্রাপ্ত হতে পারে, আবার উভয়ই হতে পারে।
৭) প্রশ্নঃ এন আই ডি নাম্বার কারো ১৩ সংখ্যা আবার কারো ১৭ সংখ্যা হবার কারন কি?
উত্তরঃ নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ২০০৮ সালের পূর্বে যাদের ভোটার নিবন্ধন করা হয়েছে তাদের ১৩ সংখ্যা, আর তার পরের গুলো ১৭ সংখ্যার হচ্ছে।
৮) প্রশ্নঃ একজন ব্যাক্তি কি একটির বেশী পরিচয় পত্র পেতে পারে ভিন্ন নাম এবং বয়স ব্যাবহার করে?
উত্তরঃ কখনোই না। একের অধিক কার্ড করতে পারবে না। যদি ধরা পরে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৯) প্রশ্নঃ নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কি কি কাগজ প্রয়োজন হয়?
উত্তরঃ ভোটার হওয়ার নতুন নিয়ম অনুযায়ী একজন নাগরিকের এস এস সি সার্টিফিকেট, জন্ম সনদ, বিদ্যুৎ বিলের কাগজ নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট, অভিভাবকের পরিচয় পত্রের ফটোকপি, পাসপোর্টের ফটোকপি।
১০) প্রশ্নঃ ভুলবসত দুইবার যদি ভোটার নিবন্ধন করা হয়ে থাকে, তাহলে কি করবো?
উত্তরঃ নিকটস্থ নির্বাচন অফিসে গিয়ে ক্ষমাস্বরূপ লিখিতভাবে আবেদন করতে হবে। নতুবা ভবিষ্যতে ধরা পরলে শাস্তি বাধ্যতামূলক বলে ধার্য হবে।
১১) প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্র থাকার পরেও নির্বাচনের সময় নাম ছিল না, তাহলে কি করা যাবে?
উত্তরঃ নিকটস্থ নির্বাচন অফিসে যত দ্রুত সম্ভব যোগাযোগ করুন।
১২) প্রশ্নঃ যে সকল ফরমের কথা বলা হয়েছে সেগুলো কোথায় পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ নিকটস্থ নির্বাচন অফিসে অথবা www.ecs.gov.bd এবং www.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে সকল ফরম পেয়ে যাবেন।
১৩) প্রশ্নঃ এসকল ফরম পুরনের ক্ষেত্রে কি কোন ফি প্রদান করতে হয়?
উত্তরঃ এসকল ফরম বিনামূল্যেই পুরন করতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর
১) প্রশ্নঃ কিভাবে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করা যায়?
উত্তরঃ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য প্রথমে নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে ভুল তথ্য পুনরায় সংশোধন এর জন্য আবেদন করতে হবে, এবং পর্যাপ্ত কাগজপত্র আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে, অথবা অনলাইনে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকেও সংশোধন করতে পারবেন।
২) প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্রে বা এন আইডি তে ভুল সংশোধন করা হলে কি সেটার কোন রেকর্ড রাখা হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ। সকল রেকর্ড তাদের তথ্যশালায় সংরক্ষণ করা হয়।
৩) প্রশ্নঃ ভুলবশত পিতা/স্বামী/মাতাকে মৃত হিসেবে উল্লেখ করা হলে তা কিভাবে সংশোধন করা যায়?
উত্তরঃ জীবিত যে ব্যাক্তি কে মৃত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তার পরিচয়পত্র জমা দিয়ে আবেদন করতে হবে।
৪) প্রশ্নঃ অবিবাহিত হওয়ার পরেও পিতার পরিবর্তে স্বামীর নাম লেখা থাকলে কিভাবে সংশোধন করা যায়?
উত্তরঃ নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে আপনি অবিবাহিত এটির প্রমান সহ আবেদন করতে হবে।
৫) প্রশ্নঃ বিয়ের পর স্বামীর নাম যুক্ত করা যায় কিভাবে?
উত্তরঃ বিয়ের পর্যাপ্ত সনদ এবং স্বামীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি নিয়ে নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে আবেদন করতে হবে।
৬) প্রশ্নঃ বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেলে পরিচয় পত্র থেকে স্বামীর নাম কিভাবে বাদ দেয়া যায়?
উত্তরঃ বিবাহ বিচ্ছেদের দলিল বা তালাকনামা নিয়ে নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে আবেদন করতে হবে।
৭) প্রশ্নঃ বিবাহ বিচ্ছেদের পরে পুনরায় বিবাহ করলে পূর্বের স্বামীর যায়গায় নতুন স্বামীর নাম কিভাবে যুক্ত করা যায়?
উত্তরঃ পূর্বের বিবাহের তালাকনামা এবং নতুন বিবাহের কাবিননামা যুক্ত করে একটি সংশোধন ফরম পূরণ করে পুনরায় আবেদন করতে হবে।
৮) প্রশ্নঃ পেশা পরিবর্তন করার উপায় কি?
উত্তরঃ আপনার পেশা সম্পর্কিত পর্যাপ্ত প্রমানসহ নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে আবেদন করতে হবে।
৯) প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্রের ছবি অস্পষ্ট হলে কিভাবে পরিবর্তন করা যায়?
উত্তরঃ ছবি পরিবর্তন করতে হলে “পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে” নিজে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আবেদন করে তা সংশোধন করতে হবে।
১০) প্রশ্নঃ নিজের অথবা পিতা, স্বামী ও মাতার নামের বানান ভুল হলে সংশোধনের জন্য কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হয়?
উত্তরঃ জন্ম সনদ, এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট এর ফটোকপি, নাগরিকত্ব সদন, চাকুরীর প্রমাণপত্র, নিকাহ্নামা, বাবা/স্বামী/মা এর জাতীয় পরিচয়পত্র সত্যায়িত করে তার কপি জমা দিতে হবে।
১১) প্রশ্নঃ ডাক নাম বা অন্য কোন নামে নিবন্ধিত হলে তা সংশোধনের জন্য কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হয়?
উত্তরঃ বিবাহিতদের ক্ষেত্রে স্ত্রী বা স্বামীর পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপি, এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার সার্টিফিকেট, জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি, ওয়ারিশ সনদ, ম্যাজিট্রেট কোর্টে সম্পাদিত এফিডেভিট, ইউনিয়ন/পৌর বা সিটি কর্পোরেশন থেকে আপনার নাম সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
১২) প্রশ্নঃ পিতা, মাতা অথবা স্বামীকে ‘মৃত’ উল্লেখ করার জন্য কি কি কাজপত্র প্রয়োজন?
উত্তরঃ উল্লেখ্য ব্যাক্তির মৃত্যুর সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
১৩) প্রশ্নঃ পরিচয় পত্রে নিজের ঠিকানা পরিবর্তন বা সংশোধন করা যায় কিভাবে?
উত্তরঃ শুধুমাত্র নতুন আবাস্থলে স্থানান্তরিত হলে ঠিকানা পরিবর্তন করা যায়, নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে ১৩ নং ফর্ম পূরণ করে আবেদন করতে হয় প্রমাণাদি সহ।
১৪) প্রশ্নঃ একই পরিবার এর ভিন্ন ভিন্ন সদস্যের পরিচয় পত্রে পিতা/মাতার নাম ভিন্নভাবে লেখা হলে সংশোধনের উপায় কি?
উত্তরঃ সকল সদস্যের কার্ডের ফটোকপি এবং তাদের মধ্যের সম্পর্কের তথ্য নিয়ে নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে পর্যাপ্ত প্রমান দাখিলপূর্বক আবেদন করতে হবে।
১৫) প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্রে অন্য কোন ব্যাক্তির তথ্য চলে আসলে কিভাবে সংশোধন করা যায়?
উত্তরঃ ভুল তথ্য চলে আসলে পর্যাপ্ত প্রমান সহ নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে পুনরায় আবেদনের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যাচাই করে সংশোধন করা যায়।
১৬) প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্রে রক্তের গ্রুপ ভুল আসলে সংশোধন কিভাবে করতে হয়?
উত্তরঃ নিকটস্থ হাসপাতাল বা ক্লিনিক হতে ডায়াগনোসটিক রিপোর্ট নিয়ে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে।
১৭) প্রশ্নঃ এন আই ডি কার্ডে (NID Card) বয়স বা জন্ম তারিখ কিভাবে পরিবর্তন করা যায়?
উত্তরঃ বয়স বা জন্ম তারিখ পরিবর্তনের জন্য আপনার এসএসসি/সমমান পরীক্ষার সার্টিফিকেট এর ফটোকপি সত্যায়িত করে তা আবেদনের সাথে সংযুক্ত করে জমা দিতে হবে। পরীক্ষার সার্টিফিকেট না থাকলে অনুরুপ কাগজ হিসেবে জন্ম নিবন্ধন ব্যাবহার করা যেতে পারে। আবেদন করা হয়ে গেলে তা বিশেষ বিচার বিবেচনা করে সঠিক নির্ধারণ করে সংশোধন করা হবে।
১৮) প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্র বা এন আই ডি কার্ডে (NID Card) স্বাক্ষর পরিবর্তন করা যায় কিভাবে?
উত্তরঃ স্বাক্ষর পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে যে, স্বাক্ষর একবারের বেশী পরিবর্তন করা যায়না, সুতরাং নতুন স্বাক্ষরের নমুনা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আবেদন করতে হবে।
১৯) প্রশ্নঃ জন্ম তারিখে সঠিকভাবে লেখা না হলে এবং সাথে কোন প্রমান না থাকলে কিভাবে ঠিক করা যায়?
উত্তরঃ নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে এ বিষয়ে একটি সাধারন আবেদন করতে হবে। তারপর কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে সংশোধন করার ব্যাবস্থা করবে।
২০) প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্র বা এন আই ডি কার্ড (NID Card) কয়বার সংশোধন করতে পারবো?
উত্তরঃ একটি তথ্য শুধুমাত্র একবারই সংশোধন করা যায়। তবে যদি যুক্তিযুক্ত না হয়ে থাকে তাহলে তা গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে।
জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে করনীয় সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর
১) প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে কিভাবে নতুন কার্ড পাওয়া যায়?
উত্তরঃ পরিচয়পত্র বা এন আই ডি কার্ড (NID Card) হারিয়ে গেলে প্রথমে আপনার নিকটস্থ থানায় একটি জিডি (জেনারেল ডায়েরি) করতে হবে এবং জিডির মূলকপি নিয়ে নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে আবেদন করতে হবে।
২) প্রশ্নঃ এন আই ডি কার্ড হারিয়ে গেলে পুনরায় কার্ড পেতে হলে কত ফি প্রদান করতে হয়?
উত্তরঃ নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে হারানো কার্ড পেতে ফি প্রদান করতে হয়না।
৩) প্রশ্নঃ কার্ড হারিয়ে গেলে এবং তা যদি সংশোধনের প্রয়োজন পরে, তা কি একই সাথে আবেদন করতে পারবো?
উত্তরঃ প্রথমে কার্ড হারানোর আবেদন করতে হবে, তারপর কার্ড হাতে পেয়ে গেলে পুনরায় সংশোধনের জন্য আবেদন করা যায়।
৪) প্রশ্নঃ ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে কি করবো?
উত্তরঃ ভোটার নিবন্ধন ফরমের স্লিপ হারিয়ে গেলে ঠিক একই পদ্ধতিতে, থানায় জিডি করে মুলকপি এবং ভোটার নাম্বার সহ আবেদন করতে হয়।
৫) প্রশ্নঃ কার্ড হারিয়ে গেলে, যদি কোন তথ্য যেমন আইডি নাম্বার, ভোটার নাম্বার বা স্লিপ নাম্বার না থাকে তাহলে কি করতে হবে?
উত্তরঃ এক্ষেত্রে নিকটস্থ নির্বাচন অফিস হতে ভোটার নাম্বার নিয়ে নির্বাচন অফিসারের নিকট আবেদন করে সমাধান করা যাবে।
সাধারণ প্রশ্নোত্তর পর্বের তথ্যসূত্রঃ সাধারন জিজ্ঞাসা-নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ