Written by 3:27 pm পাসপোর্ট, পরিচয় পত্র

ই-পাসপোর্ট রিনিউ বা নবায়ন করার নিয়ম (২০২৩)

ই পাসপোর্ট নবায়ন বা রিনিউ করার বিস্তারিত নিয়ম

২০২০ সালের ২২ শে জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে পৃথিবীর ১১৯ তম দেশ হিসেবে ই-পাসপোর্টের ব্যবহার শুরু হয়। এ পর্যন্ত দেশে মূলত এমআরপি বা মেশিন রিডেবল পাসপোর্টই ব্যবহার করা হত। ই-পাসপোর্ট হচ্ছে বর্তমান যুগের অন্যতম নিরাপদ পাসপোর্ট। এতে একটি ছোট মাইক্রোপ্রসেসর বা চিপের মাঝে পাসপোর্টের সকল তথ্য এবং মোট ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকে। এতে করে অন্য দেশে ভ্রমণে গেলেও দীর্ঘ সময় ধরে পাসপোর্ট পরীক্ষার জন্য দাঁড়িয়ে থাকার প্রয়োজন হবে না। একারণে এখন প্রায় সকলেই পুরাতন এমআরপি বা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট নবায়ন করে ই-পাসপোর্টে রূপান্তর করতে চাইছেন। যাতে পাসপোর্টের নিরাপত্তা বজায় থাকে ও মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের সমস্যাগুলোর অধিকাংশই কাটিয়ে উঠা যায়।

তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক পাসপোর্ট রিনিউ  বা নবায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যঃ

সূচিপত্রঃ

এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে রিনিউ করার সুবিধা 

এমআরপি পাসপোর্ট ব্যাবহারকারিদের ক্ষেত্রে নতুন করে ই-পাসপোর্ট তৈরী করার তুলনায় এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে রিনিউ করাটা বেশ অনেকটাই সহজ ও সুবিধাজনক। এক্ষেত্রে অধিকাংশ তথ্যই এমআরপি পাসপোর্টের সাথে মিলিয়ে দেখা হবে। ফলে তথ্যের প্রমাণ দেখানোর জন্য অতিরিক্ত কাগজপত্র জোগাড় করতে হবে না। যদিও এই কাজের জন্য পুরাতন এমআরপি-এর ফটোকপি জমা দিতে হবে এবং ক্ষেত্র বিশেষে পাসপোর্টটি ও দেখাতে হবে। কিন্তু সব মিলিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য এক্ষেত্রে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হবে না। এছাড়াও ই-পাসপোর্ট তৈরীর সময় কোন ধরনের তথ্য সত্যায়িত করতে হবে না। পুরাতন তথ্য দিয়েই সব কাজ চালিয়ে নেওয়া যাবে।

এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্ট নবায়ন করার আরেকটি বিশেষ সুবিধা হচ্ছে এক্ষেত্রে নতুন করে পুলিশ ভেরিফিকেশন করাতে হবে না। পাসপোর্ট তৈরী করার অন্যতম ও বেশ সমস্যার একটি ধাপ হচ্ছে পুলিশ ভেরিফিকেশন করানো। এই ধাপটি এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে নবায়নের সময় প্রয়োজন না হওয়ায় এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্ট নবায়ন করাটা আবেদনকারীর অনেকখানি সময় ও শ্রম সাশ্রয় করবে।

ই-পাসপোর্ট রিনিউ করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 

এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্ট নবায়ন করতে হলে নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে। এখানে তার তালিকা দেয়া হলো:

১) জন্ম নিবন্ধন সনদ অথবা জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপিঃ এক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স ২০ বছরের বেশী হলে তাকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে। আবেদনকারীর বয়স ১৮-২০ বছরের মাঝে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদের মধ্যে যেকোনো একটির ফটোকপি জমা দিতে হবে। এবং আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে তাকে জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি জমা দিতে হবে। এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য যে, আবেদনকারী যদি জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি জমা দিয়ে থাকে, তবে তাকে জন্ম নিবন্ধন সনদের সাথে সাথে পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও জমা দিতে হবে।

২) মূল আবেদনের রঙ্গিন প্রিন্টেড কপিঃ আবেদন করতে epassport.gov.bd এই লিংকে প্রবেশ করুন। আবেদন শেষ হলে আলাদা করে আবেদনের রঙ্গিন কপি প্রিন্ট করে নিতে হবে।

৩) পুরাতন মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ও এর ফটোকপি।

৪) ব্যাংকে পাসপোর্টের ফি জমা দিলে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ।

ই-পাসপোর্ট রিনিউ করার পদ্ধতি

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়ে গেলে এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে নবায়ন এর করার কাজ শুরু করা যাবে। এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্ট নবায়ন করতে নির্দিষ্ট কিছু ধাপ সম্পন্ন করতে হবে।

ধাপ ১ঃ নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু হয়েছে কিনা দেখুন

ই-পাসপোর্ট দেওয়ার কার্যক্রম বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছে। তাই আপনার এলাকায় ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু হয়েছে কিনা তা জানার জন্য জেলার নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করার সময় বর্তমান জেলা ও থানার নাম যুক্ত করে নিয়ে ফরম পুরণ শুরু করতে হবে। 

ধাপ ২ঃ আবেদন ফরম পূরন করুন

ই-পাসপোর্টের রিনিউ এর আবেদনের জন্য অফলাইনে বা পিডিএফ ডাউনলোড করে আবেদন করা যাবে। এক্ষেত্রে আবেদনের পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে প্রিন্ট করিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে ফরমটি হাতে পূরন করা যাবে না। কেউ চাইলে পিডিএফ এডিটরের সাহায্যে ফরমের পিডিএফটি পুরণ করে নিতে পারবেন। এছাড়াও ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করা যাবে। এখানে আবেদন করার সময় রি-ইস্যু বাটনটি ক্লিক করে সরাসরি আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

ধাপ ৩ঃ পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করুন

ই-পাসপোর্ট রিনিউ করার ফি অনলাইনে এবং ব্যাংকে গিয়ে উভয়ভাবেই পরিশোধ করা যাবে। 

পাসপোর্ট রিনিউ ফি ব্যাংকে গিয়ে পরিশোধের ক্ষেত্রেঃ

ই-পাসপোর্টের ফি পাসপোর্ট অফিসের নির্ধারিত করা নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকে পরিশোধ করা যাবে। ব্যাংকগুলোর নাম হলো-

  • ওয়ান ব্যাংক
  • প্রিমিয়ার ব্যাংক
  • সোনালী ব্যাংক
  • ট্রাস্ট ব্যাংক
  • ব্যাংক এশিয়া
  • ঢাকা ব্যাংক

ব্যাংকে পাসপোর্টের ফি পরিশোধের ক্ষেত্রে উপরোক্ত ব্যাংকগুলোর যেকোনো শাখায় ফি জমা দেওয়া যাবে। ফি জমা দেওয়ার সময় ই-পাসপোর্টের জন্য করা আবেদনপত্রের রঙ্গিন প্রিন্টেড কপিটি অবশ্যই সাথে রাখতে হবে।

পাসপোর্ট রিনিউ ফি অনলাইনে পরিশোধের ক্ষেত্রেঃ

অনলাইনে ই-পাসপোর্টের ফি পরিশোধ করার সুবিধা হচ্ছে এতে পাসপোর্ট ফি-এর পরিমান স্বয়ংক্রিয়ভাবে হিসাব করা হয়। এছাড়া এতে সময় ও শ্রমেরও সাশ্রয় হয়। অনলাইনে ফি পরিশোধের পদ্ধতিগুলো হচ্ছে-

  • মাস্টারকার্ড (MasterCard)
  • ভিসা কার্ড (visa)
  • কিউ-ক্যাশ (Q-Cash)
  • বিকাশ
  • ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং

এছাড়াও চাইলে সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ের সাহায্যেও অনলাইনে ই-পাসপোর্টের ফি পরিশোধ করা যাবে।

ধাপ ৪ঃ ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্টের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করুন

ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার পরে একটি নির্দিষ্ট দিনে বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। এসময় সাথে করে আবেদনের রঙ্গিন প্রিন্টেড কপি, ই-পাসপোর্টের ফি প্রদানের রশিদ, জাতীয় পরিচয়পত্রের বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি, পুরাতন এমআরপি পাসপোর্টের ফটোকপি ও মূল পাসপোর্টটি এবং অন্যান্য সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে নিয়ে নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। এছাড়া কেউ দেশের বাইরে থেকে পাসপোর্ট তৈরী করতে চাইলে আবেদনকারীকে ঐ দেশের দুতাবাসে যেতে হবে। পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার পরে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য যাচাই করে দেখা হবে।

  • আবেদনকারীর ব্যাক্তিগত তথ্য ও কাগজপত্র।
  • আবেদনকারীর ছবি। ছবি তোলার ক্ষেত্রে সাদা পোশাক, সাদা টুপি, চশমা পরিধান করে ছবি তোলা যাবে না।
  • আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশের ছবি। 
  • পাসপোর্ট ফি পরিশোধের রশিদ থেকে ফি পরিশোধ নিশ্চিতকরণ।

তথ্যগুলো যাচাই করার পর আবেদনকারীকে ই-পাসপোর্ট সরবারাহের রশিদ দেওয়া হবে। পাসপোর্ট সংগ্রহের সময় এই রশিদটিই দেখাতে হবে।

ধাপ ৫ঃ পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন

পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য আবেদনকারীকে সশরীরে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে। পাসপোর্ট সংগ্রহের সময় আবেদনকারীর আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে দেখা হয়। এছাড়াও এখানে পাসপোর্ট সরবরাহের রশিদটি প্রদর্শন করতে হবে। এবং এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য পুরাতন মেশিন রিডেবল পাসপোর্টটি দেখাতে হবে।

ই-পাসপোর্ট নবায়ন করার খরচ

ই-পাসপোর্ট তৈরী ও এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে রিনিউ করার খরচ একই। এখানে ই-পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ উল্লেখ করা হলোঃ

৫ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৪৮ পাতার পাসপোর্টের ক্ষেত্রে

  • নিয়মিত পাসপোর্ট- ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৪,০২৫ টাকা
  • জরূরী পাসপোর্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৬,৩২৫ টাকা
  • অতি জরুরী পাসপোর্ট- ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,৬২৫ টাকা 

১০ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৪৮ পাতার পাসপোর্টের ক্ষেত্রে

  • নিয়মিত পাসপোর্ট- ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৫,৭৫০ টাকা
  • জরূরী পাসপোর্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,০৫০ টাকা
  • অতি জরুরী পাসপোর্ট- ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১০,৩৫০ টাকা

৫ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৬৪ পাতার পাসপোর্টের ক্ষেত্রে

  • নিয়মিত পাসপোর্ট- ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৬,৩২৫ টাকা
  • জরূরী পাসপোর্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,৩২৫ টাকা
  • অতি জরুরী পাসপোর্ট- ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১২,০৭৫ টাকা 

১০ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৬৪ পাতার পাসপোর্টের ক্ষেত্রে

  • নিয়মিত পাসপোর্ট- ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,০৫০ টাকা
  • জরূরী পাসপোর্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১০,৩৫০ টাকা
  • অতি জরুরী পাসপোর্ট- ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১৩,৮০০ টাকা

এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে রিনিউ এর সময় কোন তথ্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রে করনীয়

বিভিন্ন কারণে পাসপোর্টে ভুল তথ্য আসতে পারে। এর মধ্যে অধিকাংশই অবশ্য বানান ভুল থাকে। এছাড়াও কারও তার পেশা, ঠিকানা ইত্যাদিও পরিবর্তন করতে হতে পারে। তাই এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে নবায়ন করার সময় আবেদনকারী পুরাতন পাসপোর্টে থাকা ভুল বা পরিবর্তিত তথ্য সহজেই পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। 

  • নামের বানান ভুল হলে: পুরাতন পাসপোর্টে যদি কারো নামের বানান ভুল থেকে থাকে তাহলে সেটি পরিবর্তনের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদের বা জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ক্ষেত্র বিশেষে পিতা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সনদ প্রদর্শন করতে হবে।
  • পেশা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে: এমআরপি এবং নতুন ই-পাসপোর্টে যদি পেশার ভিন্নতা থাকে তাহলে ই-পাসপোর্ট নবায়নের সময় নতুন পেশার প্রমাণ দেখাতে হবে। শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র, বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য চাকরিরত প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সরকারি আদেশনামা বা জিও এবং যারা অবসরপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের জন্য অবসরে যাওয়ার নথি প্রদর্শন করতে হবে। এছাড়াও নতুন ব্যবসা শুরু করা ব্যবসায়ীরা তাদের ট্রেড লাইসেন্সও প্রদর্শন করতে পারবেন।
  • অস্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে: পুরাতন পাসপোর্টের অস্থায়ী ঠিকানার সাথে ই-পাসপোর্টের ঠিকানার ভিন্নতা থাকলে নতুন ঠিকানার প্রমান হিসেবে নতুন ঠিকানার ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি জমা দিতে হবে। ইউটিলিটি বিল হিসেবে বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, টেলিফোন বিল, হোল্ডিং ট্যাক্স পেপার ইত্যাদির ফটোকপি জমা দেওয়া যাবে।
  • বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন হলে: এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্ট নবায়নের সময় যদি বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তিত হয় তবে বৈবাহিক অবস্থার প্রমাণ দেখাতে হবে। নতুন করে বিবাহিত হলে বিবাহ সনদ বা নিকাহনামা দেখাতে হবে। এবং তালাকপ্রাপ্ত হলে তালাকনামা দেখাতে হবে।

শেষকথা

অনেক দেশেই এখনো ই-পাসপোর্টের সুবিধা চালু হয় নি। ফলে এই দিক থেকে অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায়ই অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। যাদের জন্য পাসপোর্ট অনেক জরুরি একটি বিষয় ছিলো, তাদের কাছে এখন ই-পাসপোর্ট একটি নতুন ভরসার নাম। পুরাতন এমআরপি বাদ দিয়ে ই-পাসপোর্টে নবায়ন করার জন্য তাই অনেকেই চেষ্টা করছেন। তাই তাদের জন্য এই লেখাটি অনেকখানি সাহায্য করবে বলেই আশাবাদী। 

অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

১) এমআরপি পাসপোর্টের মেয়াদ বাকি থাকলে সেটি কি রিনিউ করার পরে ই-পাসপোর্টের মেয়াদের সাথে যুক্ত হবে?

উত্তরঃ এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে রিনিউ করলে এমআরপি পাসপোর্টের মেয়াদ ই-পাসপোর্টের সাথে যুক্ত হবে না। ই-পাসপোর্টের মেয়াদ একদম শুরু থেকেই ৫ বছর অথবা ১০ বছর হিসাব করা হবে।

২) পাসপোর্ট রিনিউ করার সময় স্থায়ী ঠিকানা কি পরিবর্তন করা যাবে?

উত্তরঃ পাসপোর্ট রিনিউ করার সময় স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করা যায় না। শুধুমাত্র বর্তমান ঠিকানা চাইলে প্রয়োজনীয় প্রমাণ দেখিয়ে পরিবর্তন করা যায়।

৩) অনলাইনে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করলে তার রশিদ কিভাবে প্রদর্শন করবো?

উত্তরঃ অনলাইনে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করলে ফি পরিশোধের ট্রানজিশন আইডি ব্যবহার করতে হবে।

৪) ছোট বাচ্চাদের পাসপোর্ট নেওয়ার জন্যও কি বাচ্চাদেরকেই সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে?

উত্তরঃ  ১১ বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের পাসপোর্ট চাইলে তার পিতামাতা বা বৈধ অভিভাবক সংগ্রহ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে পিতামাতা বা অভিভাবককে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র, ই-পাসপোর্ট সংগ্রহের রশিদ ও পুরাতন মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে। 

৫) কেউ যদি অসুস্থ থাকে এবং পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে যেতে না পারে, তার করণীয় কি?

উত্তরঃ কেউ পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে উপস্থিত হতে না পারলে তাকে একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের আবেদন পত্র লেখতে হবে। এরপর অন্য কোন ব্যক্তি ঐ ক্ষমতা হস্তান্তর পত্র, পুরাতন মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট, আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, ই-পাসপোর্ট সংগ্রহের রশিদ প্রদর্শন করে পাসপোর্টটি সংগ্রহ করতে পারবে।

৬) জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য অনলাইনে না থাকলেও কি আবেদন করা যাবে?

উত্তরঃ জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য অনলাইনে না থাকলে সেটি ব্যবহার করে ই-পাসপোর্টের আবেদন করা যাবে না।

৭) বিদেশের দূতাবাস থেকে কি ২ দিনের অতি জরুরি ই-পাসপোর্ট নেওয়া যাবে?

উত্তরঃ অতি দ্রুত ২ দিনে পাসপোর্ট পাওয়ার সুবিধাটি শুধুমাত্র দেশের অভ্যন্তরীণ নাগরিকদের জন্য। দূতাবাস থেকে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না।

 

তথ্যসূত্রঃ

১) epassport.gov.bd

Visited 9 times, 1 visit(s) today
[mc4wp_form id=7429]