চাকরি

ছাত্রজীবনের সেরা পার্ট টাইম চাকরি

পার্ট টাইম চাকরি বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ সময়ে অনেকেই চায় নিজের পায়ে দাঁড়াতে এবং নিজের হাতখরচ থেকে শুরু করে নিজের ছোটখাটো খরচগুলো নিজেই বহন করতে। তাছাড়া পাশাপাশি পড়াশোনার কাজও চালিয়ে যেতে হয় বলে ফুল টাইম চাকরি করাও সম্ভব হয় না। সেকারণে অনেকেই এসময় পার্ট টাইম চাকরির দিকে ঝুঁকে পরে। কিন্তু বর্তমানে দেশের চাকরির বাজারে চাকরির স্বল্পতা, নিজের সময় ও পড়াশোনার সাথে কোন কোন চাকরি সমন্বিত হতে পারে এ বিষয়ে না জানা এবং কোন চাকরিতে কী কী করতে হয় এসব সম্পর্কে ধারণা না থাকায় অনেকেই উপযুক্ত পার্ট টাইম চাকরি খুঁজে পায় না। আবার অনেক সময় খুঁজে পেলেও দেখা যায় যে, চাকরিটি সঠিকভাবে চালিয়ে যাওয়াও সম্ভব হয় না। তাই এই আর্টিকেলে পার্ট টাইম চাকরি কেনো দরকারি, এ ধরণের চাকরিতে কী বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত এবং কোন কোন পার্ট টাইম চাকরি প্রায় সব শিক্ষার্থীই করতে পারবে এ সম্পর্কে আলোচনা করবো।  

ছাত্রজীবনে ভালো পার্ট টাইম চাকরি করার প্রয়োজনীয়তা

পার্ট টাইম চাকরি অনেকেই শুধুমাত্র তার হাতখরচ বা পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন খরচ চালানোর জন্য করলেও এটি অনেক সময়ই পরবর্তী কর্মজীবনে প্রভাব ফেলে। বর্তমানে দেশে যথোপযুক্ত চাকরির স্বল্পতা ও বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষেও সবাইকে চাকরি দেয়া সম্ভব হয় না। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে দক্ষ ও অভিজ্ঞ চাকরিজীবীই বেশি খোঁজে। এই দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা একজন চাইলে তার পার্ট টাইম চাকরির মাধ্যমে অর্জন করতে পারে।

এছাড়াও ভালো পার্ট টাইম চাকরিগুলো করার পরে সেই অভিজ্ঞতা পরবর্তী পেশাদারি জীবনে চাকরির নিয়োগকর্তাদের আবেদনকারীর প্রতি অধিক আগ্রহী করার ক্ষেত্রে অনেকখানি ভূমিকা রাখে।

পার্ট টাইম চাকরি করতে গেলে সাধারণত দেশে সেই নির্দিষ্ট পেশার ভবিষ্যত অবস্থা সম্পর্কে সহজে ধারণা পাওয়া যায়। এছাড়া সেই পেশার সাথে সম্পৃক্ত ক্ষেত্রে বড় বড় অবস্থানে যারা থাকেন তাদের সাথে পরিচিত হওয়া বা আলাপ করার সুযোগও পাওয়া যায় কখনো কখনো, যা ভবিষ্যত কর্মজীবনে অনেক সময়ই নানাভাবে সাহায্য করে।

পার্ট টাইম চাকরির ধরন নির্বাচনে যা খেয়াল রাখা দরকার

পার্ট টাইম চাকরি করার সময় নিজের দক্ষতা এবং ইচ্ছা, দুইয়ের উপরই গুরুত্ব দেয়া উচিত। পার্ট টাইম চাকরিতে আবেদনের সময় যেসকল বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেগুলো হলোঃ

নিজের পড়ার বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য রাখার চেষ্টা করা

পার্ট টাইম চাকরি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো না কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরাই করে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত প্রত্যেককেই একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ভিত্তি করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পড়াশোনা শেষ করে সেই বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত চাকরির খোঁজ করতে হয়।

তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নিজের পড়ার বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো একটি পার্ট টাইম চাকরি করলে পরবর্তী জীবনে চাকরি পাওয়াটা অনেকাংশেই সহজ হয়ে যায়। তাছাড়া পরবর্তীতে কোনো চাকরির আবেদনে সরাসরি অভিজ্ঞতা হিসেবে সিভিতে ঐ পার্ট টাইম চাকরির কথা উল্লেখ করার সুযোগ তো থাকছেই। যা অনেক ক্ষেত্রে চাকরি পেতে মূখ্য ভুমিকা পালন করে। এছাড়াও পড়ার বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত চাকরি করলে অনেক সময় বাস্তব অভিজ্ঞতার কারণে পড়াশোনার কাজেও সাহায্য হয়। পড়ার বিষয়গুলো বাস্তবে যাচাইয়ের সুযোগ থাকে বিধায় এ সম্পর্কে ব্যবহারিক ধারণা অর্জিত হয় এবং সেই পেশায় নিয়োজিত কর্মীদের থেকেও এক্ষেত্রে অনেক সময় সাহায্য পাওয়া যায়।

সময় ও পরিশ্রমের দিকে খেয়াল রাখা

পার্ট টাইম চাকরিই সাধারণত একজনের জীবনের মূল লক্ষ্য হয় না। তাই কোনো পার্ট টাইম চাকরি যদি কারো সারাদিনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের সময় নিয়ে নেয় সেক্ষেত্রে ঐ চাকরি না করাই ভালো। একই সাথে ওই চাকরি একজনকে যদি খুব বেশি ক্লান্ত করে ফেলে এবং দৈনন্দিন জীবনে আরো নানাবিধ ব্যাঘাত ঘটায় তাহলেও সেই চাকরি করা উচিত নয়।  

নিজের প্রয়োজনীয় কাজের পরে সময় থাকলেই পার্ট টাইম চাকরি করা উচিত। নাহলে সেই চাকরিতে অনেক বেশি পরিশ্রমের ফলে তা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার মানসিকতা বা শক্তিও নষ্ট করে ফেলে বলে অনেক কাজই পার্ট টাইম  চাকরির জন্য করা সম্ভব হয় না।

তাই পার্ট টাইম চাকরি শুরু করার আগে খেয়াল রাখতে হবে যেনো তা নিজের অন্যান্য কাজের সময়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়। এবং একই সাথে কারো অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।

অতিরিক্ত কম বেতনে কাজ না করা

পার্ট টাইম চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে অনেক প্রতিষ্ঠানেরই একটি চেষ্টা থাকে যে, তাদের দিয়ে অনেক বেশি কাজ করিয়ে তুলনামূলক কম পারিশ্রমিক দেওয়ার। এর একটি বড় কারণ হলো চাকরিজীবীদের উদাসীনতা এবং অপারগতা।

যার ফলে নিয়োগদাতারাও পার্ট টাইম চাকরিজীবীদের সঠিক বেতন না দিয়ে তাদের দিয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করানোর সুযোগ পেয়ে যায়। তাই এ ধরনের চাকরিতে কাজ অনুযায়ী সঠিক বেতন না পেলে চাকরিটি করা উচিত নয়

যেকোনো বিষয়ের শিক্ষার্থীর জন্য সেরা কিছু পার্ট টাইম চাকরি

নিজের বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ চাকরি করাটাই শিক্ষার্থীদের পক্ষ্যে উত্তম। কিন্তু আমাদের দেশে চাকরির বাজারে নিজের বিষয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ পার্ট টাইম চাকরি পাওয়াটা সবসময় খুব একটা সহজ হয় না। সেকারণে অনেককেই অন্যান্য অনেক ধরনের পার্ট টাইম চাকরি করতে দেখা যায়। এখানে এ ধরনের সেরা কিছু পার্ট টাইম চাকরি ও সেগুলোর ব্যাপারে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হলো।

ছাত্রজীবনের সেরা ৮ টি পার্ট টাইম চাকরি

প্রাইভেট টিউটর

ডেলিভারি ম্যান

ডাটা এন্ট্রি

কন্টেন্ট রাইটিং

ফটোগ্রাফি 

রাইড শেয়ারিং

গ্রাফিক্স ডিজাইন

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার

প্রাইভেট টিউটর

প্রাইভেট টিউটর

প্রাইভেট টিউটর হিসেবে পার্ট টাইম চাকরি আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশই প্রাইভেট টিউটর হিসেবে পার্ট টাইম কাজ করছে। অভিভাবকরাও সাধারণত বাচ্চাদের পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কাছেই পড়াতে চান যাতে করে সাম্প্রতিক সময়ের পড়ার ধরন এবং বিষয়গুলো নিয়ে সন্তানেরা ওয়াকিবহাল থাকে।

শিক্ষকতা সবসময়ই একটি মহান পেশা। সেই সাথে এটিকে বেশ সম্মানজনক পেশা হিসেবেও গণ্য করা যায়। প্রাইভেট টিউটর হিসেবে কাজ শুরু করলে একদিকে যেমন সম্মান পাওয়া যায় এবং পাশাপাশি শিক্ষক হিসেবেও পরিচিতি বৃদ্ধি পায়, অন্যদিকে ছাত্র পড়াতে গিয়ে কোনো শিক্ষার্থীর নিজের পড়াশোনার চর্চাটাও বেশ পোক্ত হয়।

হোম টিউটর হিসেবে কাজ করলে সাধারণত খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয় না। তাছাড়াও নিজের পড়ার পাশাপাশি স্টুডেন্ট পড়ানো যায় বলে সময়ের সদ্ব্যবহারও হয় বেশ ভালোভাবে। কেউ চাইলে তার চাহিদা ও সময় অনুযায়ী ছাত্রের সংখ্যা বাড়িয়ে অধিক উপার্জনও করতে পারে। এসব কারণেই প্রাইভেট টিউটর হিসেবে পার্ট টাইম চাকরি খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

ডেলিভারি ম্যান

ডেলিভারি ম্যান

বর্তমানে অনলাইন শপিং-এর প্রতি মানুষের ঝোঁক দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নাগরিক ব্যস্ততার মাঝে অনলাইন শপিং-এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অথবা শখের কেনাকাটা আমরা ঘরে বসেই সেরে নিতে পারি। যা আমাদের ব্যস্ত জীবনকে অনেক সহজ করে তুলেছে। পাশাপাশি অনলাইন শপিং-এর কারণে নতুন একটি জীবিকার উদ্ভব ঘটেছে। অনলাইন কেনাকাটায় ডেলিভারির জন্য ডেলিভারি ম্যান-এর কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।

কেউ অনলাইনে কোনো পণ্যের অর্ডার করলে তা সেই ক্রেতার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে একজন মানুষের প্রয়োজন হয়। ডেলিভারি ম্যানরা এই দায়িত্বটিই পালন করে থাকেন। বর্তমানে একজনের একটি সাইকেল অথবা মোটরসাইকেল থাকলেই সে ডেলিভারি ম্যান হিসেবে পার্ট টাইম পেশা শুরু করতে পারে। তাই বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থীই পড়াশোনার ফাঁকে কাজটি করছেন।

এখন অনেক কুরিয়ার সার্ভিস এবং অনলাইন খাবার ডেলিভারি অ্যাপে কিংবা যেকোনো অনলাইন শপে ডেলিভারি ম্যান হিসেবে পার্ট টাইম চাকরি নেয়া যায়। এই চাকরিগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চাইলে নিজের সময় অনুযায়ী কাজ ঠিক করে ডেলিভারি দিতে যাওয়ার সুযোগ থাকে। সেকারণে ছাত্রজীবনে এটি পার্ট টাইম চাকরি হিসেবে একটি অন্যতম সেরা পছন্দ।

ডাটা এন্ট্রি

ডাটা এন্ট্রি

এটি খুবই সহজ এবং একইসাথে বেশ জনপ্রিয় একটি পার্ট টাইম চাকরি। এই চাকরির জন্য সাধারণত একটি ব্যক্তিগত কম্পিউটার থাকাই যথেষ্ট। এছাড়া তেমন কোনো ব্যক্তিগত দক্ষতার প্রয়োজন হয় না এই চাকরিতে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেই তাদের বিভিন্ন হিসাব-নিকাশগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে হাতেই লেখা হয়ে থাকে। এই তথ্যগুলোই প্রায় সবসময়ই কোনো ডাটাবেজে অথবা সফট কপি হিসেবে সংরক্ষণ করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। ডাটা এন্ট্রি পেশায় এই কাজটিই সাধারণত করতে হয়।

ডাটা এন্ট্রির কাজটি প্রয়োজনে নিজের ঘরে বসে বা কোনো কোম্পানীর অফিসে বসে, দুইভাবেই করা যায়। এই কাজে শুধুমাত্র হাতে লেখা কাগজ থেকে দেখে দেখে তথ্য কম্পিউটারে টাইপ করতে হয়। তাই এতে খুব বেশি দক্ষতার প্রয়োজন নেই। এছাড়াও এই পেশায় কাজের পরিমাণ অনুযায়ী বেতন দেয়া হয় বলে নিজের দরকার বুঝে কাজ করার সুযোগ থাকে। তাই ডাটা এন্ট্রি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় একটি পার্ট টাইম চাকরি।

কন্টেন্ট রাইটিং

কন্টেন্ট রাইটিং

লেখালেখির প্রতি যাদের আগ্রহ রয়েছে তাদের জন্য কন্টেন্ট রাইটিং একটি চমৎকার পার্ট টাইম চাকরি। বর্তমানে চাকরিক্ষেত্রে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই কন্টেন্ট রাইটিং-এর সুযোগ রয়েছে। তাই কোনো একটি ভাষায় লেখার দক্ষতা থাকলেই আপনি কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে সহজেই পার্ট টাইম চাকরি করতে পারবেন।

ইন্টারনেটে অসংখ্য ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে প্রতিনিয়ত নানা তথ্য প্রকাশিত হয়। এসকল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো আর্টিকেল বা প্রবন্ধ আকারে লেখার প্রয়োজন পরে। কন্টেন্ট রাইটাররা সাধারণত এই আর্টিকেলগুলোই লিখে থাকেন। এই কাজের জন্য প্রায়ই বিভিন্ন নতুন বিষয়ের উপরে পড়াশোনা করার অভ্যাস থাকতে হয়। সেই সাথে লেখালেখির কিছু অভিজ্ঞতারও দরকার পরে।

অনেক ক্ষেত্রে ঘরে বসেই কন্টেন্ট রাইটিং-এর কাজ করার সুযোগ থাকে। ফলে নিজের মতো সময় বের করে নিয়ে নিয়মিত লেখালেখির মাধ্যমে এই কাজটি চালিয়ে নেয়া যায়। এই পার্ট টাইম চাকরিতে নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে পড়াশোনা করতে হয় বলে নতুন অনেক তথ্যও জানার সুযোগ থাকে, যা একজন শিক্ষার্থীর জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে বেশ সহায়ক।

ফটোগ্রাফি

ফটোগ্রাফি

অনেকেই শখের বশে ফটোগ্রাফি করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে উপার্জনের সুযোগও তৈরি হয়েছে। ফটোগ্রাফির মাধ্যমে মূলত দুইভাবে উপার্জন করা যায়। অনলাইনে ছবি বিক্রি করার মাধ্যমে। অথবা কোনো অনুষ্ঠানের বা নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির ছবি তুলে দেওয়ার মাধ্যমে।

অনেকেরই তাদের নিত্য চলার পথে বা রোজকার দিনযাপনের নানা মুহূর্তের কিংবা কোনো সুন্দর প্রাকৃতিক অথবা দর্শনীয় কোনো মনোরম স্থানে বেড়াতে গেলে ছবি তোলার অভ্যাস রয়েছে। এর মধ্যে ভালো ফ্রেমিং এবং ভালো রেজুলেশনের ছবিগুলো চাইলে অনলাইনে বিক্রির চেষ্টা করা যায়।

বর্তমানে অনেকগুলো ওয়েবসাইটেই নির্দিষ্ট মূল্যের বিনিময়ে ছবি বিক্রি করার সুযোগ রয়েছে। ছবিতে দাম নির্ধারণ করে ছবি আপলোড করে দিলে কেউ যদি কোনো ছবি পছন্দ করে থাকে, তবে সেই ছবি বিক্রি হয়ে যেতে পারে, এবং ওই ছবির  নির্ধারণকৃত মূল্য সরাসরি ফটোগ্রাফারের একাউন্টে যুক্ত হয়ে যায়। istock, shutterstock সহ আরো বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রি করা যায়।

ফটোগ্রাফির মাধ্যমে পার্ট টাইম কাজ করে অর্থ উপার্জনের আরেকটি উপায় হলো কোনো অনুষ্ঠানের ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করা। বিয়ে, পুরষ্কার বিতরণী, জন্মদিনসহ অনেক অনুষ্ঠানেই বর্তমানে পেশাদার ফটোগ্রাফার দিয়ে ছবি তোলানো হয়। তাই কেউ যদি ভালো ছবি তুলতে পারে, সে চাইলে এসব অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করতে পারে। আবার কোনো নির্দিষ্ট ব্যাক্তির ছবি তুলে পোর্টফোলিও তৈরি করেও একজন ফটোগ্রাফার আয় করতে পারে। 

এই পেশাটিতে অত বেশি চাপ না থাকাতে পড়াশোনার পাশাপাশি এটি চালিয়ে যাওয়া খুবই সহজ। সেইসাথে এই পেশায় প্রচুর টাকা উপার্জনের সুযোগ রয়েছে বলে আজকাল অনেক শিক্ষার্থীই ফটোগ্রাফি পেশায় আগ্রহী হয়ে উঠছে।  

রাইড শেয়ারিং

রাইড শেয়ারিং

আমাদের দেশে, বিশেষ করে ঢাকা শহরে যানজট একটি অনেক বড় সমস্যা। আর এই যানজটে অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য একটি অন্যতম উপযোগী বাহন হচ্ছে মোটরসাইকেল। অন্যান্য যানের তুলনায় আকারে ছোট বলে রাস্তা-ঘাটে বেশ স্বল্প জায়গা দিয়ে সহজেই এটি চালানো যায়। এই কারণে সময় এতো যানজটে আটকে না থেকে অনেকেই এখন নিজের যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল কিনে নিচ্ছেন, ফলে এখন বিভিন্ন শহরে প্রচুর মোটরসাইকেল দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তবুও সকলের তো আর নিজস্ব মোটরসাইকেল থাকে না আবার কারো মোটরসাইকেল থাকলেও ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় সবাই মোটরসাইকেল নিয়ে যাতায়াত করতে পারেন না। সেকারণে বর্তমানে নতুন একটি পেশা হিসেবে এসছে মোটরসাইকেল রাইডিং। এক্ষেত্রে রাইডার তার আরোহীকে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেন। এখন বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং অ্যাপ রয়েছে। আপনি চাইলেই এসব অ্যাপ মোবাঈলে ইন্সটল করে নিয়ে সহজে কোনো মোটরসাইকেল রাইডার খুঁজে নিতে পারবেন, এবং সহজে গন্তব্যে পৌঁছে অ্যাপ-এ নির্ধারণকৃত মূল্য রাইডারকে পরিশোধ করে দিতে পারবেন। বাইকে সাধারণ সিএনজি অথবা গাড়ীর তুলনায় কম খরচ হয় এবং দ্রুত যাতায়াত করা যায় বলে অনেকেই এভাবে যাতায়াত করছেন। তাই বর্তমানে কারো নিজস্ব একটি মোটরসাইকেল এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে তিনি সহজেই রাইড শেয়ারিং শুরু করতে পারেন। এতে সময়ের তেমন কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই আর কারো কাছে সেভাবে জবাবদিহিতারও প্রয়োজন পরেনা বলে নিজের ইচ্ছা মত সময়ে কাজ করা যায়। সেকারণে এটি শিক্ষার্থীদের জন্য পার্ট টাইম চাকরি হিসেবে একটি ভালো সুযোগ।

গ্রাফিক্স ডিজাইন

গ্রাফিক্স ডিজাইন

গ্রাফিক্স ডিজাইনার পৃথিবীর দামী পেশাগুলোর মধ্যে একটি। বর্তমানে এ কাজের অনেক বেশি চাহিদা থাকায় একজন দক্ষ গ্রাফিক্স ডিজাইনার অনেক উপার্জন করতে পারেন। গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি সৃজনশীল কাজ এবং এতে দক্ষতাও প্রয়োজন। যার মধ্যে সৃজনশীলতা এবং দক্ষতা যত বেশি থাকবে, তার পক্ষে এই পেশায় তত ভালো করা সম্ভব।

এখন অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের দরকার হয়। কোনো কোম্পানীর লোগো ডিজাইন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইভেন্টের পোস্টার ডিজাইন, টিশার্ট ডিজাইন, ম্যাগাজিন ডিজাইন, ব্যানার ডিজাইনের মতো কাজগুলো সাধারণত গ্রাফিক্স ডিজাইনারই করে থাকে। এডোবি ফটোশপ, এডোবি ইলাস্ট্রেটরসহ অনেকগুলো এডিটিং অ্যাপের সাহায্যে এই কাজগুলো করা যায়। এগুলো ব্যবহারে দক্ষ হলেই একজন গ্রাফিক্স ডিজাইন-এর কাজ শুরু করতে পারে।

নির্দিষ্ট কোনো কোম্পানীর হয়ে অথবা ফ্রিল্যান্সিং-এর মাধ্যমে, দুই ভাবেই গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করা যায়। এই কাজে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনেকটা সময় দেয়ার প্রয়োজন হয় না। ফলে শিক্ষার্থীরা নিজের সুবিধামতো কাজ করতে পারে। তাছাড়া ফ্রীল্যান্সার হিসেবে কাজ করলে নিজের সময় মতো কোনো কাজ নিয়ে সে কাজের ডেডলাইন অনুযায়ী শেষ করার স্বাধীনতাও থাকে। সব মিলিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং ছাত্রজীবনের জন্য অন্যতম সেরা একটি পার্ট টাইম চাকরি।

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার

প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই কোনো না কোনো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। আর এই বিষয়টি মাথায় রেখেই ছোট বড় সকল কোম্পানী তাদের মার্কেটিং এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন প্রচারণা চালায়। এখানে একই সাথে পণ্য বিক্রি থেকে শুরু করে গ্রাহকদের পণ্য সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানানো, তাদের অভিযোগ-আপত্তি শোনাসহ আরো নানা কাজ পরিচালনা করা হয়।

এই কাজগুলো করার জন্য অনেক কোম্পানীই পার্ট টাইম চাকরিজীবী নিয়োগ দেয়, যারা এসকল সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইলগুলো পরিচালনা করে। এই কাজটির জন্য শুধুমাত্র বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে দক্ষ হলেই হয়। বাড়তি কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। এছাড়াও এটি যেকোনো জায়গায় যেকোনো পরিস্থিতিতে করা সম্ভব হয় বলে যেকেউ সহজেই করতে পারে। তাই ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের চাকরি একটি ভালো সুযোগ।

শেষকথা

টাকার প্রয়োজনে হোক বা নিজেকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য হোক, ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করার ইচ্ছা প্রায় সবারই থাকে। কিন্তু কোন চাকরিতে কী প্রয়োজন অথবা কোন চাকরি করা উচিত সে সম্পর্কে সঠিক জানা না থার ফলে অনেকেই পার্ট টাইম চাকরি চালিয়ে যেতে পারে না। তাই এখানে সেরা কিছু পার্ট টাইম চাকরি ও সেগুলো সম্পর্কে কিছু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। লেখাটি থেকে প্রাপ্ত ধারণা ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করতে কাজে লাগবে বলে আমরা আশাবাদী। 

 

রিলেটেড আর্টিকেল গুলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button