জীবন ও জীবিকাব্যবসা

অল্প টাকায় লাভজনক ব্যবসা শুরু করে হয়ে উঠুন স্বাবলম্বী

অল্প পুঁজির ব্যবসার আইডিয়া যা আপনাকে করে তুলতে পারে লাভবান

ব্যবসা হল এক ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ড, বুদ্ধিমত্তা এবং সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে সঠিক এবং বৈধ পথে মুনাফা অর্জনের আশায় মানুষের বস্তুগত এবং অবস্তুগত অভাব পুরণের কার্যক্রম। বর্তমান বাজারে চাকরির তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয়ে হিমশিম খাচ্ছেন লাখো তরুণ-তরুণী। আর এ সকল কারণে প্রায় সকল দেশের সরকার তাদের বেকারত্বের হার কমাতে এবং আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তরুণ তরুণীদের চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন। এক্ষেত্রে যেকোনো দেশের চাকরির বাজারের চাপ কমবে এবং সৃষ্টি হবে নতুন আত্ম-কর্মসংস্থান। এছাড়াও প্রতিটি ঘরে ঘরে নব উদ্যোক্তা তৈরি হবে, যা ঘুচাবে বেকারত্বের হার।

আজকে আমরা আলোচনা করবো ২০২০ সালের অল্প পুঁজি বা অল্প টাকায় কিছু ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে, যার মাধ্যমে আপনি নিজেও হয়ে উঠতে পারেন একজন সফল উদ্যোক্তা।

২০২০ সালের অল্প পুঁজি বা অল্প টাকায় ১৫ টি লাভজনক ব্যবসা

নং

ব্যবসার নাম

অনলাইন ব্লগ

অনলাইনে ইংরেজি শিখিয়ে আয়
ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ করে আয়

অনলাইন কোর্স বিক্রয় করে আয়

মোবাইল অ্যাপ বানিয়ে আয়

ফুড কার্ট ব্যবসা
মাশরুম চাষ ব্যবসা

ফটোগ্রাফি

ফলের জুস ব্যবসা
১০হস্তশিল্পের ব্যবসা

১১

টি-শার্ট ব্যবসা

১২

ছাগল পালন ব্যবসা
১৩ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা
১৪চা পাতার ব্যবসা
১৫ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যবসা

১। অনলাইন ব্লগ

অল্প টাকায় ব্যবসা অনলাইন ব্লগ লিখে আয়

সৃষ্টিশীল এবং সৃজনশীল মনোভাবের মানুষ এক সময় তাদের মনের ভাব প্রকাশের জন্য ব্লগিং করে থাকতো। তবে যুগের পরিবর্তনের সাথে ব্লগিংকে বর্তমানে আয়ের একটি কার্যকরী মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। আপনি এটিকে পেশা হিসেবেও বেছে নিতে পারেন। যত দিন যাবে ধীরে ধীরে এর চাহিদা বাড়বে বই কমবে না। ব্লগিং থেকে অর্থ উপার্জন করার ক্ষেত্রে আপনি নিজের ওয়েবসাইটে লিখেও আয় করতে পারবেন, আবার ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করেও আয় করতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট, যেমনঃ Progress Bangladesh এ আপনি আপনার লেখা জমা দিয়েও আয় করতে পারবেন।

তবে এক্ষেত্রে আপনাকে সুদক্ষ হয়ে মাঠে নামতে হবে, কারণ আপনি সৃজনশীলতার প্রকাশ করতে না পারলে সম্ভাব্য আয়ে বাধাপ্রাপ্ত হবেন।

ব্লগিং থেকে আয়ের কিছু উপায়ঃ

১) বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক থেকে

২) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

৩) ব্যবসার কন্টেন্ট বিপণন

৪) অর্থ প্রদত্ত পর্যালোচনা লেখা

৫) পরিসেবা বিক্রয়

৬) বিজ্ঞাপনের জায়গা বিক্রয়

অনলাইন ব্লগিংয়ের জন্য আনুমানিক মূলধন ১০-১৫,০০০ টাকা। মুনাফা নির্ভর করছে আপনার সঠিক শ্রম এবং প্ল্যানিংয়ের উপরে।

২। অনলাইনে ইংরেজি শিখিয়ে আয়

যদি আপনি ইংরেজিতে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে আয়ের একটি অত্যন্ত ভালো মাধ্যম তৈরি হতে পারে। ইংরেজি ভাষাকে বর্তমানে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ধরা হয়ে থাকে; এবং যেকোনো ক্ষেত্রে এই ভাষার চাহিদা প্রচুর। এই ভাষাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগিয়ে আপনি গড়ে তুলতে পারেন আয়ের এক বিরাট উৎস। বর্তমানে অনলাইনে ইউটিউবের মতো প্রচুর প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেগুলোতে আপনি আপনার ইংরেজি ক্লাস করাতে পারবেন। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে লাইভ ক্লাস করিয়েও উপার্জন করতে পারেন খুব সহজেই।

আনুমানিক মূলধন ৫,০০০-১০,০০০ টাকা, এবং সম্ভাব্য আয় নির্ভর করছে আপনার দক্ষতার উপরে।

৩। ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ করে আয়

ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ করে আয়

অল্প পুঁজি বা অল্প টাকার ব্যবসার মধ্যে ইউটিউব থেকে আয় হতে পারে আপনার প্যাসিভ আয়ের একটি মাধ্যম। একসময় ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জন খুব সহজেই করা যেত। কিন্তু বর্তমানে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। আর এসব নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি আপনার প্রয়োজন একটি কম্পিউটার, একটি ভালো ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল অথবা একটি ভালো ক্যামেরা।

ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে ভালো কন্টেন্ট বানিয়ে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করতে পারেন, এবং এখান থেকে গুগল আডসেন্স অথবা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। ইউটিউব থেকে আয়ের আনুমানিক মূলধন ৫,০০০-১০,০০০ টাকা, এবং সম্ভাব্য আয় নির্ভর করছে আপনার দক্ষতার উপরে। অল্প টাকায় অনলাইন থেকে আয় করার এটি একটি ভালো মাধ্যম।

৪। অনলাইন কোর্স বিক্রয় করে আয়

অনলাইনে কোর্স বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে বলা সম্ভব আপনি কেমন আয় করবেন, আপনি যেসব বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়গুলোতে ধারাবাহিকভাবে একটি ভিডিও কোর্স বানিয়ে ফেলে সেগুলো সঠিকভাবে এডিট করে আপনি বিক্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারেন বিশ্বের বড় বড় অনলাইন শিক্ষার প্ল্যাটফর্মগুলোতে।

যেমনঃ UDEMY, Skillshare,Coursera, Edx এর মতো ওয়েবসাইটগুলোতে। এসব প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি ক্রেতা এবং বিক্রেতার সমাগম রয়েছে, তারাই মূলত তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এসব ক্রয় করে থাকে। আর অল্প টাকায় ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনার দক্ষতাকে কাজে লাগানোটাই এই ব্যবসার সফলতার মূল মাধ্যম।

আপনার সঠিক দক্ষতা বিবেচনা করেই সেইসব প্ল্যাটফর্ম আপনাকে কোর্স বিক্রয় করার অনুমতি দেবে।

৫। মোবাইল অ্যাপ বানিয়ে আয়

মোবাইল অ্যাপ বানিয়ে আয়

বিশ্বে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের বিস্তৃতির সাথে সাথে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গড়ে একজন মানুষের মোবাইল ফোনে ২০-২৫ টি অ্যাপ ইন্সটল থাকেই। প্রয়োজন অনুযায়ী এর কম-বেশিও হয়ে থাকে। সুতরাং এই অ্যাপ-এর চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে এটি হতে পারে আপনার আয়ের এক সুবর্ণ সুযোগ।

যদিও প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক বেশি, তারপরেও আপনি যদি দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেন তাহলে এটি হতে পারে একটি ভালো আয়ের মাধ্যম। এজন্য আপনাকে প্রথমে সুদক্ষ হয়ে শুরু করতে হবে। আর অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শুরু করতে হলে আপনার থাকতে হবে একটি মোটামুটি ভালো মানের কম্পিউটার। অল্প পুঁজিতে আপনি শুরু করতে পারেন মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট। আনুমানিক মুনাফার পরিমাণ নির্ভর করছে আপনার দক্ষতার উপরে।

৬। ফুড কার্ট ব্যবসা

বর্তমানে অল্প পুঁজির ব্যবসার মধ্যে ফুড কার্ট ব্যবসা অল্প পুঁজিতে একটি অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা। অত্যন্ত অল্প পুঁজি নিয়ে নিজেই শুরু করতে পারেন আপনার এলাকায় একটি ফুড কার্ট ব্যবসা। এটির জন্য তেমন পরিশ্রমেরও প্রয়োজন পরবে না। ছাত্রদের জন্য ফুড কার্ট ব্যবসা পড়াশোনার পাশাপাশি আয়ের এক সুবর্ণ সুযোগ।

খুব সীমিত পরিমাণে বিনিয়োগ করে অল্প জনবল নিয়েই আপনি শুরু করতে পারেন এই ফুড কার্ট ব্যবসা। বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট-ফুডসহ বিক্রয় করতে পারেন চাহিদা সম্পন্ন খাবার। তবে এক্ষেত্রে আপনার স্থান ও খাবারের মান সঠিকভাবে বিবেচনায় রাখতে হবে। তাহলেই আপনি এটির মাধ্যমে ভালো পরিমাণে আয় করতে পারবেন। আনুমানিক মূলধন ১০,০০০-৩০,০০০ টাকা, এবং সম্ভাব্য আয় ৫,০০০-১০,০০০ টাকা।

৭। মাশরুম চাষ ব্যবসা

মাশরুম চাষ ব্যবসা

মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর, ও ঔষধি গুণসম্পন্ন খাবার, এবং অল্প পুঁজির ব্যবসার মধ্যে মাশরুম চাষ অন্যতম লাভজনক একটি ব্যবসা। সঠিক প্রশিক্ষণ নিয়ে কোনরকম আবাদি ফসলের জমি ছাড়াই বসত বাড়ির অব্যবহৃত জায়গায় খুব সহজেই করা যায় মাশরুম চাষ।

আর আমাদের দেশের আবহাওয়া মাশরুম চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় খুব সহজেই শুরু করা যায় এই ব্যবসা। যেকোনো পেশার মানুষ তাদের পেশার পাশাপাশি করতে পারে মাশরুম চাষ। মাশরুম চাষ প্রথমে ৫,০০০-৫০,০০০ টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন। আর বাজারের অন্য সকল সবজির থেকে মাশরুমের দাম বেশি হওয়ার কারণে এ ব্যবসায় লাভও অনেক বেশি। আর এ কারণেই এই ব্যবসা হতে পারে কম বিনিয়োগে লাভজনক একটি ব্যবসা।

৮। ফটোগ্রাফি

ফটোগ্রাফিকে মুক্ত পেশার মধ্যে অন্যতম ধরা যায়। একটি সুন্দর মুহূর্তকে ছবির মাধ্যমে ধরে রাখার উপায় হল ফটোগ্রাফি। আপনি চাইলেই এটি পার্ট-টাইম অথবা ফুল টাইম হিসেবেও করতে পারেন। এজন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি ক্যামেরা, প্রথমে আপনি একটি মধ্যমানের ক্যামেরা দিয়ে শিখে নিয়ে ধীরে ধীরে বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট টিমের সাথে কাজ করে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করে নিতে পারেন। এরপর আপনার ভালো ক্যামেরার প্রয়োজন পরতে পারে।  এছাড়াও আপনি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং সুন্দর সুন্দর পশু-পাখির ছবি তুলেও বিক্রয় করতে পারবেন।  ফটোগ্রাফি শুরু করতে প্রথমত আপনার ৪০,০০০-৫০,০০০ টাকার মধ্যে একটি ক্যামেরা নিয়ে নিলেই চলবে। তারপর ধীরে ধীরে দক্ষতা অর্জনের সাথে সাথে ভালো মানের ক্যামেরা ক্রয় করতে পারেন, সম্ভাব্য আয় মাসে শুরুতে ১০,০০০০-১৫,০০০০ হতে পারে।

৯। ফলের জুস ব্যবসা

ফলের জুস ব্যবসা

অতিথি আপ্যায়ন হোক, ক্লান্তি মেটানো হোক বা নিজের শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটানোই হোক, ফলের জুসের চাহিদা কখনও কম ছিলো না, বরং ধীরে ধীরে এ চাহিদা বাড়তে থাকবে। ডাক্তাররা সবসময় ফলের জুস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সুস্থ বা অসুস্থ সকলের জন্যই এটা দরকারী।

আর ফলের জুসের ব্যবসা আপনি দুই ভাবে শুরু করতে পারেনঃ ১। ফুড কার্ট এর মতো করে, ২। দোকান ঘর নিয়ে।

৯.১। ফুড কার্ট পদ্ধতিতেঃ

ফুড কার্ট এর মতো করে ব্যবসা করতে চাইলে আপনার কাঁচামাল কেনা থেকে শুরু করে বাকি সরঞ্জাম ক্রয় করতে পুঁজির প্রয়োজন পরতে পারে ১৫,০০০-২০,০০০ টাকা। এবং লাভের পরিমাণ আসতে পারে ৭,০০০-৮,০০০ টাকা।

৯.২। দোকান ঘর নিয়েঃ

দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে বা নিজস্ব দোকান ঘরের মাধ্যমে শুরু করতে চাইলেও পুঁজির পরিমাণটা একটু বেশি লাগতে পারে। কারণ, দোকানের বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারীর বেতন, এবং আনুষাঙ্গিক খরচসহ একটু বেশি লাগাটাই স্বাভাবিক। তবে এখানে স্থানভেদে খরচের পরিমাণটা নির্ধারণ করা সম্ভব।

এই দুই প্রক্রিয়ার মধ্যে আপনি যেটিই বেছে নেন না কেনো দুটির জন্যই আপনাকে সঠিকভাবে স্থান নির্বাচন এবং বাজার যাচাই বাছাই করে নিতে হবে। আর তাহলেই আপনি অল্প টাকায় ফলের জুসের ব্যবসা করে সফল হতে পারবেন।

১০। হস্তশিল্পের ব্যবসা

হস্তশিল্পের ব্যবসা

বাংলাদেশসহ বহির্বিশ্বে হস্তশিল্পের বিপুল চাহিদা রয়েছে। মূলত সৌখিন মানুষরা তাদের আবাসস্থল সুন্দর করে সাজাতে হস্তশিল্প ক্রয় করে থাকেন। আমাদের দেশে গ্রাম-বাংলার অগণিত নারী এবং বেকার পুরুষগণ তাদের অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে এই হস্তশিল্পের চাহিদা মেটাচ্ছেন।

আর আপনি অল্প টাকায় হস্তশিল্পের ব্যবসা করতে চাইলে সরাসরি তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তাদের থেকে সরাসরি পণ্য সংগ্রহ করার পরে এগুলো আপনি নিজের দোকানে অথবা কোন মেলাতে স্টল নিয়ে বিক্রয় করতে পারবেন। এতে করে তারাও পণ্যের সঠিক দাম পাবে, আপনিও ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। হস্তশিল্পের ব্যবসায় আনুমানিক মূলধন পরতে পারে ৫০,০০০-১,০০,০০০ টাকা, এবং সম্ভাব্য মুনাফার পরিমাণ ২০,০০০-৩০,০০০ টাকা প্রতি মাসে।

১১। টি-শার্ট ব্যবসা

টি-শার্টের ব্যবসা হলো কম বা অল্প পুঁজির ব্যবসার মধ্যে অন্যতম একটি ব্যবসা। ছাত্র এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের ব্যবসার জন্য এটি একটি ভালো উপায়। তবে টি-শার্ট ব্যবসা শুরু করতে হলে উদ্যোক্তাদের কিছু বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে, যেমনঃ মার্কেট সম্পর্কে ধারণা, টি-শার্টের ডিজাইন, মূল্য ইত্যাদি।

এসকল বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকলে বা মার্কেটে কখন কি চলছে সেটি বুঝতে না পারলে ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। আপনি সরাসরি পাইকারি দোকানিদের কাছ থেকে টি-শার্ট নিয়ে এসে খুচরা দোকানির কাছে বিক্রয় করতে পারেন। টি-শার্ট ব্যবসা শুরু করতে আনুমানিক পুঁজি ২০,০০০-৩০,০০০ টাকা, আর সম্ভাব্য মুনাফা ৭,০০০-১০,০০০  টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

১২। ছাগল পালন ব্যবসা

ছাগল পালন ব্যবসা

ছাগলকে মূলত গরীবের গাভী বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। অল্প টাকার ব্যবসার মধ্যে ছাগল পালন অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসা বলে ধরা হয়ে থাকে। মূলত গ্রাম বাংলার মাঠ এবং বাড়ির আঙ্গিনাতে স্বল্প পরিসরে ছাগল পালন করা হয়ে থাকে, তবে ব্যবসায়িক ভিত্তিতেও এটি অত্যন্ত লাভজনক বলে ধরা হয়। ছাগল পালন করে গ্রাম বাংলার মানুষ নিজেদের খাবারের চাহিদা মেটানো থেকে শুরু করে, ছাগলের খামার দিয়ে ছাগল পালনকে ব্যবসায় রুপান্তর করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছে। ব্যবসায়িকভাবে ছাগল পালনের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য মূলধনের পরিমাণ ২০,০০০-৩০,০০০ টাকা, এবং সম্ভাব্য মুনাফার পরিমাণ ৫,০০০-৭,০০০ টাকা এবং সাথে ছাগলের মালিকও হবেন।

১৩। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা

বর্তমানে লাভজনক ব্যবসার মধ্যে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত লাভজনক বলে শোনা যাচ্ছে, এবং ২০০২ সালের পর থেকে এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর উদ্যোক্তাদের জন্য এটি এক সুবর্ণ সুযোগ। তবে এটিতে আবার প্রতিযোগিতাও রয়েছে সমপরিমাণে। এজন্য এই বিষয়ে আপনার একটি ছোট কোর্স করে নেয়া ভালো, যাতে করে এই বিষয়ে আপনি দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন এবং আপনার ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে কম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অল্প পুঁজির ব্যবসার মধ্যে পরলেও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা শুরু করতে আনুমানিক মূলধনের পরিমাণ ১৫,০০,০০০-২০,০০,০০০  টাকা, এবং সম্ভাব্য আয় ৩০,০০০-৪০,০০০ টাকা।

১৪। চা পাতার ব্যবসা

চা পাতার ব্যবসা

অল্প পুঁজি বা অল্প টাকার ব্যবসার মধ্যে চা পাতার ব্যবসা হল লাভজনক একটি ব্যবসা। বর্তমানে দেশে প্রচুর উদ্যোক্তা সরাসরি চা বাগান থেকে চা ক্রয় করে, প্রক্রিয়াজাতকরণের পরে তা স্থানীয় বাজারে বা দেশের বাইরে সরবরাহ করে থাকে। তবে পণ্যের সঠিক গুনগত মান বজায় রাখতে পারলে এবং সঠিকভাবে মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে চা পাতার ব্যবসা হয়ে উঠতে পারে দেশের বেকারত্ব নির্মূল করার এক দারুণ উপায়। চা পাতার ব্যবসা শুরু করতে আনুমানিক মূলধনের পরিমাণ ৩০,০০০-৫০,০০০ টাকা, এবং প্রতি মাসে সম্ভাব্য মুনাফার পরিমাণ  ১০,০০০-২০,০০০ টাকা। তবে এটি পুরোপুরি নির্ভর করছে স্থান, পণ্যের মান এবং মার্কেটিংয়ের উপরে।

১৫। ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যবসা

প্রতিটি দেশেই যেমন ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে ইমারতের সংখ্যা, ঠিক তেমনই এর সাথে সাথে বেড়ে চলেছে ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যবসার চাহিদা। প্রতিটি ইমারতের জন্যই প্রয়োজন সঠিক ডিজাইন বা নকশা। ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনি একটি ছোট কোর্স অথবা এর উপরে ডিপ্লোমা কোর্স করে শুরু করতে পারেন। কারণ আপনার রঙ, আলো, বিভিন্ন রকম ডিজাইন সম্পর্কে সৃষ্টিশীল হতে হবে, এর পাশাপাশি প্রতিযোগিতা একটু বেশি হওয়ায় সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন পরবে। ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যবসায় মূলধন আপনার পরিকল্পনা এবং আয়তনের উপর নির্ভর করবে।

শেষ কথা

উপরোক্ত প্রবন্ধটির মাধ্যমে আপনি আইডিয়া পেলেন অল্প টাকার ব্যবসা সম্পর্কে, যা থেকে আপনার ভালো পরিমাণে মুনাফা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। এসকল ব্যবসার মধ্যে থেকে আপনার স্থান, পরিবেশ, মূলধনের পরিমাণ এবং আপনার গ্রহণযোগ্যতা অনুযায়ী যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন। তবে যেকোনো ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে সঠিভাবে যাচাই-বাছাই করে নিয়ে শুরু করতে হবে। কারণ কোনো বিষয়ে যদি আপনি দক্ষ না হয়ে শুরু করতে চান তাহলে আপনি অসফল হতে পারেন। এমনকি আপনি সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা-ভিত্তিক ফ্রী কোর্স করে নিতে পারেন। যা থেকে যথেষ্ট পরিমাণে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া পেতে পারেন। পরিশেষে বলা যায়, আপনি যে ব্যবসাই শুরু করতে চান না কেনো, আপনার প্রয়োজন সঠিক জ্ঞান, দক্ষতা, কৌশল এবং মূলধন।

রিলেটেড আর্টিকেল গুলো

Back to top button