
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কি ধরনের মাস্ক ব্যবহার করা উচিৎ এবং মাস্ক বাবহারের নিয়মাবলী
চীনের উহান শহর থেকে ছরিয়ে পরা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ভাইরোলজিস্টরা যথেষ্ট সংশয়ে রয়েছে যে, মাস্ক ব্যাবহার এই ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে কতটা কার্যকরি! এ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে জাচ্ছেন গবেষকরা। চলুন জেনে নেয়া যাক করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কি ধরনের মাস্ক ব্যাবহার করা উচিৎ, কোন মাস্ক গুলো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সক্ষম এবং মাস্ক বাবহারের নিয়মাবলী যা আপনাকে সুরক্ষা প্রদান করবে।
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে কার্যকরী মাস্ক
বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের মাস্ক পাওয়া যায়, তবে ভাইরাস প্রতিরোধে সব ধরনের মাস্ক কার্যকরী নয়।
যেমন বিভিন্ন ধরনের কাপরের মাস্ক পাওয়া যায়, যেগুলো ধুলাবালি থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়, এছারাও বিভিন্ন ধরনের ফিল্টার যুক্ত, ২-৩ লেয়ার এর মাস্ক পাওয়া যায়, এবং কিছু নেট জাতিয় মাস্ক পাওয়া যায়, যেগুলো ভাইরাস প্রতিরোধে কোন শুরক্ষা দেয় না, কারন এসব মাস্ক এর ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে যথেষ্ট নয়। তবেঁ World Health Organization (WHO) এর বিশেষজ্ঞ দের মতে ভালো মানের মাস্ক ব্যাবহারে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই ঠেকানো সম্ভব।
বাজারে অনেক রকম মাস্কের মদ্ধেও ভালো মানের মাস্ক রয়েছে, যা করোনা ভাইরাস বা অন্যান্য ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে কার্যকরী, যেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলঃ
- সার্জিক্যাল মাস্ক বা ডিসপোজেবল মাস্ক.
- FFP1 মাস্ক
- N95 মাস্ক
- FFP2 মাস্ক
- FFP3 মাস্ক
এই সবগুলো মাস্ক ভাইরাস সংক্রমণে সহায়তা করে থাকে।
করোনা প্রতিরোধে সারজিকাল মাস্ক কতটুকু কার্যকরী?
সার্জিক্যাল মাস্ক সাধারনত চিকিৎসক, কর্মী, ও নার্সরা ব্যাবহার করে থাকে, এটি সংক্রমণ থেকে রক্ষা করলেও বাতাসে থাকা ছোট ছোট ধূলিকণা আটকাতে পারে না।
এটি সাময়িক সময়ের জন্য ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। এটি বায়ুকে ফিল্টার করতে পারেনা ঠিকঠাক, কারন এটি ঢিলেঢালা অবস্থায় থাকে, এবং সর্বোচ্চ ৩-৮ ঘণ্টার বেশি ব্যাবহার করা ঠিক না।
N95 মাস্ক কতটুকু কার্যকরী?
N95 মাস্ক সার্জিক্যাল মাস্ক এর মত নয়, এটি সার্জিক্যাল মাস্ক এর থেকে অধিক কার্যকর, কারন n95 মাস্ক ভেতরে এবং বাইরে দুই দিক থেকেই ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে,
N95 মাস্ক বাবহারের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যেমন প্রতিবার হাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধুতে হবে যেনও এটি পরার সময় ভাইরাস মাস্ক এর আশেপাশে না পৌছাতে পারে। N95 মাস্ক ৯৫% পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সক্ষম।
FFP1 মাস্ক কতটুকু কার্যকরী?
এটি বাড়িতে ব্যাবহার উপযোগী এবং পরিস্রাবণ ৮০% এবং ছিদ্র ২০% হয়ে থাকে। এটি ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে ব্যাবহার করা যেতে পারে।
FFP2 মাস্ক কতটুকু কার্যকরী?
এটি করোনা ভাইরাস বা অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া থেকে সুরক্ষা পেতে কার্যকরী, এবং FF1 এর থেকে ভালো মানের। কারন এতে পরিস্রাবণ ৯৪% এবং ছিদ্র ৮%।
এটি মুলত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়, এবং এটি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধেও ব্যাবহার করা যায়।
FFP3 মাস্ক কতটুকু কার্যকরী?
বর্তমান বাজারে এটি সব থেকে ভাল মানের মাস্ক, কারন এটির পরিস্রাবণ সাধারণত ৯৯% এবং ছিদ্র প্রায় ২%, আর এটি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সবথেকে বেশি কার্যকরী, কারন এটি সূক্ষ্ম কণা থেকে সুরক্ষা দেয়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এবং অন্য সকল ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা এটি ব্যাবহারে পরামর্শ দিচ্ছেন।
মাস্ক বাবহারের ৭ টি গুরুত্বপূর্ণ নিয়মাবলী
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে মাস্ক সুরক্ষা প্রদান করলেও মাস্ক ব্যাবহারে কিছু নিয়ম রয়েছে যেগুলো অনুসরণ না করলে আপনাকে পরতে হতে পারে চরম বিপদে, চলুন জেনে নেয়া যাক মাস্ক বাবহারের নিয়মাবলী যা আপনাকে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া থেকে সুরক্ষা প্রদান করবেঃ
- যদি আপনি করোনা ভাইরাস আক্রান্ত বা সন্দেহজনক কোন বাক্তির যত্ন নেন তাহলে মাস্ক অবশ্যই পরতে হবে।
- হাঁচি বা কাশি থাকলে মাস্ক ব্যাবহার করুন।
- যদি আপনি ঘন ঘন শাবান বা অ্যালকোহল যুক্ত হ্যান্ডওয়াস দিয়ে হাত ধুয়ে নেন তাহলে শুধুমাত্র মাস্ক কাজে দেবে, কারন আপনার অপরিষ্কার হাত মুখে লাগলে মাস্ক ব্যাবহারে কোন লাভ হবে না।
- মাস্ক পরার সময় ভালো ভাবে নজর দিতে হবে যেনও মুখ-নাক এবং মাস্ক এর ভেতরে কোনও ফাঁকা নেই।
- মাস্ক বাবহারের সময় কোন ভাবে মুখে স্পর্শ করা যাবে না, করলেও আবার ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
- স্যাঁতসেঁতে হওয়ার সাথে সাথে মাস্কটিকে পরিবর্তন করে ফেলতে হবে।
- মাস্ক এর ভেতরের দিকে স্পর্শ করা যাবে না।